কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৮ পিএম
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:১৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বিএনপিকে আলোচনার আহ্বান জামায়াতের

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা কথা বলতে বিএনপিকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। এ ছাড়া তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নভেম্বরের মধ্যেই জুলাই সনদের আদেশের ওপর গণভোট চান।

রোববার (২ নভেম্বর) রাজধানীর মগবাজারে আল ফালাহ মিলনায়তনে জামায়াত আয়োজিত ‘চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, একটি মহল বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে দেশে উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। আমরা এ পরিস্থিতির অবসান চাই। আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হোক তা আমরা অবশ্যই চাই। কিন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নভেম্বরের মধ্যেই আমরা জুলাই সনদের আদেশের ওপর গণভোট চাই।

তিনি বলেন, দেশবাসী সবাই জানেন যে গণভোটের ব্যাপারে সবাই একমত। তবে একটি দল জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোট চায়; যা সম্পূর্ণ অবাস্তব। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নভেম্বরের মধ্যেই আমরা গণভোট চাই।

মো. তাহের বলেন, আমরা জাতীয় ঐক্যের পক্ষে। সবাই মিলে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে আলোচনার টেবিলে বসে সব সমস্যার একটি সুষ্ঠু রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করার জন্য তিনি বিএনপির নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। দেশের জনগণ সব সংকটের সমাধান চায়। তারা জাতীয় ঐক্য চায়। জাতীয় ঐক্যই বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ।

তিনি বলেন, কোনো কোনো মহল বলে যে গণভোটে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। তাদের জবাবে আমি বলতে চাই, জাতীয় সংকট থেকে উত্তরণের জন্য গণভোটে যে টাকা খরচ হবে, জাতীয় প্রয়োজনে এটা কিছুই নয়। ফ্যাসিবাদীরা দেশের যে টাকা বিদেশে পাচার করেছে, তা দিয়ে এক হাজারটি গণভোট করা সম্ভব।

বিএনপি জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি জানাচ্ছে উল্লেখ করে নায়েবে আমির বলেন, তাদের এ বক্তব্যের জবাবে আমি জানাতে চাই যে ১৯৯১ সালে যদি জামায়াত নিষিদ্ধ থাকত, তাহলে কি জামায়াতের সমর্থন নিয়ে বিএনপি সরকার গঠন করতে পারত? সেদিন যদি জামায়াত তাদের সমর্থন দিয়ে ক্ষমতায় না বসাত, তাহলে বিএনপি কী বর্তমান পর্যায় আসতে পারত? জবাব হলো, অবশ্যই না। বিএনপি এখন পতিত স্বৈরাচারীদের মতোই জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে একই ধরনের একই ভাষায় হাস্যকর বক্তব্য দিয়ে অকৃতজ্ঞতার প্রমাণ দিচ্ছে।

তিনি বলেন, তারা এখন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। দেশে বর্তমান যে সংকট চলছে তা বিএনপিই সৃষ্টি করেছে। জামায়াত কখনো ধোঁকা, প্রতারণা ও মুনাফিকির রাজনীতি করে না। বিএনপিই বরং ধোঁকা, প্রতারণা ও অকৃতজ্ঞতার পরিচয় দিচ্ছে।

ডা. তাহের বলেন, বিগত ৫৪ বছরে বার বার ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু জনগণের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। যারাই ক্ষমতায় গিয়েছে, তারাই ধোঁকা, প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে লুটপাট করেছে, দলীয়করণ, আত্মীয়করণ করেছে। জনগণ এ অবস্থার অবসান চায়। এ অবস্থার পরিবর্তন চায় জুলাই যোদ্ধারা।

অভিযোগ এনে তিনি বলেন, বিএনপি প্রথম থেকেই সংস্কারের ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করে আসছে। তারা নিজেদের সংস্কারের পিতা দাবি করছিল। কিন্তু বাস্তবে সব সময়ই সংস্কারের বিরোধিতা করছে। দুনিয়ার কোনো দেশেই নোট অব ডিসেন্টের ওপর গণভোট হয়নি।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি নেতারা জামায়াতের বিরুদ্ধে মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে সংকট সৃষ্টির মিথ্যা অভিযোগ করছে। কিন্তু বাস্তবে তারা নিজেরাই মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। জামায়াতে ইসলামী কখনো মিথ্যা বক্তব্য দেয় না।

জুলাই সনদ নিয়ে আবদুল্লাহ মো. তাহের বিএনপির মহাসচিব জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছে। এখন মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে গিয়ে নিজেরাই বিপদে পড়েছে। অথচ অভিযোগ করছে যে জামায়াত তাদের বিপদে ফেলেছে। বরঞ্চ তারা নিজেরাই মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে বিপদে পড়েছে।

বিএনপির এক নেতা বলেছেন, তারা সংস্কার চায় না, জুলাই সনদ এবং গণভোট চায় না। আমাদের বক্তব্য হল, জামায়াত কখন কোথায় বলেছে যে, তারা সংস্কার চায় না, জুলাই সনদ ও গণভোট চায় না। বিএনপির এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ থাকলে তা জাতির সামনে পেশ করা উচিত। মূলত তারাই এ ধরনের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে নিজেরাই বিপদে পড়েছে।

তিনি বলেন, ড. ইউনূস সরকার জনগণের সমর্থন নিয়েই ক্ষমতায় বসেছে। তার সততা, যোগ্যতা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও যোগ্যতা নিয়ে কারও কোন প্রশ্ন নেই। কিন্তু বিএনপি বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে।

এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকারকে অবশ্যই নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কোনো মহলের ফাঁদে পা না দেয়ার জন্য তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল, সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মো. শাহাবুদ্দিন, মোবারক হোসাইন ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

খুলনায় বিএনপি অফিসে গুলি-বোমা হামলা, নিহত ১

ভিউ বাড়াতে রাম দা হাতে ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট শিক্ষকের

বিএনপি যখনই ক্ষমতায় এসেছে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীল ছিল : আমির খসরু

নিকোটিন পাউচ উৎপাদনের অনুমোদনে বিটিসিএ’র উদ্বেগ

ক্লাসিকোর দুঃস্বপ্ন পেছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়াল বার্সা

সন্দ্বীপে ধানের শীষের প্রচারণায় উপচেপড়া লোকসমাগম

হলান্ডের জোড়া গোলে জয়ে ফিরল ম্যানসিটি

জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বিএনপি

আলী রীয়াজের পদত্যাগ দাবি নিউইয়র্ক বিএনপির

‘অর্থ নয়, আত্মতৃপ্তিই চিকিৎসার আসল প্রাপ্তি’

১০

প্রোটিয়াদের হারিয়ে বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তুলল ভারত

১১

নেত্রকোনা স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

১২

দুটি দল বাংলাদেশের রাজনীতিতে ষড়যন্ত্র করছে : জুয়েল

১৩

দাঙ্গা-ফ্যাসাদে না জড়াতে কর্মীদের কঠোর নির্দেশনা সেলিমুজ্জামানের 

১৪

ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামো অক্ষুণ্ণ রাখার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে ডাকসুর প্রতিবাদ

১৫

সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ 

১৬

রাজধানীতে বিশেষ অভিযান, গ্রেপ্তার ১৪

১৭

সোমবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম সংবাদ সম্মেলন

১৮

‘৯০ শতাংশ স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব’

১৯

নাগরিকদের সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে যে বার্তা দিলেন উপদেষ্টা আসিফ

২০
X