জুলাই সনদের আলোকে জাতীয় নির্বাচন এবং উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ ৭ দফা দাবিতে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিগত আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর পল্টনের জাগপা ঢাকা মহানগর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলের সহসভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান। লড়াই ছাড়া মেহনতি জনতার মুক্তি নেই উল্লেখ করে ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন রাশেদ প্রধান।
দাবিগুলো হচ্ছে—১. জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এবং জুলাই সনদের আলোকে জাতীয় নির্বাচন। ২. শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ। ৩. সকল গণহত্যা ও আওয়ামী আমলে সংঘটিত জুলুম, নির্যাতন, দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমানকরণ। ৪. আওয়ামী আমলে ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত গোপন অসম সকল চুক্তি জনসম্মুখে প্রকাশ এবং বাতিলকরণ। ৫. জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধকরণ। ৬. উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন এবং ৭. লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ এবং ভারতের প্রভাবমুক্ত জাতীয় নির্বাচন আয়োজন।
দাবি পূরণে জাগপার পক্ষ থেকে ঘোষিত ৩ দিনের কর্মসূচি হলো—১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল, ১৯ সেপ্টেম্বর সকল বিভাগীয় শহরে গণসংযোগ এবং ২৬ সেপ্টেম্বর সব সাংঠনিক জেলায় বিক্ষোভ মিছিল।
রাশেদ প্রধান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণের চাওয়া ছিল বিচার, সংস্কার এবং নির্বাচন। কিন্তু আমরা দৃশ্যমান বিচার দেখতে পাচ্ছি না, প্রকৃত সংস্কার বাধাগ্রস্ত হতে দেখছি এবং যেনতেনভাবে একটি জাতীয় নির্বাচন বাস্তবায়নের প্রস্তুতি ও রোডম্যাপ দেখতে পাচ্ছি। গতানুগতিক জুলাই ঘোষণাপত্রের পর আইনগত ভিত্তি এবং বাস্তবায়নের পরিকল্পনাহীন এক জুলাই সনদের পরিকল্পনা দেখতে পাচ্ছি।
তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান শুধুমাত্র শেখ হাসিনা অথবা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ছিল না; বরং ভারতীয় আধিপত্যবাদ এবং আগ্রাসনের বিরুদ্ধেও ছিল। ভারতীয়-আওয়ামী ষড়যন্ত্র এখনো চারপাশ থেকে আমাদের ঘিরে রেখেছে। অথচ অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে দেশের প্রশাসনিক কাঠামোগুলোতে, ভারতীয়-আওয়ামী মুক্তকরণে কোনো জোরালো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। এমনকি দিল্লিতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় রাজকীয় আশ্রয়ে থাকা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারেও কোনো জোরালো ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জাগপা সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য আসাদুর রহমান খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মো. সফিকুল ইসলাম, ভিপি মু. মুজিবুর রহমান, হাজী মো. হাসমত উল্লাহ, প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক এস এম জিয়াউল আনোয়ার, ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক শ্যামল চন্দ্র সরকার, যুব জাগপা সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবলু, সাংঠনিক সম্পাদক ওলিউল আনোয়ার প্রমুখ।
মন্তব্য করুন