কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২৫, ০৬:১০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ইংলিশ মিডিয়ামের সেই তরুণীকে নিয়ে আহমাদুল্লাহর স্ট্যাটাস

ইংলিশ মিডিয়ামের শিক্ষার্থী মেহরীন ও শায়খ আহমাদুল্লাহ। ছবি : সংগৃহীত
ইংলিশ মিডিয়ামের শিক্ষার্থী মেহরীন ও শায়খ আহমাদুল্লাহ। ছবি : সংগৃহীত

বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনে নিজের সুরক্ষা চেয়ে আদালতে মামলা করা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষার্থী মেহরীনকে নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন আলোচিত বিশিষ্ট ইসলামি ব্যক্তিত্ব শায়খ আহমাদুল্লাহ।

সোমবার (১৪ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেন তিনি।

পোস্টে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, এই বৃষ্টিস্নাত দিনে ইংলিশ মিডিয়াম পড়ুয়া আলোচিত সেই মেয়েটির বাবা-মায়ের কথা ভাবছি। নিশ্চয় বুকে জমানো সবটুকু আবেগ, ভালোবাসা ও মমতা দিয়ে তারা মেয়েটিকে বড় করছিলেন।

তিনি উল্লেখ করেন, ছোটবেলায় মেয়েটি যখন জ্বরে পড়েছে, বাবা-মায়ের অসংখ্য নির্ঘুম রাত নিশ্চয় মেয়ের শিয়রে বসে কেটেছে। মেয়েটি কোনো কিছু পাওয়ার আবদার করলে বাবা-মা হয়তো হৃদয় উজাড় করে তা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। নিজেদের কষ্টার্জিত উপার্জন নিশ্চয় তারা ব্যয় করেছেন মেয়েটির সুস্থ-সবল ও হাসি-আনন্দে বেড়ে ওঠার জন্য। নিজেদের চেয়ে মেয়েকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন সবকিছুতে।

আহমাদুল্লাহ বলেন, মেয়ে বাবা-মায়ের চক্ষু শীতলকারী সন্তান হবে- আর দশজন বাবা-মায়ের মতো এমন স্বপ্ন তারাও নিশ্চয়ই লালন করতেন। কিন্তু কে জানত, জীবনের মাঝপথে এসে ডানাভাঙা পাখির মতো তাদের সব আশা লুটিয়ে পড়বে মাটিতে!

তিনি উল্লেখ করেন, সন্তানের করা মামলায় সেই বাবা-মাকে যখন জনাকীর্ণ আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছিল, অসংখ্য মিডিয়ার সামনে তীর্যক গলায় মেয়েটি যখন বাবা-মাকে ক্রিমিনাল বলছিল, তাদের মনের অবস্থা কেমন হয়েছিল? নিশ্চয় তারা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন। বড় বেশি মায়া হচ্ছে ওই হতবাক বাবা-মায়ের জন্য।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, আমরা প্রায় সবাই ছোটবেলায় মা-বাবার শাসনের মধ্য দিয়ে বড় হয়েছি। এই পরিণত বয়সে এসে সেসব দৃশ্য যখন চোখের সামনে ভেসে ওঠে, বাবা-মায়ের প্রতি শ্রদ্ধায় নুয়ে পড়ে হৃদয়, চক্ষু হয়ে ওঠে অশ্রুসজল। তাদের সেসব আদরমাখা শাসনই আমাদের আজকের সাফল্যের সিঁড়ি। আজ এই মুহূর্তে একটি কথা বড় বেশি মনে হচ্ছে, তাদের শাসন ছিল অন্যদের আদরের চেয়েও মূল্যবান, জীবনের পথ নির্দেশক।

পোস্টে তিনি বলেন, আজকাল প্রায়ই সন্তানরা আমাদের স্বপ্নভঙ্গ করছে। এর দায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমাদের, মা-বাবাদের। পশ্চিমা সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আমরা অনেক বেশি বস্তুবাদী, ভোগবাদী, আত্মকেন্দ্রিক ও ক্যারিয়ারিস্ট হয়ে উঠছি। সন্তান প্রতিপালনের ক্ষেত্রে ইমান, আত্মপরিচয়, ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধকে আমরা উপেক্ষা করছি। সন্তানের ক্যারিয়ার, ইহজাগতিক সাফল্যই আমাদের কাছে হয়ে উঠছে প্রধান অর্জন। ফলে একটা সময় আমাদের সন্তানরা হয়ে উঠছে স্বেচ্ছাচারী, উচ্ছৃঙ্খল, বেপরোয়া। যার সর্বশেষ পরিণতি আমরা দেখলাম, অধিকার খর্বের অভিযোগে বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে সন্তানের মামলা। এটাই বোধহয় সতর্কতার কফিনে শেষ পেরেক।

আহমাদুল্লাহ আরও উল্লেখ করেন, এরপরও যদি আমরা না শুধরাই, পড়াশোনার পাশাপাশি সন্তানকে আত্মপরিচয় ও মূল্যবোধ না শেখাই, তবে আফসোস, হতাশা ও স্বপ্নভঙ্গের বেদনাই হবে আমাদের চিরসাথী। সেই দুর্দিন আসার আগেই আসুন সচেতন হই।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সাপের মতো সুযোগ সন্ধানী শেখ হাসিনা ও তার দলবল : অধ্যাপক নার্গিস

‘বাচ্চা না হলে সংসার ছেড়ে চলে যেতে হবে’

তিন চমক নিয়ে ইতালির বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দল ঘোষণা

২৬ সেপ্টেম্বর থেকে প্রাথমিক শিক্ষকদের আমরণ অনশনের আলটিমেটাম

চার সিদ্ধান্ত জানাল ডাকসুর নির্বাচন কমিশন

নুরের ওপর হামলার প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় বিক্ষোভ

আফ্রিদির পছন্দের কেএফসির চিকেন আনল পরিবার, মেলেনি অনুমতি

মেয়োনিজ না পাওয়ায় ক্যাফেতে আগুন ধরিয়ে দিলেন বৃদ্ধ!

এবার ইসরায়েলের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে দাঁড়াল রাশিয়া

তাসকিনের চার উইকেট, নেদারল্যান্ডসের সংগ্রহ ১৩৬

১০

দেশের ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতিতে ভোট চায় : মুহাম্মদ শাহজাহান

১১

ভোটে জয় নয়, মানুষের জীবন বদলানোই লক্ষ্য : বিএনপি নেতা মনিরুজ্জামান

১২

চার বিভাগে দমকা হাওয়া ও বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস

১৩

নুরের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানাল ঢাবি সাদা দল 

১৪

জাতীয় পার্টি কি নিষিদ্ধ হচ্ছে?

১৫

‘আমার কিডনিতে অপারেশন, স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা’ বলে আদালতে জামিন চান আফ্রিদি

১৬

কালবেলায় সংবাদ প্রকাশ, ফুটো পাইপ মেরামতে নেমেছে ওয়াসা

১৭

একটি গোষ্ঠী নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে : মির্জা ফখরুল

১৮

আল্লাহ ছাড়া ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন ঠেকানোর শক্তি কারোর নেই : সালাহউদ্দিন

১৯

নুরের ওপর হামলায় কোন দল কী প্রতিক্রিয়া জানাল

২০
X