দৈনন্দিন নানা প্রয়োজনে আমাদের ঘর থেকে বের হতে হয়। নিকটবর্তী কিংবা দূরবর্তী গন্তব্যে পৌঁছাতে চড়তে হয় নানা যানবাহনে। এর মধ্যে কোনো কোনো সময় ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহনেও চড়তে হয়। তাই সফরকালে নিরাপদ থাকলে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) আমাদের বেশ কিছু দোয়া শিখিয়েছেন। তিনি নিজেও এগুলোর আমল করতেন। কালবেলা অনলাইনের পাঠকের জন্য এ সম্পর্কিত কিছু দোয়া তুলে ধরা হলো।
তিরমিজি শরিফে আনাস ইবনে মালেক (রা.)-এর বর্ণনায় এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, যদি কেউ ঘর থেকে বের হওয়ার সময় বলে,
بِسْمِ اللهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللهِ وَ لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللَّهِ
উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহি, ওয়া লা হাওলা ওয়া লা কুউওয়াতা ইল্লা-বিল্লাহ।
অর্থ : তবে তাকে বলা হয় (আল্লাহতায়ালাই) তোমার জন্য যথেষ্ট, (অনিষ্ট থেকে) তুমি হেফাজত অবলম্বন করেছ। তাতে শয়তান তার থেকে দূরে সরে যায়।
بِسْمِ اللهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللهِ وَ لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللَّهِ
উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহি, ওয়া লা হাওলা ওয়া লা কুউওয়াতা ইল্লা-বিল্লাহ।
অর্থ : আল্লাহর নামে বের হচ্ছি এবং আল্লাহর ওপরই ভরসা করছি। আল্লাহ ছাড়া কোনো ক্ষমতা নেই, কোনো শক্তি নেই। (আবু দাউদ : ৫০৯৫)
لِتَسۡتَوٗا عَلٰى ظُهُوۡرِهٖ ثُمَّ تَذۡكُرُوۡا نِعۡمَةَ رَبِّكُمۡ اِذَا اسۡتَوَيۡتُمۡ عَلَيۡهِ وَتَقُوۡلُوۡا سُبۡحٰنَ الَّذِىۡ سَخَّرَ لَنَا هٰذَا وَمَا كُنَّا لَهٗ مُقۡرِنِيۡنَۙ وَاِنَّاۤ اِلٰى رَبِّنَا لَمُنۡقَلِبُوۡنَ
উচ্চারণ : লিতাসতাও আলা-জুহুরিহি ছুম্মা তাজকুরু নিঈমাতা রব্বিকুম ইজাসতাওয়াইতুম হালাইহি ওয়া তাকু-লু-সুবহানাল্লাজি সাখখার লানা-ওয়া মা কুন্না লাহু মুকরিনিন।
অর্থ : যাতে তোমরা যখন তাদের পিঠে স্থির হয়ে বসো, তখন যেন তোমাদের প্রতিপালকের অনুগ্রহের কথা স্মরণ করো আর বলো, মহান ও পবিত্র তিনি যিনি, এগুলোকে আমাদের (ব্যবহারের জন্য) বশীভূত করে দিয়েছেন, আমরা এগুলোকে বশীভূত করতে সক্ষম ছিলাম না। আর আমাদের অবশ্যই আমাদের প্রতিপালকের দিকে ফিরে যেতে হবে। (সুরা যুখরুফ : ১৩-১৪)
রাসুল (সা.) আরেকটি দোয়া পড়তেন
اللَّهُمَّ إِنَّا نَسْأَلُكَ فِي سَفَرِنَا هَذَا الْبِرَّ وَالتَّقْوَى وَمِنَ الْعَمَلِ مَا تَرْضَى اللَّهُمَّ هَوِّنْ عَلَيْنَا سَفَرَنَا هَذَا وَاطْوِ عَنَّا بُعْدَهُ اللَّهُمَّ أَنْتَ الصَّاحِبُ فِي السَّفَرِ وَالْخَلِيفَةُ فِي الأَهْلِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ وَعْثَاءِ السَّفَرِ وَكَآبَةِ الْمَنْظَرِ وَسُوءِ الْمُنْقَلَبِ فِي الْمَالِ وَالأَهْلِ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকা ফি সাফরিনা হা-জাল বিররা ওয়াত তাকওয়া, ওয়া মিনাল আমালি মা তার-দা আল্লাহুম্মা হাউয়িন আলাইনা সাফারনা হা-যা, ওয়াতওই আন্না বু’দাহু, আল্লাহুম্মা আনতাস্-সাহিবু ফিস্-সাফার, ওয়াল খালিফাতু ফিল আহলি ওয়াল মাল। আল্লাহুম্মা ইন্না নাউজুবিকা মিন ওয়া-ছা-ইস সাফারি ওয়া-কাআবাতিল মানজারি, ওয়া সুইল মুনকালাবি ফিল আহলি ওয়াল মাল।’
অর্থ : হে আল্লাহ! আমাদের জন্য আমাদের এ সফর সহজ করে দাও। রাস্তার দূরত্ব কমিয়ে দাও। হে আল্লাহ! তুমি আমাদের সফরের সঙ্গী এবং আমাদের পরিবারের কাছে তুমি আমাদের স্থলাভিষিক্ত। হে আল্লাহ! তোমার কাছে সফরের কষ্ট-ক্লান্তি ও ভয়ানক দৃশ্য দেখা থেকে এবং পরিবার, সম্পদ-বিত্ত ও অধীনদের কাছে খারাপ অবস্থায় ফেরত আসা থেকে তোমার কাছে রক্ষা চাই। (মুসলিম, হাদিস : ৯৭৮/২)
بِسْمِ اللَّهِ مَجْرَاهَا وَمُرْسَاهَا إِنَّ رَبِّي لَغَفُورٌ رَحِيمٌ
উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি মাজর-হা ওয়া মুরসা-হা, ইন্না রব্বি লা গফুরুর রহিম।
অর্থ : এ চলা ও থামা আল্লাহরই নামে। নিশ্চয়ই আমার মালিক ক্ষমাশীল ও দয়ালু। (সুরা হুদ : ৪১)
ভ্রমণের মাঝপথে কোথাও অবস্থান করতে হলে এ দোয়া পড়ার নির্দেশ দিয়ে রাসুল (সা.) বলেন, ‘এই দোয়াটি পড়লে, ঘরে ফেরা পর্যন্ত কোনো কিছুই ক্ষতি করতে পারবে না। দোয়াটি—
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ الله التَّامَّاتِ من شَرِّ ما خَلَقَ
উচ্চারণ : আউজু বিকালিমা-তিল্লাহিত তা-ম্মা-তি মিন শাররি মা খলাক।
অর্থ : আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ কালেমার মাধ্যমে সব ধরনের অনিষ্ট থেকে নিরাপত্তা চাচ্ছি। (মুসলিম, হাদিস : ২৭০৮)
মন্তব্য করুন