সারা দেশে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালের আগের রাত থেকে ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ১০৮৪ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ বিভাগে গ্রেপ্তার ১৬৫ : ময়মনসিংহ বিভাগে পুলিশের অভিযানে বিএনপি ও জামায়াতের ১৫২ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন থানা থেকে ২০ জন, নেত্রকোনা থেকে ২৬ জন, জামালপুর থেকে ৬৮ জন এবং শেরপুরে ৫১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিরাজগঞ্জে গ্রেপ্তার ১৪৭ : সিরাজগঞ্জের ১১টি থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিএনপি-জামায়াতের ১৪৭ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদধারী বেশ কয়েকজন নেতাও রয়েছেন। সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সামিউল আলম জানান, গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাজে বাধাদান ও নাশকতার অভিযোগে এক বা একাধিক মামলা রয়েছে।
রাজশাহীতে আটক ১২৭ : হরতালে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ১২৭ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। পরে রাজশাহী মহানগর এলাকার ৭০ ও রাজশাহী জেলার ৫৭ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, ‘অধিকাংশ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে রোববার ভোরে। রাজশাহী থেকে অসংখ্য নেতাকর্মী ঢাকার মহাসমাবেশে গিয়েছিলেন। তার ঢাকা বাসযোগে ভোরে রাজশাহীতে নেমেছে। আর তখন অধিকাংশ নেতাকর্মীকে পুলিশ অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করেছে।’ মহানগর পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার জানান, নাশকতার অভিযোগে মহানগর এলাকা থেকে অন্তত ৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নওগাঁয় আটক ১১৪ : বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের ১১৪ নেতাকর্মীকে আটকের দাবি করেছে দলটি। নওগাঁ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব বায়েজিদ হোসেন বলেন, হরতাল বানচাল করতে এবং বিএনপির কর্মীদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করার জন্য পুলিশ ধরপাকড় শুরু করেছে।
নোয়াখালীতে আটক ৮৪ : নোয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৮৪ জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
জয়পুরহাটে গ্রেপ্তার ৪৬ : জয়পুরহাট জেলার পাঁচ উপজেলা থেকে বিএনপি-জামায়াতের ৪৬ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
টাঙ্গাইলে গ্রেপ্তার ৪৩ : টাঙ্গাইলে বিএনপির ৪৩ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জেলার পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত বিএনপির ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়াও রোববার সদর উপজেলায় বিএনপির তিন ও মির্জাপুরে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পিরোজপুরে আটক ৪১ : পিরোজপুরে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর ৪১ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে গ্রেপ্তার ৩৮ : চাঁপাইনবাবগঞ্জে রাতভর নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। নাশকতার অভিযোগে ও বিস্ফোরক আইনে বিভিন্ন থানায় করা পুরোনো মামলাগুলোতে অন্তত ৩৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
চুয়াডাঙ্গায় আটক ৩৮ : চুয়াডাঙ্গায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, নাশকতার পরিকল্পনা ও বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জানমালের ক্ষতি করতে পারেন—এমন ৩৮ জনকে বিভিন্ন স্থান থেকে পুলিশ আটক করেছে।
নাটোরে গ্রেপ্তার ৩৭ : নাটোরে নাশকতার চেষ্টাসহ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার অভিযোগে বিএনপি ও জামায়াতের ৩৭ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ফরিদপুরে আটক ৩৭ : ফরিদপুরের ভাঙ্গায় দুটি বাসে তল্লাশি করে বিএনপি-জামায়াতের ৩৭ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। আটকরা ঢাকার মহাসমাবেশ থেকে ভাঙ্গা হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন।
ঝিনাইদহে আটক ২৬ : ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলা থেকে বিএনপি ও জামায়াতের ২৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বরগুনায় আটক ১৮ : জেলা বিএনপি দাবি করেছে, ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ থেকে ফেরার পথে তাদের ১০ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। এ ছাড়া আরও আটজনকে আটক করা হয়েছে। তবে জেলার পুলিশ সুপার আবদুস ছালাম বলেছেন, বিএনপির কোনো নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
রংপুরে আটক ১৭ : রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, সদস্যসচিব মাহফুজ উন নবী ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফজলে রাব্বীসহ ১৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
সাতক্ষীরায় আটক ১৭ : সাতক্ষীরার শ্যামনগরে হরতাল সফল করার জন্য নাশকতা সৃষ্টি ও সরকার উৎখাতের জন্য গোপন বৈঠকের অভিযোগে বিএনপি-জামায়াতের ১৭ আটক করেছে পুলিশ।
ভৈরবে আটক ১৬ : শনিবার রাতে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের রেলওয়ে স্টেশন থেকে বিএনপির ১৬ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
ঝালকাঠিতে আটক ১৫ : ঝালকাঠিতে বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালকে কেন্দ্র করে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে বিভিন্ন স্থান থেকে ১৫ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
চাঁদপুরে আটক ১৩ : হরতালের সমর্থনে পিকেটিং করার সময় চাঁদপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে ১৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
রাঙামাটিতে আটক ৯ : ঢাকায় সমাবেশ শেষ করে ফেরার পথে রাঙামাটিতে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের ৯ কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
সিলেটে আটক ৮ : সিলেটে হারতালে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় আটজনকে আটক করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জে আটক ৭ : নারায়ণগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের হরতালের সমর্থনে মিছিল থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনসহ সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সুনামগঞ্জে আটক ৬ : হরতালে পিকেটিংকালে বিএনপির ছয় নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। বিএনপির নেতাকর্মীরা সকাল থেকে শহরের পুরোনো বাসস্ট্যান্ডের আশপাশে পিকেটিং শুরু করেন। সকাল সাতটার দিকে স্টেশন রোডে একটি পিকআপ ভাঙচুর করা হয়।
বগুড়ায় গ্রেপ্তার ৬ : বগুড়ার নন্দীগ্রামে বঙ্গবন্ধু চত্বর এলাকায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় বিএনপির ২০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। শনিবার রাতে উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আরাফাত রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন। পরে অভিযান চালিয়ে নন্দীগ্রাম পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গাইবান্ধায় আটক ৫ : গাইবান্ধায় হরতাল সমর্থনে পিকেটিং করার অভিযোগে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুন নবীসহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।
মুন্সীগঞ্জে আটক ২ : নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান ফকির ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আমিনুল ইসলাম জসিমকে আটক করেছে পুলিশ। রোববার দুপুর ১২টার দিকে মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর এলাকায় জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়কের সুতা তৈরি কারখানা থেকে আটক করা হয়।
কুমিল্লায় আটক ২ : গতকাল সকাল ৯টার দিকে হরতালের সমর্থনে বিএনপির নেতাকর্মীদের একটি মিছিল কুমিল্লা নগরীর চকবাজার ডাচ বাংলা ব্যাংকের কাছে পৌঁছালে পথরোধ করে পুলিশ। লাঠিচার্জ করে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। পালানোর সময় ২ বিএনপি কর্মীকে আটক করা হয়।
মন্তব্য করুন