পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর ও সাবেক সেনা প্রধান আজিজ আহমেদকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার এবং তাদের লুটকরা অর্থ উদ্ধার করে ঘুর্ণিদুর্গতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)।
শুক্রবার (৩১ মে) বিকেলে রাজধানীর পল্টন-বিজয়নগরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ থেকে এই দাবি জানান দলটির নেতারা।
তারা বলেন, আওয়ামী লীগ মুখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার কথা বললেও বাস্তবে তারা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিরোধী প্রধান শক্তি। কথায় কথায় গণতন্ত্রের বুলি আওড়িয়ে তারা দেশে একব্যক্তির শাসন ও লুটপাটতন্ত্র কায়েম করেছে। বিক্ষোভ মিছিল শুরুর আগে বিজয়নগরস্থ বিজয়-৭১ চত্ত্বরে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন এবি পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী।
দলের দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানার সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম, সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, যুগ্ম সদস্যসচিব আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, সিনিয়র সহকারী সদস্যসচিব আব্দুল বাসেত মারজান, মহানগর উত্তরের আহবায়ক আলতাফ হোসাইন, সহকারী সদস্যসচিব এম আমজাদ খান, যুবপার্টির আহ্বায়ক শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, সহকারী সদস্যসচিব শাহ আব্দুর রহমান, আনোয়ার হোসেন ফারুক, ছাত্রপক্ষের আহবায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব সেলিম খান প্রমূখ। সভাপতির বক্তব্যে সোলায়মান চৌধুরী বলেন, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ পদে থেকে অপরাধ করেছেন তাকে সেনা আইন ও ফৌজদারী দুই আইনেই বিচারের আওতায় আনতে হবে। তিনি বেনজীর আহমেদের শুদ্ধাচার সনদ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, অশুদ্ধ ও রং হেডেড সরকার প্রধানের পক্ষেই এরকম চরম দুর্নীতিগ্রস্ত লোককে শুদ্ধাচার পুরস্কার দেয়া সম্ভব। তিনি প্রতিবছর ৩১ শে জুলাইয়ের মধ্যে মন্ত্রী, এমপি, সকল বাহিনী প্রধান, আমলা, শীর্ষ ব্যবসায়ী ও শিল্পপতির সম্পদের তালিকা শ্বেতপত্র আকারে প্রকাশের বাধ্যবাধকতা জাতীয় রাজস্ববোর্ডের এখতিয়ারে রাখার দাবি জানান।
তাজুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ সেক্রেটারি ওবায়দুল কাদের একসময় বলেছিলেন বেনজীর-আজিজ কোনো দুর্নীতি করেনি এগুলো সব মিথ্যা গুজব। আর এখন তিনি বলছেন দুর্নীতির দায়ে বেনজীর-আজিজের বিচার করা হবে। ওবায়দুল কাদের যখন একথা বলছেন তাহলে বুঝতে হবে এর আড়ালে অনেক বড় ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, একটু শক্তিশালী ঝড় ও জোয়ার আসলেই বাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে যাওয়া থেকে প্রমাণ হয় সরকার গরীব উপকূলীয় জনগণের জানমালের বিষয়ে কোনো দায় বোধ করেনা। তিনি লুটেরা সরকারের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার কয়েক হাজার বেনজীর ও আজিজ তৈরি করেছে। এদেরকে অবৈধ সম্পদ অর্জনের সুযোগ দিয়ে তার বিনিময়ে এদের কাছ থেকে অসাংবিধানিক ও অবৈধ সার্ভিস নিয়েছে সরকার। ফলে দেশের সর্বক্ষেত্রে আজ হাহাকার।
তিনি ৮ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্তি ও অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার মুক্তিযোদ্ধা ভাতা লোপাটের অভিযোগ তুলে ধরে বলেন; আওয়ামী লীগ মুখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার কথা বললেও বাস্তবে তারা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিরোধী প্রধান শক্তি।
তিনি অবিলম্বে সাবেক আইজি বেনজীর ও সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদকে গ্রেপ্তার এবং তাদের লুটকরা অর্থ উদ্ধার করে ঘুর্ণিদুর্গতদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি জানান।
সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে তা সেগুনবাগিচা, কাকরাইল, নয়াপল্টন, বিজয়নগর ও পল্টনসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
মন্তব্য করুন