খেলাফত মজলিসের নেতারা বলেছেন, বর্তমান শিক্ষাক্রমে মূল শিক্ষাকে গণশিক্ষার স্তরে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞান ও ধর্মীয় শিক্ষাকে সংকুচিত করা হয়েছে। এই শিক্ষানীতি থেকে ভালো কিছু আশা করা যায় না। বিদেশিরা এই সরকারের ঘাড়ে পা দিয়ে আমাদের শিক্ষানীতি দখল করেছে। আলিয়া মাদ্রাসা শিক্ষার স্বকীয়তা নষ্ট করা হয়েছে।
বক্তারা বলনে, অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। সামর্থ্যবানদের অনেকে আজ ইংরেজি মাধ্যমে তাদের সন্তানদের পাঠিয়ে দিচ্ছে। পরীক্ষা না থাকাতে শিক্ষার্থীরা বাসায় পড়াশোনা করে না। মা-বাবার কথা শুনে না। ট্রান্সজেন্ডার ও অবাধ মেলামেশার সংস্কৃতি আমদানি করে মূল্যবোধের ধস নামানো হচ্ছে। আধুনিকতার নামে নৈতিকতা বিসর্জন দেওয়ার এ শিক্ষ্যাব্যবস্থা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে ‘বর্তমান শিক্ষানীতি, নতুন শিক্ষাক্রম ও জাতির ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এই সেমিনার হয়।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আবদুল বাছিত আজাদ।
সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আজিজুল হকের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ ও প্রকাশনা সম্পাদক অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম। ঢাকা উত্তরের সভাপতি সাইফ উদ্দিন আহমদ খন্দকারের পরিচালনায় সেমিনারে অংশ নেন ঢাকা সিটি কলেজের অধ্যাপক খালেকুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ কে এম বদরুদ্দোজা, খেলাফত মজলিসের আহমদ আলী কাসেমী, জিয়াউল হক শামীম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের জালালুদ্দিন আহমদ, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের এরশাদুল বারি, মোস্তফা তারিকুল হাসান, খেলাফত মজলিসের মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, মুহাম্মদ আবদুল জলিল, মালিবাগ জামিয়ার মুহাদ্দিস আবদুস সালাম, জাফর আহমদ, ইসলামী ছাত্র মজলিসের বিলাল আহমদ চৌধুরী, আবদুল হক আমিনী, নুরুল হক, আবুল হোসেন, আজিজুল হক, আমির আলী হাওলাদার প্রমুখ।
মাওলানা আবদুল বাছিত আজাদ বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এই দেশে অনেকগুলো শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হয়েছে। কিন্তু এসব শিক্ষাক্রমে ইসলামী বিশেষজ্ঞ শিক্ষাবিদ ছিলেন না। বর্তমান শিক্ষাক্রম রচনায় ইসলামী শিক্ষাবিদসহ কোনো অংশীজনের সাথে মতবিনিময় করা হয়নি। পর্যালোচনা না করে বই ছাপিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে ভুল পাঠ্যক্রম তুলে দেওয়া হয়েছে। একদিকে যেমন দেশের আর্থিক ক্ষতি সাধন করা হয়েছে অন্যদিকে জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পঙ্গু করা হচ্ছে। তাই এই শিক্ষাক্রম বাতিল করতে হবে। নতুনভাবে শিক্ষাক্রম প্রণয়নে বিশেষজ্ঞ শিক্ষাবিদ ও আলেমদেরকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, বর্তমান সরকারের আদর্শ যা, শিক্ষা ব্যবস্থায় তাই প্রতিফলিত হয়েছে। যে সরকার অনৈতিকভাবে ক্ষমতায় আরোহণ করেছে তারা কীভাবে নৈতিক মূল্যবোধ সম্পন্ন শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করতে পারে! তাই দলমত নির্বিশেষে সকলকে মাঠে নামতে হবে। এই শিক্ষাক্রম বাতিলে শিক্ষাবিদ, ছাত্রসমাজ ও অভিভাবকদের জাগতে হবে। এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় মূল্যবোধ ইসলামের আলোকে বিজ্ঞানমুখী শিক্ষাব্যবস্থা গড়ার আন্দোলন বেগবান করতে হবে।
মন্তব্য করুন