বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিতে গিয়ে তোপের মুখে পড়েছেন বিতর্কিত চিকিৎসক ডা. সাবরিনা। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যায়, নরসিংদী জেলা জিয়া সাংস্কৃতিক সংগঠনের ব্যানারে ডা. সাবরিনাসহ কয়েকজন জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানাতে অপেক্ষা করছিলেন। তখন ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সভাপতি আকরাম কয়েকজন নেতাকর্মী নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন।
আকরাম ডা. সাবরিনার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির এক নম্বর সদস্য। এরপর ছাত্রদল নেতা বলেন, ‘বিএনপি থেকে একটি প্রেস দেওয়া হয়েছে, আপনার এখানে আসার কথা না। আপনি আগে শেখ হাসিনাকে নিয়ে স্লোগান দিয়েছিলেন।’
জবাবে সাবরিনা বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে নিয়ে আমি কখনো কোনো স্লোগান দিইনি,’ এবং ছাত্রদল নেতাদের কাছে সেই স্লোগানের প্রমাণ দেখাতে বলেন। একপর্যায়ে আকরাম তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘এখান থেকে চলে যেতে হবে। এরপর সাবরিনা বলেন, ‘জিয়ার মাজার সবার।’
ভিডিওতে আরও দেখা যায়, উপস্থিত কয়েকজন নেতাকর্মী সাবরিনাকে ঘিরে ‘আওয়ামী দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’ এমন স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় বেশ কিছুক্ষণ তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। তবে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা তার সেখান থেকে চলে যাওয়ার দাবিতে অনড় থাকেন। একপর্যায়ে গাড়িতে করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন সাবরিনা।
এর আগে, ‘গত ২৫ আগস্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেন যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লেখেন, ‘বিতর্কিত চিকিৎসক সাবরিনা করোনার সার্টিফিকেট জালিয়াতি মামলায় দোষী। এই মহিলা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের মাজারে যাওয়ার সাহস পেল কোথা থেকে? তাকে যারা সঙ্গে নিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’
অভিযোগ রয়েছে, ডা. সাবরিনা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় অসৎ উদ্দেশে এবং কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া জেকেজি হেলথ কেয়ার নামের একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান পরিচয় ব্যবহার করে আর্থিক সুবিধা অর্জন করেছেন।
আরও অভিযোগ রয়েছে, তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও অন্যান্যদের সহযোগিতায় তার স্বামী আরিফুল চৌধুরীর ওভাল গ্রুপের মালিকানাধীন জেকেজি হেলথ কেয়ারকে কোভিড-১৯ নমুনা সংগ্রহের জন্য অনুমতি পেতে সাহায্য করেছেন, যদিও প্রতিষ্ঠানটি অভিজ্ঞতাহীন, নিবন্ধনবিহীন এবং ট্রেড লাইসেন্সবিহীন ছিল।
২০২২ সালের ১৯ জুলাই, ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন জাল করোনা সনদ জালিয়াতির মামলায় সাবরিনা ও তার স্বামীসহ ৬ জনকে ১১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। বর্তমানে তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে কারামুক্ত রয়েছেন।
মন্তব্য করুন