মালদ্বীপের বিপক্ষে বাংলাদেশের লড়াইটা টিকে থাকার, অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার কথায় এটা ফাইনাল ম্যাচ! বেঙ্গালুরুর কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে আজ বিকেল ৪টায় শুরু হতে যাওয়া ম্যাচটি সরাসরি দেখাবে টি-স্পোর্টস।
লেবাননের সঙ্গে দারুণ লড়াই করলেও শেষ দিকের ভুলে ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। পশ্চিম এশিয়ার দেশটির বিপক্ষে ম্যাচ থেকেই লড়াইয়ের শক্তি খুঁজছে লাল-সবুজরা। সেটা আদৌ কাজে লাগাতে পারবে বাংলাদেশ? অতীতে দৃষ্টি রাখলে কিন্তু আশাবাদী হওয়ার সুযোগ কম। ২০১৮ সালে প্রথম দুই ম্যাচে পাকিস্তান ও ভুটানকে হারিয়ে ৬ পয়েন্ট সংগ্রহ করার পরও গ্রুপ পর্ব থেকেই ছিটকে গেছে লাল-সবুজরা! এ আসরে বাংলাদেশের হারের বিপরীতে প্রথম ম্যাচে ভুটানের বিপক্ষে মালদ্বীপ জিতেছে ২-০ গোলে। তাই বাংলাদেশকে আজ জিততে হলে সামর্থ্যের সেরাটা দিতে হবে।
‘ইতিবাচক দিক হচ্ছে, আমরা সুযোগ তৈরি করতে পারছি। সে সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। শুধু যে স্ট্রাইকাররা গোল করবেন—বিষয়টি কিন্তু এমন নয়। সুযোগ কাজে লাগিয়ে অন্যরাও গোল করতে পারেন। টিকে থাকতে হলে আমাদের গোল করতে হবে’—মালদ্বীপ ম্যাচের আগে বলছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। লেবাননের বিপক্ষে পরিষ্কার সুযোগ সৃষ্টি করলেও কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। গোলের নেশায় রক্ষণ অরক্ষিত করে ফেলার মাশুল দিয়ে ম্যাচ হারতে হয়েছে।
মালদ্বীপ ম্যাচের আগে বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের ক্যাবরেরা সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও গোলের কথা বললেন, ‘আমরা নিজেদের ম্যাচ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। এ জন্য নিজেদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। বিশ্বাস করি যে, সুযোগ কাজে লাগিয়ে গোল করতে পারব, ম্যাচ জিততে পারব।’ পরিসংখ্যানে দৃষ্টি রাখলে আপনি হয়তো আশাবাদী হবেন। কারণ ১৫ মোকাবিলায় দুই দলের জয় সংখ্যা সমান, ৬টি করে। বাকি তিন ম্যাচ ড্র হয়েছে। এ পরিসংখ্যানে যারা আশাবাদী হচ্ছেন, তাদের জন্য শঙ্কার তথ্য হচ্ছে বাংলাদেশের অধিকাংশ জয় দুই দলের লড়াইয়ের শুরুর দিকে। শেষদিকের ম্যাচগুলোতে মালদ্বীপের পরিষ্কার আধিপত্য ছিল। ১৯৮৪ ও ১৯৮৫ সালে তিন মোকাবিলায় বাংলাদেশ সব ম্যাচ জিতেছে। তিন ম্যাচে ক্লিন-শিট রাখা লাল-সবুজরা ১৮ গোল করেছে! তার পর থেকে ক্রমেই আধিপত্য কমেছে বাংলাদেশের। ২০১১ সালের পর খেলা ছয় ম্যাচের মাত্র একটি হেরেছে মালদ্বীপ; বাকি পাঁচটি জয়। দ্বীপদেশটিকে বাংলাদেশ সর্বশেষ হারিয়েছে ২০২১ সালের নভেম্বরে, শ্রীলঙ্কায় চার জাতির আসরে। সে হিসেবে আজ বাংলাদেশ আন্ডারডগ হিসেবেই খেলতে নামবে।
যদিও ম্যাচে দুই দলের সামনে সমান সম্ভাবনা দেখছেন বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের ক্যাবরেরা, ‘বাংলাদেশের কোচ হিসেবে আমার প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপের বিপক্ষে হেরেছিলাম। পরে শ্রীলঙ্কায় আমরা তাদের হারিয়েছি। আমি বিশ্বাস করি, ম্যাচে দুই দলের সামনে সমান সুযোগ থাকবে। মালদ্বীপ কিন্তু ড্র করার মানসিকতায় এ ম্যাচ খেলতে নামবে না। তারাও জয়ের জন্য ঝাঁপাবে।’ পেছনের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে মালদ্বীপের বিপক্ষে খেলতে নামছে বাংলাদেশ। এ সম্পর্কে সেন্টারব্যাক তপু বর্মণ বলেছেন, ‘প্রথম ম্যাচে আমাদের শুরুটা ছিল দারুণ। আক্রমণ প্রতিহত করার পাশপাশি আমাদের গোল করার লক্ষ্য ছিল। ভুল যেটা হয়েছে, সেটা আমরা মেনে নিচ্ছি। একটা বিষয় নিশ্চিত করতে চাই, সে ভুলটা যাতে পুনরায় না ঘটে।’
নিজেদের লক্ষ্য সম্পর্কে বাংলাদেশ কোচ বলেছেন, ‘এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। কিন্তু এখনো আমরা নিজেদের ওপর নির্ভরশীল। আমাদের একটা জয় দরকার। আমরা জিততে চাই। জানি ম্যাচটা কঠিন হতে যাচ্ছে। এ জন্য দল প্রস্তুত। আমরা আশাবাদী, ম্যাচ থেকে লক্ষ্য অর্জন করতে পারব।’
মন্তব্য করুন