নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন সংবিধান স্বীকৃত গণতান্ত্রিক অধিকারের পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সচিবালয় অভিমুখে বিক্ষোভপূর্ব সমাবেশে এই মন্তব্য করেন তিনি।
জাতীয় সংসদে সাইবার নিরাপত্তা আইন পাসের কঠোর সমালোচনা করে সাইফুল হক বলেন, হয়রানি ও নিপীড়নমূলক নতুন এই আইন নাগরিকদের সংবিধান স্বীকৃত গণতান্ত্রিক অধিকারের পরিপন্থী। কোনো সভ্য দেশ পুলিশকে পরোয়ানা ছাড়া তল্লাশি ও গ্রেফতারের অনুমতি দিতে পারে না।
তিনি বলেন, বিরোধী দল ও মতকে দমন করার এই আইন দেশকে আরও নিপীড়নমূলক ও স্বৈরতন্ত্রী করে তুলবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, মানুষের পেটে আগুন, মার্কেট আর বাজারেও আগুন- সরকার কোনোভাবেই এর দায় এড়াতে পারে না। জীবনযাত্রার ব্যয় মিটাতে মানুষ দিশেহারা ও নাকাল। বাজারের আগুনে মানুষ আজ বড় অসহায়।এরমধ্যে জীবন টিকিয়ে রাখতে শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের রীতিমতো নাভিশ্বাস উঠেছে। গোটা বাজার ব্যবস্থায় রীতিমতো নৈরাজ্য চলছে।
তিনি বলেন, সরকারের সঙ্গে মুনাফাখোর সিন্ডিকেটের অশুভ আঁতাত ও যোগসাজশের কারণেই বাজার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণহীন; বাজারে চলছে চরম স্বেচ্ছাচারিতা। উৎপাদন, সরবরাহ ও মজুদে তেমন কোন ঘাটতি না থাকলেও প্রায় প্রতিটি খাদ্যপণ্যের দাম লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে।
সাইফুল হক ক্ষোভের সাথে উল্লেখ করেন, সরকারের মন্ত্রী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য অস্বীকার করায় এরা এখন আরও বেপরোয়া।
তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, যে সরকার মশা মারতে পারে না- সেই সরকার কীভাবে দেশ চালাবে। ডেংগুতে মৃত্যুকে তিনি এক ধরনের হত্যাকাণ্ড হিসেবে আখ্যায়িত করে ব্যর্থতার দায় নিয়ে অবিলম্বে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও ঢাকার দুই মেয়রের পদত্যাগ দাবি করেন।
তিনি বলেন, গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকতে গিয়ে সরকার আজ দেশ ও জনগণকেই বাজি ধরেছে। তিনি অবৈধ দখলদারিত্ব থেকে দেশ ও জনগণকে মুক্ত করতে আর একটি গণজাগরণ- গণঅভ্যুত্থানের ডাক দেন।
বিক্ষোভপূর্ব সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু, আনছার আলী দুলাল, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাশিদা বেগম, সাইফুল ইসলাম, স্নিগ্ধা সুলতানা ইভা, ঢাকা মহানগর সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, কবি জামাল সিকদার প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির বিক্ষোভ মিছিল প্রথমে পুরানা পল্টনে পুলিশের ব্যারিকেডের সম্মুখীন হয়। নেতাকর্মী এই ব্যারিকেড ভেঙ্গে জিরো পয়েন্ট দিয়ে সচিবালয়ের মুখে দ্বিতীয় ব্যারিকেডের মুখোমুখি হয়। এখানে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের ধস্তাধস্তি হয়। এতে পার্টির কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়।
পরে পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, দাবি আদায় না হলে অচিরে সচিবালয় ঘেরাওসহ আন্দোলনের বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এরপর তিনি বিক্ষোভ কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করেন।
মন্তব্য করুন