পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান ফের আটক হয়েছেন বলে হঠাৎ গুঞ্জন ছড়ায়। কেউ কেউ তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও শেয়ার করেন। তবে বিষয়টি গুজব বলে নিশ্চিত করেছেন সাবেক এ মন্ত্রী নিজেই।
শনিবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর বনানী এলাকায় হোটেল লেকশোরে এ ঘটনা ঘটে। সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান কালবেলাকে বলেন, সুস্থ আছি। বাসায় আছি।
আটকের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় তিনি রাজধানীর বনানী এলাকায় হোটেল লেকশোরে বন্ধুদের সঙ্গে একটি চা আড্ডায় ছিলেন। তখন কিছু লোক সেখানে একত্রিত হওয়া শুরু করেন। এমন ঘটনার পর গুলশান থানা পুলিশের একটি দলও সেখানে আসে। তারা আমাকে সাধারণ কিছু প্রশ্ন করেন। এরপর আমাকে সেখান থেক নিরাপদে বের করে নিয়ে আসেন।
এমএ মান্নান আরও বলেন, আমি ভালো আছি, বয়স্ক মানুষ, কিছু রোগ আছে। আর কোনো সমস্যা নেই।
কালবেলার কাছে আসা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশের তিন সদস্য তাকে অনেকটা ঘেরাও করে পুলিশের গাড়িতে তুলছে। ওই সময়ে সেখানে সাদা পোশাকেও কয়েকজনকে দেখা যায়। কেউ কেউ তখন মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করছিলেন।
গুলশান বিএনপির স্থানীয় একজন নেতা জানান, এমএ মান্নানকে লেকশোর হোটেলে দেখতে পেয়ে তাদের কয়েকজন সেখানে অবস্থান নিয়েছিল। তবে কেউ আইন হাতে তুলে না নিয়ে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ তাকে নিয়ে যায়।
নাম প্রকাশ না করে পুলিশের একজন কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা এড়াতে সাবেক ওই মন্ত্রীকে পুলিশের গাড়িতে করে নিরাপদে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান জোনের এডিসি আল আমিন হোসাইন কালবেলাকে বলেন, সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানকে আটক করা হয়নি। একটা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সেখানে (লেকশোর হোটেল) গিয়েছিল।
এর আগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার নিজ বাড়ি থেকে এমএ মান্নানকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। পরে সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে এবং পরে সিলেট কেন্দ্রীয় কারা হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর গত ১০ অক্টোবর আদালত থেকে তিনি জামিনে বের হন।
২০০৩ সালে চাকরি থেকে অবসরের পর ২০০৫ সালে সুনামগঞ্জ-৩ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে হেরে গিয়েছিলেন সাবেক আমলা এমএ মান্নান। তবে ২০০৮ সালে প্রথম নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করেন। এরপর ২০১৪ সালে দশম এবং ২০১৮ সালে একাদশ নির্বাচনেও জয় পান তিনি।
২০১৪ সালে শুরুতে তিনি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এর চার মাস পর তার দায়িত্বে যুক্ত হয় অর্থ মন্ত্রণালয়ও। ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর তাকে করা হয় পরিকল্পনামন্ত্রী।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে টানা চতুর্থবার সংসদ সদস্য হওয়ার পর আওয়ামী লীগের শেষ মেয়াদে মন্ত্রিসভায় স্থান হয়নি তার। যদিও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছিলেন।
মন্তব্য করুন