

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনকালে দেশটির আগের ‘শাসনপদ্ধতি পরিবর্তন (রেজিম চেঞ্জ) বা রাষ্ট্র গঠন’ নীতির সমাপ্তি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বাহরাইনে অনুষ্ঠিত ‘মানামা ডায়ালগ’ নিরাপত্তা সামিটের আগে তিনি এ মন্তব্য করেন। আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা গবেষণা সংস্থা এ সম্মেলন আয়োজন করে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তুলসীর এই মন্তব্য ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মধ্যপ্রাচ্য সফরকালের বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি।
যুক্তরাষ্ট্রের আগের লক্ষ্য ছিল মধ্যপ্রাচ্যে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র সম্প্রসারণ। তবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে তা পরিবর্তিত হয়ে ‘অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা’কে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
এর মধ্যে রয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা এবং ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের ১২ দিনের যুদ্ধ সমাপ্তি।
তুলসী গ্যাবার্ড বলেন, ‘দশক ধরে আমাদের বৈদেশিক নীতি— রেজিম চেইঞ্জ বা রাষ্ট্র গঠনের— একধরনের ব্যর্থ চক্রে আটকে ছিল। এটি ছিল একমাত্রিক ও একরূপ নীতি।’
মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক বলেন, শাসক পরিবর্তনের মাধ্যমে আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা অন্য দেশে চাপানো এবং নানা সংঘাতে অজাচিত হস্তক্ষেপের কারণে মিত্রের চেয়ে অধিক শত্রু তৈরি হয়েছে।
হাওয়াইয়ের সাবেক কংগ্রেস সদস্য এবং ইউএস আর্মি ন্যাশনাল গার্ডের সাবেক এই সদস্য বলেন, এমন নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয়, অগণিত প্রাণহানি এবং অনেক ক্ষেত্রে বৃহত্তর নিরাপত্তা হুমকি তৈরি হয়েছে।
তুলসীর এই মূল্যায়ন ট্রাম্পের নিজস্ব ভাবনার সঙ্গে মিলে যায়, যা ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধে প্রতিফলিত হয়েছিল।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের চুক্তি হয়েছিল, যা বাইডেন প্রশাসনের সময়ে ২০২১ সালে বিশৃঙ্খলভাবে শেষ হয়। এ ছাড়া তিনি সিরিয়ার সাময়িক প্রেসিডেন্ট আহমাদ আল-শারাকে গ্রহণ করেছেন। আল-শারা আল-কায়দার সাবেক সদস্য এবং ইরাকে আমেরিকান কারাগারে ছিলেন।
তবে গ্যাবার্ড ট্রাম্পের দক্ষিণ আমেরিকায় যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন, মাদক বহনের অভিযোগ তুলে জাহাজে হামলা এবং ভেনেজুয়েলায় গোপন অভিযান চালানোর বিষয়ে মন্তব্য করেননি।
মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্পের নীতি এখনো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি জানিয়ে গ্যাবার্ড বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি এখনো ‘ভঙ্গুর’। এদিকে ইরান সম্প্রতি পারমাণবিক স্থাপনায় নতুন কার্যক্রম শুরু করেছে।
তুলসী গ্যাবার্ড বলেন, সামনের পথ সহজ বা সরল হবে না। তবে ট্রাম্প এই পথে চলতে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সূত্র : ইউএনবি
মন্তব্য করুন