৩৫০-এর বেশি রান তুলে সাধারণত ম্যাচ হাতছাড়া হয় না। কিন্তু ক্রিকেট মাঝেমধ্যে সেই ‘সাধারণ’ নিয়মটাই বদলে দেয়। রায়পুরে বিরাট কোহলি ও ঋতুরাজ গায়কোয়াড়ের সেঞ্চুরিতে ভর করে ভারতের পাহাড়সম লক্ষ্য গড়াও শেষ পর্যন্ত যথেষ্ট হলো না। ইতিহাস গড়ে সেই রানই টপকে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা—ফলে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ফিরল সমতা।
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভারত আগে ব্যাট করে তোলে ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩৫৮ রান। কোহলি নিজের টানা দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেন, ৯০ বলে ১০২ রানে পৌঁছান তিনি। অন্য প্রান্তে রুতুরাজ গায়কোয়াড় খেলেন ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস—১০৫ রান করে তুলে নেন নিজের প্রথম ওয়ানডে শতক। শেষে কেএল রাহুলের দ্রুতগতির অপরাজিত ৬৬ রানের সুবাদে ভারতের স্কোরবোর্ড দাঁড়ায় বিশাল এক চ্যালেঞ্জ নিয়ে।
কিন্তু সেই চ্যালেঞ্জকেই শেষ পর্যন্ত পেরিয়ে যায় প্রোটিয়ারা। ৩৫৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করে ৪৯.২ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে জয় নিশ্চিত করে দক্ষিণ আফ্রিকা। এটি ভারতের বিপক্ষে যৌথভাবে সর্বোচ্চ সফল রান তাড়া—এর আগে ২০১৯ সালে মোহালিতে এমন কীর্তি গড়েছিল অস্ট্রেলিয়া।
রান তাড়ায় নেতৃত্ব দেন আইডেন মার্করাম। ওপেন করতে নেমে দীর্ঘ ২৫ ইনিংস পর ওয়ানডেতে শতক তুলে নেন তিনি, করেন ১১০ রান। তাঁকে যথার্থ সঙ্গ দেন ম্যাথিউ ব্রিটস্কে (৬৮) ও ডিওয়াল্ড ব্রেভিস (৫৪)। মাঝপথে কিছু ধাক্কা এলেও শেষ মুহূর্তে ধৈর্য ধরে ম্যাচ বের করে নেন কেশব মহারাজ ও বোশ।
ভারতের জন্য শুরুটা অবশ্য আশাব্যঞ্জক ছিল। আরশদীপ সিং প্রথম ওভারেই মার্করামের বিপক্ষে রিভিউ নষ্ট করলেও প্রাথমিক চাপ তৈরি করেছিলেন। তবে ডিউ নামার সঙ্গে সঙ্গে বল গ্রিপ করাতে ভুগছিল ভারতীয় বোলাররা। সীমারেখার বাইরে একের পর এক শট যেতে থাকে, আর চাপ ধীরে ধীরে সরে যায় সফরকারীদের দিকে।
এর আগে ব্যাট হাতে ভারতের ইনিংস ছিল দেখার মতো। যশস্বী জয়সোয়াল ও রোহিত শর্মা আগ্রাসী শুরু দিলেও রোহিত দ্রুত ফেরেন। এরপর কোহলি ও গায়কোয়াড় ইনিংস গড়েন ধৈর্য আর হিসেবি আক্রমণের মিশেলে। গায়কোয়াড় শেষ দিকে গিয়ার বদলে দ্রুত নব্বইয়ের ঘরে পৌঁছে যান, কোহলি চিরচেনা নিয়ন্ত্রণে ধরে রাখেন রানের গতি। তাঁদের বিদায়ের পর রাহুল ঝড় তুললেও সেটি ম্যাচ জেতানোর জন্য যথেষ্ট হলো না।
এই হারের ফলে তিন ম্যাচের সিরিজ এখন ১–১ সমতায়। একদিকে ভারতের ব্যাটিং শক্তির প্রদর্শন, অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার অবিশ্বাস্য রান তাড়া—সব মিলিয়ে সিরিজের শেষ ম্যাচকে ঘিরে উত্তেজনা পৌঁছে গেল চূড়ান্ত বিন্দুতে। ক্রিকেট প্রেমীদের জন্য অপেক্ষা এখন আরেকটি উচ্চমার্গের লড়াইয়ের।


| ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫ 


