২০২৫ সাল যেন বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে আন্ডারডগদের বিজয়ের এক প্রতীক হয়ে উঠেছে। বছরের শুরু থেকেই যেসব দল, যাদের তেমন একটা হিসেব করা হয়নি, তারা একের পর এক বড় মঞ্চে চমক সৃষ্টি করছে। প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি) তাদের ইতিহাসে প্রথমবার জিতে নেয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। ১২০ বছর পর ট্রফি ঘরে তোলে ইংলিশ ক্লাব ক্রিস্টাল প্যালেসও। আইপিএলে অবশেষে শিরোপা জেতে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি)।
আর এবার সেই তালিকায় নাম লেখাতে মরিয়া দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় ক্রিকেট দল। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৫-এর ফাইনালে, লর্ডসের ঐতিহাসিক মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এক ঝলমলে শতকে দলকে জয়ের পথে নিয়ে গেছেন ওপেনার এইডেন মার্করাম।
তৃতীয় দিনে ২৮২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা যখন চাপের মুখে, তখন দৃঢ়তা ও নান্দনিকতায় টিকে থেকে ১৫৬ বলে ১১টি চারে শতক পূর্ণ করেন মার্করাম। দিন শেষে প্রোটিয়ারা দাঁড়িয়ে ২১৩/২ স্কোরে, জয়ের জন্য দরকার আর মাত্র ৬৯ রান।
সঙ্গে থাকা অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা অপরাজিত ৬৫ রানে। অস্ট্রেলিয়ার কামিন্স, স্টার্ক, হ্যাজলউড ও লায়নের বোলিং আক্রমণের সামনে যেভাবে তারা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলেছেন, তাতে বোঝা যাচ্ছে — এবার ‘আন্ডারডগ’ নয়, বরং ইতিহাস লেখার সময় এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকার।
এইডেন মার্করামের ইনিংসকে অনেকেই বলছেন ফাইনালের অন্যতম সেরা শতক। সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক মাইকেল ভন লিখেছেন, ‘বিশ্বমানের বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে এই ইনিংসটি ছিল অত্যন্ত স্পেশাল। ২০২৫ সত্যিই আন্ডারডগদের বছর।’
২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে হেরে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালেও স্বপ্নভঙ্গ ঘটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। কিন্তু এবারের গল্পটা অন্য রকম। এবারের বছরটা যেন পেছনে পড়ে থাকা, অবহেলিত বা বারবার হতাশ হওয়া দলগুলোর ‘পুনর্জন্মের বছর’।
২০২৫ এখন পর্যন্ত হয়ে উঠেছে আন্ডারডগদের বিজয়ের বার্তা। আর ক্রিকেটের মহারণে সেই বার্তাকে পূর্ণতা দিতে প্রস্তুত প্রোটিয়ারা।
চতুর্থ দিনে তারা পারবে কি সেই বহু কাঙ্ক্ষিত ট্রফি ছুঁতে? যদি পারে, তবে নিঃসন্দেহে ২০২৫ পুরোপুরি হয়ে উঠবে আন্ডারডগদের বছর।
মন্তব্য করুন