স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ : ০৬ আগস্ট ২০২৫, ০১:৫৬ পিএম
আপডেট : ০৬ আগস্ট ২০২৫, ০২:১৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

অভাবই সিরাজকে সাহস শিখিয়েছে

মোহাম্মদ সিরাজ। ছবি : সংগৃহীত
মোহাম্মদ সিরাজ। ছবি : সংগৃহীত

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওভালে ভারতের ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ে শেষ দৃশ্যটি আজও চোখে লেগে থাকার মতো—মোহাম্মদ সিরাজের দুর্দান্ত ইনসুইং ইয়র্কারে গাস অ্যাটকিনসনের স্টাম্প উপড়ে গেল, ভারত উল্লাসে ভাসল। সেই ডেলিভারিটি শুধু ম্যাচের ফিনিশার নয়, সিরাজের লড়াকু মানসিকতার প্রতীকও।

এই পাঁচ ম্যাচের সিরিজে শিকার সিরাজ করেছেন ২৩টি উইকেট। শেষ টেস্টে ৮৫ ওভারের ইংল্যান্ড ইনিংসে একা ৩০.১ ওভার বল করেছেন তিনি, আর পুরো সিরিজে মোট বল করেছেন ১৮৫.২ ওভার। সবশেষ বল পর্যন্ত তার পিঠ সোজা, চোখে আগুন। ভারতীয় দলে জাসপ্রিত বুমরাহর অনুপস্থিতি ছিল বড় এক চ্যালেঞ্জ, কিন্তু সেই শূন্যতা যেন দায়িত্ব হয়ে এলো সিরাজের কাঁধে—আর তিনি বুক চিতিয়ে তা গ্রহণ করেছেন।

তবে আজকের সিরাজ শুধুই প্রতিভার ফসল নয়—এটি একটি সংগ্রামের গল্প, এক নিষ্ঠুর বাস্তবতা পেরিয়ে উঠে আসার অনুপ্রেরণা। হায়দরাবাদের চারমিনার ক্রিকেট ক্লাবের কোচ মোহাম্মদ মাহবুব আহমেদ জানালেন, ‘ও এখন আর কিছুতেই ভেঙে পড়ে না। ক্যাচ মিস হোক বা ব্যাটারের এজ না পাওয়া—সব কিছু হাসিমুখে সামাল দেয়। ওর কঠিন শৈশবই ওকে এতটা মজবুত করে দিয়েছে।’

সিরাজের বাবা, প্রয়াত মোহাম্মদ গাউস ছিলেন অটোচালক। সামান্য আয়ের মধ্য দিয়েই ছেলের স্বপ্নে দিয়েছেন অটুট সমর্থন। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে উঠে আসা, ‘ইন্ডিয়া এ’ দলে নিয়মিত হওয়া, আর ২০২০ সালের ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেক—এ যেন এক সত্যিকারের পরিশ্রমের মহাকাব্য।

কোচ আহমেদ মনে করেন, সিরাজের বড় গুণ হলো, ‘সঠিক সময়ে উইকেট তুলে নেওয়া’—যেমনটা দেখা গেছে ওভাল টেস্টে বেন ডাকেটকে শেষ মুহূর্তে ইয়র্কার দিয়ে ফেরানোর সময়। সিরাজের বলে যে এক্স-ফ্যাক্টর আছে, সেটিই তাকে ভারতীয় বোলিং আক্রমণে নির্ভরতার প্রতীক বানিয়ে তুলেছে।

সিরিজজুড়েই তাকে ব্যর্থতা ও ভাগ্যের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে। কখনো বল ব্যাটারদের এজ ছুঁয়ে না গেলেও হাল ছাড়েননি। হ্যারি ব্রুকের সহজ ক্যাচ ফেলেও নিজেকে গুটিয়ে নেননি। মাঠে ছিলেন পুরোপুরি নিবেদিতপ্রাণ, যে কারণে আজ তার হাতেই উঠেছে ‘প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ’ খেতাব।

এই সিরাজ শুধুই ক্রিকেটার নন—একটি গল্প, এক অনুপ্রেরণা। বুমরাহের অভাব যেন উপলক্ষ হয়ে গেল একজন মিয়ান ভাইয়ের উঠে আসার গল্পে। ভারতের ড্রেসিংরুমে এমন একজন বোলার থাকা মানেই ভরসার আরেক নাম—নির্ভীক, নাছোড়বান্দা, আর দলকে জেতাতে প্রস্তুত সবসময়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘রাজনীতি না ছাড়ায়’ কৃষক দল নেতার হাত-পা ভেঙে দিল দুর্বৃত্তরা

শাপলা প্রতীক নিয়ে সিইসির বক্তব্যের জবাবে ‘রহস্যময়’ পোস্ট হাসনাতের

ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা বিএনপির প্রতিশোধ : আমান উল্লাহ

গাজায় চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি ইসরায়েলের সেনাকে

আওয়ামী দোসরদের সমূলে উৎখাত করতে হবে : লায়ন ফারুক

টি-স্পোর্টস থেকে পাওনা নিচ্ছে না বিসিবি

খুলনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলাকালে কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ

পিবিপ্রবিতে জনবল নিয়োগে অনিয়ম তদন্তে কমিটি গঠন

বেগম জিয়া মানুষের অধিকার আদায়ে কারো সঙ্গে আপস করেননি : মাহমুদ

এবার নেতানিয়াহুকে নিষেধাজ্ঞা দিল স্লোভেনিয়া

১০

৪৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পাকিস্তান

১১

হাসিনার বিচারের আগে নির্বাচন হলে জনগণ মানবে না : সারজিস

১২

‘নিখোঁজ’ মামুনুর রশিদকে ফেরত চান জামায়াত আমির

১৩

দুবাইয়ে টাইগারদের দারুণ শুরু

১৪

‘নিখোঁজ’ জুলাই যোদ্ধা মামুনুর রশীদের পরিবারের পাশে বিএনপি

১৫

নবীন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাল ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি 

১৬

ময়মনসিংহের ৬০ মন্দিরে বিএনপির উৎসব প্রণোদনা

১৭

মাহবুবুল খালিদের কথা ও সুরে ‘মাইলস্টোন’স ট্র্যাজেডি’

১৮

দুর্গাপূজার ছুটি কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কত দিন

১৯

পদ্মা ও মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনের অফ-ডে বাতিল

২০
X