আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকতে আবারও সাজানো নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সংহতি সমাবেশে এ অভিযোগ করেন তিনি।
ফিলিস্তিনির প্রতি সংহতি জানিয়ে যৌথভাবে এই সমাবেশ করে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ।
ভিপি নুর বলেন, সরকার সাজানো নির্বাচন করার কথা ভাবছে। নির্বাচন করে ফেললে তারা আবারও পাঁচ বছরের জন্য জনগণের ওপর চেপে বসবে। কাজেই নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে অক্টোবরেই গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে এদের বিদায় করতে হবে।
তিনি বলেন, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি ইস্যুতে বিবৃতি দিয়ে সরকার দ্বিচারিতা করেছে। সরকার দুই পক্ষকে যুদ্ধ বিরতির কথা বলেছে। এখানে তো দুই পক্ষ যুদ্ধ করছে না। যুদ্ধ বন্ধ করলে ইসরায়েলকে বলতে হবে। কারণ তারা যুদ্ধজাহাজ, বিমান, রণতরী, অস্ত্র-সুসজ্জিত বাহিনী নিয়ে ফিলিস্তিনের নিরীহ জনগণের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। নারী, শিশু এমনকি নামাজ পড়তে গিয়েও ফিলিস্তিনিরা দখলদার ইসরায়েলিদের হামলার শিকার হচ্ছে। যখন তারা আত্মরক্ষার্থে প্রতিরোধ করছে, তখন আন্তর্জাতিক কিছু গণমাধ্যম সেটাকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে প্রচার করছে। বিশ্ব সম্প্রদায়কে এই একপাক্ষিক চশমা পরিহার করে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়াতে হবে। স্বাধীন ফিলিস্তিনই মধ্যপ্রাচ্যে সংকটের সমাধান।
নুরুল হক নুর বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন- আমেরিকার মুরব্বিদের সঙ্গে বুঝাপড়া হয়ে গেছে, পিটার হাস কিছু করতে পারবে না। এর আগে বলেছেন- দিল্লি তাদের সঙ্গে আছে। অর্থাৎ তারা অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে তলে তলে ইসরায়েল ও ভারতের সঙ্গে সমঝোতা করেছে। সরকার ইসরায়েলের সঙ্গে সমঝোতা করেছে- তাদের ক্ষমতায় আসতে সহযোগিতা করলে তারা ইসরায়েলকে বাংলাদেশে কনস্যুলেট বা দূতাবাস খোলার ব্যবস্থা করে দিবে। তারই অংশ হিসেবে পাসপোর্ট থেকে একসেপ্ট ইসরায়েল তুলে দিয়েছে। তাই এই সরকারকে হঠাতে না পারলে বাংলাদেশও আরেকটা ফিলিস্তিন হবে।
তিনি বলেন, সামনে শারদীয় দুর্গাপূজা। কিছুদিন আগে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা বলেছেন- সরকার চাইলে পূজায় হামলা হবে, না চাইলে হবে না। কারণ, বিগত বছরের সাম্প্রদায়িক হামলার কোনো ঘটনারই বিচার সরকার করেনি। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান- এই সরকারের কাছে কেউই নিরাপদ নয়।
গণঅধিকার পরিষদের এই অংশের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই। জনবিচ্ছিন্ন হওয়ায় তলে তলে আপস করে ভারত ও ইসরায়েলের সহযোগিতায় এই সরকার আবারও ক্ষমতায় আসতে চায়। কিন্তু ২০১৪ ও ‘১৮ সালের মতো ভুয়া নির্বাচন করে বিদেশিদের তাবেদারি করে আর ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হবে না।
গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানার সঞ্চালনায় সংহতি সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, আব্দুজ জাহের, অ্যাডভোকেট সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদিব, যুব অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মুনতাজুল ইসলাম প্রমুখ।
সংহতি সমাবেশ শেষে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি পুরানা পল্টন মোড় হয়ে পানির ট্যাংকি, নাইটিংগেল মোড় ঘুরে পানির ট্যাংকি মোড়ে এসে শেষ হয়।
মন্তব্য করুন