রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম বলেছেন, বাংলাদেশে নিয়মিতভাবে সরকারগুলো কোনোমতে একবার ক্ষমতায় গেলে আর ক্ষমতা ছাড়তে চায় না। তারা বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ, পুলিশ, প্রশাসনসহ সকল রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে এমনকি মানুষের রক্তের ওপর দিয়ে হলেও ক্ষমতায় থাকতে চায়। কারণ, ক্ষমতায় থাকলে এখানে বিপুল লুটপাট আর লুটপাটকৃত অর্থ পাচারের অবারিত সুযোগ পাওয়া যায়। জবাবদিহিহীন এ ব্যবস্থায় পাচারের জন্যই তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করে, গণতন্ত্রকে হত্যা করে ক্ষমতায় থাকতে চায়।
আজ শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের উদ্যোগে এক মিছিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে সংবিধান সংস্কার সভার নির্বাচন, পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত পাঠানোয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা নেওয়ার আহবানে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
হাসনাত কাইয়ূম বলেন, বিদেশি বন্ধু যারা এ দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার রক্ষা করতে চান, সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চান, তাদের উচিত- আমাদের জনগণের যে সম্পদ লুট করে তাদের দেশে পাচার করা হয়েছে, সে পাচারকৃত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে বাংলাদেশের জনগণের কাছে ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা। সেটাই হবে এ দেশের জনগণের জন্য প্রকৃত সহায়তা, এ দেশের সকল প্রধান প্রধান সংকটের স্থায়ী সমাধান।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমন বলেন, বাংলাদেশে ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া ও মানবাধিকার হরণ করা হয় মূলত রাষ্ট্র ক্ষমতা ব্যবহার করে জনগণের অর্থ-সম্পদ লুটপাট ও পাচারের ব্যবস্থার অভিপ্রায়ে। আজ পুরো গণতান্ত্রিক বিশ্ব বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকারের ব্যাপারে সরব হয়েছে। আমরা স্পষ্ট করতে চাই, বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে ভোটাধিকার নিশ্চিত ও সম্পদ পাচারের ব্যবস্থা বন্ধ করতে হবে। পাচার হয়ে যাওয়া সম্পদ দেশে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা নিতে হবে। গণতন্ত্র, ভোটাধিকারের সাথে একই মাত্রায় লুটপাট ও পাচার ভয়াবহ মাত্রায় মানুষের ওপর চেপে বসেছে।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের ঢাকা জেলার সমন্বয়ক শাহাবুদ্দিন কবিরাজ লিটনের সভাপতিত্বে এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য প্রীতম দাশের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থনৈতিক সমন্বয়ক দিদারুল ভুঁইয়া, দলের জাতীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য খন্দকার হাবিবুর রহমান রাজা, সামসুল হক কাজল, রাষ্ট্র সংস্কার যুব আন্দোলনের সমন্বয়ক মাশকুর রাতুল, রাষ্ট্র সংস্কার শ্রমিক আন্দোলনের সহসমন্বয়ক মিন্টু মিয়া, বাজিতপুর উপজেলা সংগঠক হরিপদ নান্টু, ইসহাক আহমেদ প্রমুখ। সমাবেশ শেষে একটা মিছিল শাহবাগ থেকে সাইন্সল্যাব হয়ে নীলক্ষেত মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
মন্তব্য করুন