

বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কাশিওয়াজাকি-কারিওয়া পুনরায় চালু করতে যাচ্ছে জাপান। দেশটির নিইগাতা প্রাদেশিক সরকার সোমবার এক ভোটের মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির আংশিক কার্যক্রম পুনরারম্ভের অনুমোদন দিয়েছে।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফুকুশিমা পারমাণবিক দুর্ঘটনার পর জনবিরোধিতা সত্ত্বেও, কার্বন নিঃসরণ কমানো ও জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে জাপান গত কয়েক বছরে ধীরে ধীরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো পুনরায় চালু করার নীতি গ্রহণ করেছে। ২০১১ সালের দুর্ঘটনার পর বন্ধ হয়ে যাওয়া ৫৪টি রিঅ্যাক্টরের মধ্যে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি আবার চালু করা হয়েছে।
নিইগাতা প্রাদেশিক পরিষদ গভর্নর হিদেয়ো হানাজুমির ওপর আস্থা ভোট পাস করেছে। গত মাসে তিনি কাশিওয়াজাকি-কারিওয়া কেন্দ্র পুনরায় চালুর পক্ষে অবস্থান নেন। এই ভোটের মাধ্যমে কার্যত কেন্দ্রটি আবার চালুর পথ সুগম হলো।
২০১১ সালে ভূমিকম্প ও সুনামির পর ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্রে ভয়াবহ ত্রিমুখী দুর্ঘটনা ঘটে, যা জাপানের পারমাণবিক শক্তির ওপর জনগণের আস্থা মারাত্মকভাবে নষ্ট করে দেয়। তবে আমদানিনির্ভর জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক ব্যয় বেড়ে যাওয়ায়, দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি কিছু বন্ধ থাকা পারমাণবিক কেন্দ্র পুনরায় চালুর পক্ষে সমর্থন দিচ্ছেন।
বর্তমানে জাপানে মোট ৩৩টি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করার উপযোগী রয়েছে, যার মধ্যে ১৪টি ইতোমধ্যে পুনরায় চালু হয়েছে। কাশিওয়াজাকি-কারিওয়া কেন্দ্রটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি পরিচালনা করে টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি (টেপকো)। তারা ফুকুশিমা কেন্দ্রও পরিচালনা করেছিল।
জাপানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকের খবরে বলা হয়েছে, টেপকো আগামী ২০ জানুয়ারি কেন্দ্রটির ৭টি রিঅ্যাক্টরের মধ্যে প্রথমটি চালুর বিষয়টি বিবেচনা করছে। জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, শুধু এই একটি রিঅ্যাক্টরই টোকিও অঞ্চলের বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রায় ২ শতাংশ বাড়াতে পারে।
তবে রাজনৈতিক অনুমোদন মিললেও স্থানীয় জনগণের মধ্যে মতবিরোধ রয়ে গেছে। নতুন কর্মসংস্থান ও বিদ্যুৎ বিল কমার সম্ভাবনা থাকলেও অনেকেই নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে উদ্বিগ্ন।
মন্তব্য করুন