চলমান শ্রীলঙ্কা টেস্ট সিরিজে দুর্দান্ত খেলেছেন বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে চলতি শ্রীলঙ্কা সিরিজ শেষেই নেতৃত্ব ছাড়তে পারেন—এমন ইঙ্গিত মিলেছে বিসিবির ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র থেকে। তরুণ এই ব্যাটার নিজের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে নাকি অনেকটাই দৃঢ়, এবং খুব শিগগির তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বোর্ডকে তা জানাবেন বলেও জানা গেছে এমনটাই দাবি ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের।
শান্তর কাছের একজন বিশ্বস্ত ব্যক্তি ক্রিকবাজকে জানিয়েছেন, ‘আমি যতদূর জানি, লঙ্কা সিরিজের পর শান্ত আর টেস্ট দলের নেতৃত্বে থাকছেন না। ওর সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্কের ভিত্তিতে বলতে পারি, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় সে খুব একটা খুশি নয়।’
তথ্যসূত্র আরও জানায়, বিসিবির আচরণে শান্ত এতটাই হতাশ যে, অনেকটা অভিমান থেকেই তিনি নেতৃত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
গত এক বছরে তিন ফরম্যাটেই নেতৃত্বের দায়িত্ব পালন করা শান্ত প্রথমে স্বেচ্ছায় টি-টোয়েন্টির দায়িত্ব ছেড়ে দেন ব্যাটিংয়ে মনোযোগ দিতে। তবে ওডিআই ও টেস্টে দায়িত্ব রাখতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিসিবি একটি জরুরি জুম মিটিং ডেকে ১২ জুন মেহেদী হাসান মিরাজকে এক বছরের জন্য ওয়ানডে অধিনায়ক ঘোষণা করে। বিস্ময়করভাবে, শান্তকে এ বিষয়ে জানানো হয় তখনই যখন তিনি কোচ ফিল সিমন্সের সঙ্গে ওডিআই স্কোয়াড গঠন নিয়ে আলোচনায় বসতে যাচ্ছিলেন। খবরটি জানিয়ে দেন ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিম।
ফলে শান্ত সেই বৈঠকে না বসেই চলে যান—যা ছিল অপমানজনক এক পরিস্থিতি।
তবে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমে দেওয়া এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, ‘শান্ত নেতৃত্ব হারায়নি; বরং বোর্ডের সম্মিলিত সিদ্ধান্তে তিন ফরম্যাটে ভিন্ন অধিনায়ক রাখার নীতি নেওয়া হয়েছে। শান্ত এটি কৃতজ্ঞচিত্তে গ্রহণ করেছে। হয়তো কিছু ভুল তথ্য বা গুজব পরিস্থিতিকে ভুলভাবে উপস্থাপন করছে।’
তবে বোর্ডের এমন 'নীতি' বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। অতীতে নেতৃত্ব পরিবর্তনের আগে বিষয়টি বোর্ড সভার এজেন্ডায় আসত। কিন্তু শান্তর ক্ষেত্রে তা হয়নি। ফলে পুরো বিষয়টিই হয়েছে অত্যন্ত গোপনে এবং দ্রুততার সঙ্গে—যা একজন জাতীয় দলের অধিনায়কের প্রতি শোভন নয় বলেই অনেকের মত।
এই প্রেক্ষাপটে, ধারণা করা হচ্ছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলমান টেস্ট সিরিজের শেষেই শান্ত টেস্ট নেতৃত্ব থেকেও সরে দাঁড়াতে পারেন। তিনি ঠিক কখন এবং কীভাবে সিদ্ধান্তটি ঘোষণা করবেন, তা নির্ভর করছে বোর্ডের সঙ্গে তার চূড়ান্ত আলোচনার ওপর।
যদিও প্রকাশ্যে তিনি এখনো কিছু বলেননি, তবে নেপথ্যের নানা সূত্র বলছে, নাজমুল হোসেন শান্ত খুব শিগগির বাংলাদেশ ক্রিকেটে আরেকটি নেতৃত্ব পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে দিতে পারেন।
মন্তব্য করুন