ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম (চরমোনাই পীর) হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, সংস্কার না করে পূর্বের নিয়মে নির্বাচন হতে পারে না।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে’ এক বিক্ষোভ-সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। বিক্ষোভের আয়োজন করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর শাখা।
রেজাউল করিম বলেন, যদি কোনো অশুভচক্র চাপ প্রয়োগ করে প্রধান উপদেষ্টাকে সংস্কারের আগে নির্বাচনে ঘোষণা দিতে বাধ্য করে তাহলে আমরা পরিষ্কার বলছি- আমরা ছাত্র-জনতা কিন্তু রাজপথে ছাড়ি নাই। যতদিন পর্যন্ত দেশের আইনশৃঙ্খলা সুন্দর না হবে, কাংঙ্ক্ষিত সংস্কার না হবে, বিচার দৃশ্যমান না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত বাংলার জমিনে পূর্বের নিয়মে নির্বাচন হতে পারে না; হতে দেওয়া হবে না। কেননা, দেশ যখন আগুনের মতো জ্বলছিল তখন ছাত্র-জনতা রাজপথে নেমে এসেছিল অন্যায়, খুন-খারাবি ও বৈষম্য থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য। তারা রক্ত দিয়ে দেশকে উদ্ধার করেছে।
চরমোনাই পীর বলেন, বিগত ৫৪ বছরে যে পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়েছে সেই নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কারই হলো সংস্কারের প্রধান লক্ষ্য। সেই সংস্কারটাই হলো বিশ্বের বহু দেশের মতো পিআর পদ্ধতির নির্বাচন। এর মাধ্যমে বহুদেশে শান্তি এসেছে। কালো টাকার দৌরাত্ম্য, মাস্তানি ও সন্ত্রাস বন্ধ করার একমাত্র উপায় হলো পিআর পিদ্ধতির নির্বাচন। বিভিন্ন জরিপেও উঠে আসছে, অধিকাংশ মানুষই পিআর চায়। পিআর আজকে দেশের সব ধারার মানুষের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, সংস্কার দৃশ্যমান হতে হবে। নির্বাচনের আগেই জুলাই সনদের আইনি স্বীকৃতি দিতে হবে। নির্বাচনের পরে জুলাই সনদের আইনি স্বীকৃতি কেউ দিয়ে দেবে সেটা আশার গুড়ে বালি। সবাইকে আহ্বান জানাবো, টেন্ডারবাজি, রাহাজানি, সন্ত্রাস থেকে এবং বিদেশি অধিপত্য থেকে মুক্তির জন্য একমাত্র পদ্ধতি হলো পিআর পদ্ধতি। এই দাবি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কর্মসূচি চালিয়ে যাবে। তিনি জোড় দিয়ে বলেন, আমরা রাজপথ ছাড়ছি না।
সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মাওলানা ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন- দলের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা ইউনূস আহমদ, মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, দলের যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান, সহকারী মহাসচিব আহমাদ আব্দুল কাইয়ুম, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইমতিয়াজ আলম, কেন্দ্রীয় প্রচার ও দাওয়াহবিষয়ক সহসম্পাদক কেএম শরীয়াতুল্লাহসহ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতারা।
দলের মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান বলেন, এই সরকারের আমলেই জুলাই সনদের আইনীভিত্তি নিশ্চিত করতে হবে। কারণ পরবর্তী কেউ তা বাস্তবায়ন করবেন সে আশা করা যায় না। প্রধান উপদেষ্টার আচরণ রহস্যজনক। তিনি নিজেই বলছেন, সংস্কার না হলে দেশ আগের ধারায় ফিরে যাবে অথচ তিনি নিজেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত না করেই নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি প্রশ্ন করে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা কার চাপে গণমানুষের প্রত্যাশাকে উপেক্ষা করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে দিলেন?
আতাউর রহমান বলেন, কুমিল্লায় বিএনপির এক নেতা একজন বোর্ড চেয়ারম্যানের কলিজা খুলে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। এই দৈত্য-দানবদের কারণে বিদ্যমান পদ্ধতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব না। তাই দেশকে রক্ষা করতে হলে এমনকি বিএনপি নেতাদের নিরাপত্তার জন্যও পিআর পদ্ধতিই একমাত্র সমাধান।
মন্তব্য করুন