ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেছেন, একটি বিশেষ ছাত্রসংগঠনের অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা ছাত্রনেতা সাম্যের নামে নানারকম আজগুবি প্রপাগাণ্ডা ও গুজব ছড়িয়ে ক্রমাগত ‘ভিক্টিম ব্লেমিং’ করে যাচ্ছে। আমরা তাদের এই কুরুচিপূর্ণ কাজের নিন্দা জানাই।
শুক্রবার (১৬ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা বলেন।
নাছির বলেন, ‘ছাত্রনেতা সাম্য হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে দল-মত নির্বিশেষে অনেকগুলো ছাত্র সংগঠন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তবে আমরা অত্যন্ত দুঃখের সাথে লক্ষ্য করেছি, একটি বিশেষ ছাত্রসংগঠনের অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা ছাত্রনেতা সাম্যের নামে নানারকম আজগুবি প্রপাগাণ্ডা ও গুজব ছড়িয়ে ক্রমাগত ‘ভিক্টিম ব্লেমিং’ করে যাচ্ছে। আমরা তাদের এই কুরুচিপূর্ণ কাজের নিন্দা জানাই।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রদলের প্রতিটি নেতাকর্মীর মতো শহীদ সাম্যও জুলাই আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের একজন সম্মুখসারির যোদ্ধা। আন্দোলনে তার সাহসী ভূমিকার ভিডিও চিত্র আপনারা দেখেছেন। সাম্য হত্যার প্রতিবাদে সারা দেশের ছাত্রজনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ করেছে। সাম্যর ক্যাম্পাসে সার্বজনীন প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। ঢাকা শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তার জানাজা এবং প্রতিবাদ সমাবেশে অংশগ্রহণ করেছে। কিন্তু একটি সংগঠনের অনলাইন জনশক্তিরা সর্বশক্তি দিয়ে নায্য প্রতিবাদ সমাবেশকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছে। তারা এক্ষেত্রে পুরোনো ট্রাকের ছবি দিয়ে মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা করেছে।’
‘সাম্য হত্যাকাণ্ডের গ্রেপ্তার আসামির সঙ্গে জনৈক শ্রমিক দল নেতার নামের মিল দেখিয়ে উদ্দেশ্যমূলক মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। তাদের সংঘবদ্ধ আচরণ প্রমাণ করে তারা সাম্য হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত বা বিচার চায় না। বরং হত্যার শিকার ভিক্টিমকেই যেন তেনভাবে দোষারোপ করা তাদের রাজনীতির অভীষ্ট লক্ষ্য।’
‘আমরা এসব প্রপাগাণ্ডা ও মিথ্যাচারের নিন্দা জানাই। শহীদ সাম্যের হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই। ছাত্রনেতা শহীদ সাম্য হত্যাকাণ্ডের দায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি-প্রক্টর কোনোভাবে এড়াতে পারেন না। তারা দায়িত্ব নেওয়ার পরে মাত্র নয়মাসে দুটি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। প্রশাসন দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে দুটি হত্যাকাণ্ডই এড়ানো যেত।’
নাছির বলেন, তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ড, ফ্যাসিস্ট হাসিনার গ্রাফিতি মুছে ফেলা, চারুকলায় হাসিনার মোটিফে আগুন দেওয়া থেকে ছাত্রদল নেতা সাম্য হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত ঘটনাগুলোতে দেখা যাচ্ছে, ভিসি-প্রক্টরের নিষ্ক্রিয়তার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপত্তাহীন এবং ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। হাইকোর্ট, চানখারপুল, বকশিবাজার, পলাশি, নীলক্ষেত, কাটাবন, শাহবাগ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, বাংলা একাডেমি, মেট্রোরেল, ঢাকা মেডিকেলের গেট, বার্ন ইউনিটসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এবং ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকা এবং মূল ক্যাম্পাসের বাইরের একাডেমিক ও আবাসিক হল এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় চব্বিশ ঘণ্টা শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করার দায়িত্ব বিশ্বিবদ্যালয়ের ভিসি ও প্রক্টরের। অন্যথায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে কোনো সময়ে হত্যা, ছিনতাই, চুরি, শ্লীলতাহানির শিকার হতে পারে। এমনকি ধর্ষণের মতো নৃশংস ঘটনাও ঘটতে পারে। শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে না পারার কারণে বর্তমান উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ করাই সমীচীন।
স্ট্যাটাসের শেষে নাছির বলেন, অপরাধীচক্র কখনো সূতাক্ষিসূক্ষ সীমানা মেপে অপরাধ করে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য ক্যাম্পাসের চারিদিকে একটি নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তুলতে হবে। মহান আল্লাহ আমাদের সহযোদ্ধা মরহুম সাম্যকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুন। আমিন।’
মন্তব্য করুন