স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৫০ পিএম
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

স্নিকো বিতর্কে আইসিসির দিকে আঙুল তুললেন স্টার্ক

মিচেল স্টার্ক। ছবি : সংগৃহীত
মিচেল স্টার্ক। ছবি : সংগৃহীত

অ্যাডিলেডে অ্যাশেজ টেস্ট আর সিরিজ জয়ের আনন্দের মধ্যেও অস্ট্রেলিয়ার ড্রেসিংরুমে ছিল এক ধরনের অস্বস্তি। ম্যাচের ফল বদলায়নি, কিন্তু বদলেছে আস্থার জায়গা—আম্পায়ারিং প্রযুক্তি নিয়ে। একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত, বিভ্রান্তিকর স্নিকো গ্রাফ, আর তাতেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে ডিআরএসের বিশ্বাসযোগ্যতা। সেই প্রশ্ন এবার প্রকাশ্যে তুললেন অস্ট্রেলিয়ান তারকা পেসার মিচেল স্টার্ক।

অ্যাডিলেড টেস্টে ৮২ রানের জয় তুলে নিয়ে অ্যাশেজে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচ শেষে স্টার্ক স্পষ্ট ভাষায় বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহারে এই অসঙ্গতি আর চলতে পারে না—এবং এর দায় আইসিসিকেই নিতে হবে।

স্টার্কের মূল প্রশ্নটা সহজ কিন্তু গভীর—‘আম্পায়াররা যখন প্রযুক্তিটা ব্যবহার করেন, তাহলে আইসিসি কেন এর খরচ বহন করবে না?’

তার মতে, সমস্যা শুধু খেলোয়াড়দের নয়। দর্শক, আম্পায়ার, সম্প্রচারকারী—সবাই এই অনির্ভরযোগ্যতায় বিরক্ত। স্টার্ক বলেন, ‘সব সিরিজে যদি এক ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতো, তাহলে এত বিভ্রান্তি থাকত না। একই মান, একই সিস্টেম—এটাই হওয়া উচিত।’

অ্যাডিলেড টেস্টে রিয়েল টাইম স্নিকো (Snicko) ব্যবহারের সময় কয়েকটি সিদ্ধান্ত ঘিরে তৈরি হয় তীব্র বিতর্ক। স্টার্ক নিজেও স্টাম্প মাইকে ক্ষোভ উগরে দিয়ে একপর্যায়ে স্নিকোকে ‘সবচেয়ে বাজে প্রযুক্তি’ বলতেও শোনা যায়। তার মন্তব্য—‘Snicko needs to be sacked’—দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ক্রিকেটবিশ্বে।

বর্তমানে আইসিসি অনুমোদিত দুটি এজ-ডিটেকশন প্রযুক্তি রয়েছে—স্নিকো এবং আল্ট্রা এজ (UltraEdge)। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে ব্যবহৃত হয় স্নিকো, আর ভারত, ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকায় চলে আল্ট্রা এজ। এখানেই তৈরি হচ্ছে মূল সমস্যা—এক আন্তর্জাতিক খেলায় এক রকম প্রযুক্তি, অন্য খেলায় আরেক রকম।

এই বিতর্কে স্টার্ক একা নন। সাবেক অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক রিকি পন্টিং অ্যাডিলেড টেস্ট চলাকালেই সরাসরি বলেছেন, স্নিকোর ওপর আম্পায়ারদেরই ভরসা নেই। টেলিভিশনে বিশ্লেষণে পন্টিংয়ের মন্তব্য ছিল স্পষ্ট—‘এই প্রযুক্তি অন্য দেশগুলোতে ব্যবহৃত প্রযুক্তির মতো ভালো নয়। আম্পায়ারদের জিজ্ঞেস করুন, ওরাও বলবে—এটার ওপর পুরোপুরি ভরসা করা যায় না।’

অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক প্যাট কামিন্সও একই সুরে কথা বলেছেন। তার মতে, বিদেশের মাঠে যে আল্ট্রা এজ দেখা যায়, অ্যাডিলেডে ব্যবহৃত স্নিকো তার সঙ্গে মিলছে না।

‘মাঝেমধ্যে মনে হয় সিদ্ধান্তগুলো খুব একটা ধারাবাহিক নয়। ব্যাটিং করলে সন্দেহ হয়, বোলিং করলে আশা করতে হয়—এই অবস্থায় খেলতে হয়,’ বলেন কামিন্স।

ডিআরএস ক্রিকেটে এসেছে বিতর্ক কমাতে। কিন্তু প্রযুক্তির মান আর ব্যবহারে এই বৈষম্য যদি থেকেই যায়, তাহলে সেই উদ্দেশ্যই প্রশ্নের মুখে পড়ে। স্টার্কের বক্তব্যে তাই শুধু ক্ষোভ নয়, আছে একটি স্পষ্ট বার্তা—আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রযুক্তির দায়িত্ব আর মান এককভাবে আইসিসিকেই নিতে হবে। নইলে আস্থার জায়গাটা ক্রমেই ক্ষয়ে যাবে।

অ্যাশেজের ফলাফলে বদল না এলেও, অ্যাডিলেড টেস্ট হয়তো ভবিষ্যতের বড় একটি পরিবর্তনের সূচনা করে দিল—যেখানে প্রশ্নটা আর ‘আউট না নট আউট’ নয়, বরং ‘কোন প্রযুক্তিতে সেই সিদ্ধান্ত?’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সরকারের গানম্যান প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান, যা বললেন সাদিক কায়েম

নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা জনগণ মেনে নেবে না : আমীর খসরু

গিল পরীক্ষা ব্যর্থ, আবারও হার্দিকের দিকেই ফিরছে বিসিসিআই

বাংলাদেশে ভারতীয় সব ভিসাকেন্দ্র কখন চালু হবে, জানালেন প্রণয় ভার্মা

বাউবিতে দাবি আদায়ের জন্য প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিলেন শিক্ষার্থীরা

গানম্যান পেলেন এনসিপির যে ৬ নেতা

খুনের আরেক মামলায় সাজ্জাদ দম্পতি গ্রেপ্তার

বাংলাদেশ হাইকমিশন নিয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর

বিএনপির মনোনয়ন না পাওয়া পাঁচ নেতার মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

ভারতকে হারিয়ে মোটা অঙ্কের পুরস্কার পাচ্ছে পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা

১০

মনোনয়নবঞ্চিত হয়েও দলের নামেই ফরম নিলেন বিএনপি নেতা

১১

স্বর্ণে এবার রেকর্ড সর্বোচ্চ দাম

১২

দিল্লিতে ভিসা কার্যক্রম বন্ধ করল বাংলাদেশ হাইকমিশন

১৩

কিউই দাপটে কেঁপে উঠল টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ টেবিল

১৪

ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া সেই সচিবের পদোন্নতি

১৫

এনসিপি ও ছাত্রদলের তুমুল সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ

১৬

স্নিকো বিতর্কে আইসিসির দিকে আঙুল তুললেন স্টার্ক

১৭

গণঅধিকার পরিষদ নেতার মরদেহ উদ্ধার

১৮

আ.লীগের আরও এক নেতা গ্রেপ্তার

১৯

হাদিকে হত্যা ও পরে কী ঘটানো হবে, সব পূর্বপরিকল্পিত : নাহিদ

২০
X