জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলনে সোচ্চার ছিলেন ঢাকাই অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। তিনি আশা করেছিলেন, এই গণঅভ্যুত্থান দেশ ও নাগরিকদের মানসিকতায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা, সামাজিকমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় এবং একদল মানুষ কর্তৃক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপবাদে এবার ক্ষোভ ঝাড়লেন শবনম ফারিয়া।
বুধবার (১৮ জুন) সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের এক পোস্টে এ ক্ষোভ ঝাড়লেন তিনি।
ফেসবুক পোস্টে শবনম ফারিয়া লিখেছেন— কিন্তু বিশ্বাস করেন, পৃথিবীর সব মানুষ ‘টাকার’ (ডলারও পরতে পারেন) কাছে তাদের ‘এথিক্স’ বিক্রি করে না। দুনিয়ার ‘সব মানুষের’ কাছে টাকাই ‘সব’ না। কিন্তু মানুষ নিজস্বতায় বিশ্বাস করে! স্রোতের বিপরীতেও যায়! রিস্ক নেয়!
আন্দোলনের কথা স্মরণ করে তিনি লিখেছেন, জুন মাসে যখন আন্দোলন তুঙ্গে, ইন্টারনেট চলে যাওয়ার পরপর যেসব সেলিব্রেটিদের কাছে, মেট্রোরেল/বিটিভিতে আগুন দেওয়ার প্রতিবাদ করার জন্য ভিডিও বানাতে বলা হয়, আমিও তাদের মধ্যে একজন। আমি প্রথমে সময় চাই, বলি ভেবে জানাব! স্বাভাবিক, সে সময় ডাইরেক্ট না করার মতো সাহস জোগাড় করতে পারিনি! তারাও বলে সময় নেন, আপাতত এমনেই ইন্টারনেট নাই।
তিনি আরও লিখেছেন, যেহেতু হোয়াটঅ্যাপ বন্ধ, তাও সিয়ামকে ডাইরেক্ট মেসেজ দেই- “Did you get a call from S****** bhai?” ও রিপ্লাই করে, ‘Yes & I said NO’ তখন সাহস পাই এবং আমিও তখন না বলি। এসব কথা অযথা বলে বেড়ানোর কোনো ইচ্ছা আমার ছিল না! সে সময় এটাই করার কথা, না বলেছি বলে আমি বিশেষ কোনো ক্রেডিট নিতে চাইনি।
অভিনেত্রী লিখেছেন, যেহেতু আমি ব্যক্তিগতভাবে রাজনীতির সাথে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ কোনোভাবেই জড়িত না, অদূর ভবিষ্যতেও কোনো ইচ্ছা কিংবা পরিকল্পনা নেই তাও যখন দেখি কেউ লেখে ‘এরা তো ডলার খাইছে’ মার্কা কাল্পনিক গল্প , হাসা ছাড়া কিছু করার থাকে না।
তিনি লিখেছেন, ভাই আমি এমন অনেক মানুষকে চিনি যারা মন থেকে আওয়ামী লীগ ভালোবাসে কিন্তু জুলাইয়ে লাল ডিপি দিসিলো! হয়তো জুলাইকে আমাদের সাধারণ মানুষের কাছে যেভাবে সে সময় পোট্রে করা হইছে এখন বিষয়টা তেমন নাই; কিন্তু সে সময় আপনি যদি মানুষ হয়ে থাকেন, অমানুষ না হোন তাহলে আপনি কোনো মানুষকে হত্যা করার প্রতিবাদ না করে থাকতে পারতেন না , আপনার রাজনৈতিক পরিচয় কিংবা মতাদর্শ যাই হোক!
শবনম ফারিয়া আরও লিখেছেন, এই স্ট্যাটাসের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের পলিটিক্স নিয়ে স্ট্যাটাস দেওয়া বন্ধ করলাম! কারণ ফাইনালি আমি বুঝে গেছি, জাতি হিসেবে আমরা অত্যন্ত বেহায়া এবং নির্লজ্জ, আমরা কক্ষনো ভালো হবো না, যত আন্দোলন হোক, সরকার পরিবর্তন হোক, যতই শান্তিতে নোবেল পাওয়া মানুষ আসুক, আমাদের কেউ দুর্নীতি এবং চুরি করা থেকে আটকাতে পারবে না! শিশু, কিশোর, বৃদ্ধ যেই ক্ষমতা পাবে সে-ই তার অসৎ ব্যবহার করবে। আমি আর আমার নিজ দেশের কাছে আর কোনো এক্সপেকটেশন রাখি না!
তিনি লিখেছেন, পরিশেষে বলতে চাই, সত্যি সত্যি ডলার পেলে আসলে ভালোই লাগত! শ্রীলঙ্কা যাওয়ার আগে ২৫৩০০ টাকা দিয়ে ২০০ ডলার পাসপোর্টে এন্ডোরর্স করতে খুবই কষ্ট হইছে !!!
মন্তব্য করুন