আগামী দুই সপ্তাহ জোরালো আন্দোলন করতে পারলেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটবে বলে মনে করে নুর-রাশেদের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদ। শুক্রবার (১৪ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে দলটির বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব এক সমাবেশে এমন অভিমত ব্যক্ত করেন নেতারা।
সমাবেশে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘আপনারা দলছুট ষড়যন্ত্রকারীদের কথায় বিভ্রান্ত হবেন না। এই সরকার ও তার গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা দল ভাঙার জন্য কিছু এজেন্ট নিয়োগ করেছে। সরকার ষড়যন্ত্র করে কুকি চীনের সঙ্গে আমাকে জড়াচ্ছে। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, এই কুকি চীনের পেছনে সরকারের হাত রয়েছে। সরকার তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে।’
বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নির্বাচিত নেতাদের নেতৃত্বে গণঅধিকার পরিষদ বিশাল সমাবেশ করেছে। গণঅধিকার পরিষদের আর কোনো অংশ নেই। এটা গণঅধিকার পরিষদ। তাই আপনারা গণঅধিকার পরিষদ ভেবে অন্য কারও সঙ্গে আলোচনা করবেন না। এটা করলে আমাদের পক্ষে আপনাদের সঙ্গে থাকা কঠিন হয়ে যাবে।’ এ সময় যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী ১৯ জুলাই বিকেল ৪টায় গণপদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেন নুর।
দলটির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, ‘সরকার পতনের এক দফা দাবিতে গণঅধিকার পরিষদ রাজপথে আছে। আজকের সমাবেশে হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতি প্রমাণ করে, অমুক-তমুকের অংশ বলে কিছু নেই। সারা দেশের কাউন্সিলরদের ভোটে নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বেই গণঅধিকার পরিষদ পরিচালিত হবে। বিএনপির বন্ধুদের বলব আমরা আপনাদের সঙ্গে যুগপৎভাবে এক দফার আন্দোলনে আছি। দলছুট কতিপয় ব্যক্তিকে স্বীকৃতি দিয়ে সারা দেশে হাজারো নেতাকর্মীর হৃদয়ে আঘাত করবেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে নতুন দলের নিবন্ধন দিবে বলে শোনা যাচ্ছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের প্রতি সবিনয় অনুরোধ করছি—গণঅধিকার পরিষদের হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতি দেখুন। নিবন্ধন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র হলে আমরা রাজপথে শক্ত আন্দোলন গড়ে তুলব।’
রাশেদ খান বলেন, গণঅধিকার পরিষদের কথা স্পষ্ট—আমরা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না। আগামী দুই সপ্তাহ জোরালো আন্দোলন করতে পারলেই সরকারের পতন ঘটবে। সরকারের পতনের পর গণঅধিকার পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।
গণঅধিকার পরিষদের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেনের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন দলটির উচ্চতর পরিষদের সদস্য শাকিলউজ্জামান, আব্দুজ জাহের, অ্যাডভোকেট নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, ফাতেমা তাসনিম, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ, সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সুহেল রানা সম্পদ প্রমুখ।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে গণঅধিকার পরিষদ। এরপর মিছিলটি ফকিরাপুল, নাইটিংগেল মোড়, বিজয়নগর মোড় হয়ে পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
মন্তব্য করুন