কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:৪৯ পিএম
আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৩ এএম
অনলাইন সংস্করণ

ঝড়-তুফান থেকে হেফাজতের দোয়া

ঝড় তুফানের সময়ের দোয়া। ছবিঃ সংগৃহীত
ঝড় তুফানের সময়ের দোয়া। ছবিঃ সংগৃহীত

মহান আল্লাহতায়ালা নানাবিধ আপদ-বিপদ ও বালা-মুসিবত দিয়ে বান্দাকে পরীক্ষা করেন। আর সব রকম বিপদ-আপদ থেকে পরিত্রাণ পেতে বিভিন্ন দোয়া ও জিকির-আজকার কোরআন-হাদিসে এসেছে। ঝড়-তুফান, মেঘের গর্জন, অধিক বৃষ্টির অনিষ্ট এবং বজ্রপাত থেকে হিফাজত থাকারও রয়েছে দোয়া।

ঝড় তুফানের সময়ের দোয়া

ঝড়-তুফানের সময় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই দোয়াগুলো বেশি বেশি পাঠ করতেন— اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا وَلاَ عَلَيْنَا উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়ালা আলাইনা’ অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমাদের থেকে ফিরিয়ে নাও, আমাদের ওপর দিও না।’ (বুখারি)

এ ছাড়াও নবীজি এই দোয়াটিও পাঠ করতেন—

اللهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا، وَخَيْرَ مَا فِيهَا، وَخَيْرَ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا، وَشَرِّ مَا فِيهَا، وَشَرِّ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আস্আলুকা খায়রাহা ওয়া খায়রা মা ফিহা-ওয়া খায়রা মা উরসিলাতবিহি; ওয়া আউজুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা ফিহা ওয়া শাররি মা উরসিলাতবিহি।’ অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট এর মঙ্গল, এর মধ্যকার মঙ্গল ও যা নিয়ে তা প্রেরিত হয়েছে, তার মঙ্গল প্রার্থনা করছি এবং আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি এর অমঙ্গল হতে, এর মধ্যকার অমঙ্গল হতে এবং যা নিয়ে তা প্রেরিত হয়েছে, তার অমঙ্গল হতে।’

মেঘের গর্জনের সময় এই দোয়া

হজরত আব্দুল্লাহ ইবন যুবাইর (রা.) যখন মেঘের গর্জন শুনতেন তখন কথা বলা বন্ধ করে দিতেন এবং কোরআনুল কারিমের এ আয়াত তিলাওয়াত করতেন— سُبْحَانَ الَّذِي يُسَبِّحُ الرَّعْدُ بِحَمْدِهِ، والـمَلائِكَةُ مِنْ خِيْفَتِهِ উচ্চারণ : ‘সুবহানাল্লাজি ইউসাব্বিহুর রা`দু বিহামদিহি ওয়াল মালাইকাতু মিন খিফাতিহি’ অর্থ : ‘পাক-পবিত্র সেই মহান সত্তা—তার প্রশংসা পাঠ করে বজ্র এবং সব ফেরেশতা, সভয়ে।’ (মুয়াত্তা)

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেছেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মেঘের গর্জন শুনলে বা বিদ্যুতের চমক দেখলে সঙ্গে সঙ্গেই এই দোয়া করতেন—

اللَّهُمَّ لا تَقْتُلْنَا بِغَضَبِكَ ، وَلا تُهْلِكْنَا بِعَذَابِكَ ، وَعَافِنَا قَبْلَ ذَلِكَ

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা লা- তাক্বতুলনা- বিগজাবিকা ওয়া লা-তুলহিকনা- বিআ’জা-বিকা, ওয়া আ’-ফিনা- ক্বাব্লা জা-লিকা।’

অর্থ : ‘হে আমাদের প্রভু! তোমার ক্রোধের বশবর্তী হয়ে আমাদের মেরে ফেল না আর তোমার আজাব দিয়ে আমাদের ধ্বংস করো না। বরং এর আগেই আমাদের ক্ষমা ও নিরাপত্তার চাদরে আবৃত করে নিও।’ (তিরমিজি)

বৃষ্টির দোয়া

বৃষ্টি আল্লাহর রহমতের নিদর্শন। কিন্তু কখনো আবার বৃষ্টি আজাবেও রূপ নিতে পারে। বৃষ্টির কারণে ও প্রাকৃতিক বৈরিতার কারণে অনেকে কষ্টে পড়তে পারেন। নানা ধরনের অসুবিধাও তৈরি হতে পারে।

হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, যখন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হতো এবং ঝোড়ো বাতাস বইত—তখন রাসুল (সা.)-এর চেহারায় চিন্তার রেখা ফুটে উঠত। এই অবস্থা দেখে তিনি এদিক-সেদিক পায়চারী করতেন এবং এই দোয়া পাঠ করতেন—

اللهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا، وَخَيْرَ مَا فِيهَا، وَخَيْرَ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا، وَشَرِّ مَا فِيهَا، وَشَرِّ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা-ফিহা ওয়া খাইরা মা-উরসিলাত বিহি, ওয়া আউজুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা-ফিহা ওয়া শাররি মা-উরসিলাত বিহি।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে এ বৃষ্টির কল্যাণ কামনা করছি, এ বৃষ্টিতে যেসব কল্যাণ রয়েছে সেগুলো কামনা করছি এবং এই বৃষ্টির মাধ্যমে প্রেরিত কল্যাণ প্রার্থনা করছি। আর এ বৃষ্টি ও বৃষ্টির মাধ্যমে প্রেরিত সব রকম অকল্যাণ ও বিপদাপদ থেকে পরিত্রাণ চাই।’

এরপর যখন বৃষ্টি হতো—তখন মহানবী (সা.) শান্ত হতেন। আয়েশা (রা.) আরও বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছি, লোকজন মেঘ দেখলে বৃষ্টির আশায় আনন্দিত হয়ে থাকে, আর আপনি তা দেখে চিন্তিত হয়ে পড়েন?’ এর জবাবে রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমি এ ভেবে শঙ্কিত হই—বৃষ্টি আমার উম্মতের ওপর আজাব হিসেবে পতিত হয় কি না। কেননা আগের উম্মতদের ওপর এ পদ্ধতিতে (বৃষ্টি বর্ষণের আকারে) আজাব পতিত হয়েছিল। ’ (বুখারি, হাদিস : ৩২০৬; মুসলিম, হাদিস : ৮৯৯; তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৪৯)

বজ্রপাত থেকে রক্ষার দোয়া

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন বজ্রের আওয়াজ শুনতেন তখন এ দোয়া করতেন— اللَّهُمَّ لاَ تَقْتُلْنَا بِغَضَبِكَ وَلاَ تُهْلِكْنَا بِعَذَابِكَ وَعَافِنَا قَبْلَ ذَلِكَ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লা-তাক্বতুলনা বিগাজাবিকা, ওয়া লা-তুহলিকনা বিআজা-বিকা; ওয়া আ-ফিনা-ক্বাবলা জা-লিকা।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ, আপনি আমাকে আপনার গজব দিয়ে হত্যা করে দেবেন না এবং আপনার আজাব দিয়ে ধ্বংস করে দেবেন না। এসবের আগেই আপনি আমাকে পরিত্রাণ দিন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৫০)

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বজ্রপাতের শব্দ শুনলেই পাঠ করতেন, ‘সুবহানাল্লাজি ইয়ুসাব্বিহুর রা’অদু বিহামদিহি।’

ইবনে আবি জাকারিয়া থেকে বর্ণিত অন্য রেওয়ায়েতে আছে তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি বজ্রের আওয়াজ শুনে এ দোয়া পড়বে, ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’, সে বজ্রে আঘাতপ্রাপ্ত হবে না।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ২৯২১৩)

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শুভশ্রীর নতুন 

রাকসুর নির্বাচিতদের গেজেট রাতে, শপথ ২৬ অক্টোবর

নীরবতা শেষে নতুন রূপে অ্যাডেল

জোবায়েদ হত্যা : দোষীদের ফাঁসির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

দেশের মানুষ আধিপত্যবাদ আর মেনে নেবে না : রাশেদ প্রধান

স্কুল-কলেজ কমিটির সভাপতি পদে সরকারি কর্মকর্তা মনোনয়নের প্রজ্ঞাপন স্থগিত

যে কারণে মায়ামিতে বাতিল করা হলো বার্সেলোনার ম্যাচ

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আজ দুই দলের সংলাপ

ছেলে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার মেয়ের মুক্তি দাবি বাবার

মারা গেলেন জনপ্রিয় গায়ক ঋষভ ট্যান্ডন

১০

উগান্ডায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৬

১১

মাভাবিপ্রবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের খসড়া গঠনতন্ত্র প্রণয়ন

১২

বিশ্বের প্রতিটি দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক হবে : আমীর খসরু

১৩

হত্যা মামলায় ২ ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ড

১৪

কাউকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাওয়ার জন্য দোয়া করা যাবে কি না?

১৫

স্ক্রিনশট যাচাই করছে পুলিশ, কারাগারে বুয়েটছাত্র শ্রীশান্ত

১৬

ফের বিয়ে করলেন জেমস, হয়েছেন বাবাও 

১৭

সড়কের নিরাপত্তা উন্নয়নে জেস টায়ারের ব্যতিক্রমী আয়োজন

১৮

শেখ হাসিনার রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী / সাবেক আইজিপি অন্যের ঘাড়ে বন্দুক রেখে বাঁচার চেষ্টা করছেন

১৯

ইবতেদায়ি শিক্ষকদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা 

২০
X