

টি–টোয়েন্টি অধিনায়কত্বে শুভমান গিলকে ঘিরে বিসিসিআইয়ের সাজানো পরিকল্পনা আপাতত থমকে গেল। ফর্মের ঘাটতি ও সাম্প্রতিক নির্বাচনী সিদ্ধান্তের পর ভারতের নির্বাচকরা আবারও পরিচিত সমাধানের দিকেই ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন—হার্দিক পান্ডিয়া।
শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিসিসিআই সচিব দেবজিত সাইকিয়া নিশ্চিত করেন, টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা না পাওয়া গিলের স্বল্প ফরম্যাটে অগ্রযাত্রা আপাতত থেমে গেছে। এই সিদ্ধান্ত কার্যত স্বীকার করে নিল যে, অজিত আগরকর–গৌতম গম্ভীর যুগে ‘পারফরম্যান্সই শেষ কথা’—নাম বা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নয়।
গিলকে ঘিরে আশা তৈরি হয়েছিল ইংল্যান্ড সফরের পর। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনের অবসরের পর রূপান্তরের সময় দলকে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি ব্যাটিং রেকর্ড গড়েন। এরপর এশিয়া কাপে টি–টোয়েন্টি দলে ফেরা, সহ-অধিনায়কত্ব এবং এক মাসের মধ্যে ওয়ানডে অধিনায়কত্ব—সব মিলিয়ে দীর্ঘমেয়াদি নেতৃত্বের ইঙ্গিত স্পষ্ট ছিল।
কিন্তু সুযোগের সঙ্গে আসে প্রত্যাশা। টি–টোয়েন্টিতে প্রত্যাবর্তনের পর ১৫ ইনিংসে গিলের রান মাত্র ২৯১, কোনো অর্ধশতক নেই। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাঠে সিরিজে স্কোর ৪, ০ ও ২৮—এরপরই নির্বাচকদের ধৈর্য ফুরোয়। লখনউয়ে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার পর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয় বলে জানা গেছে।
এই প্রেক্ষাপটে, সূর্যকুমার যাদবের পরবর্তী যুগের নেতৃত্ব প্রশ্নে আবার অচেনা নয় এমন নাম সামনে এসেছে। ৩৫ পেরোনো সূর্যকুমারের জন্য ২০২৬ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ আইসিসি আসর হতে পারে—এ বাস্তবতায় বিসিসিআইকে দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে। একসময় অক্ষর প্যাটেলকে সহ-অধিনায়ক করা হলেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা সীমিত। সঞ্জু স্যামসন ও জসপ্রিত বুমরাহ—দু’জনেরই নিজস্ব সীমাবদ্ধতা আছে, বিশেষ করে বুমরাহর ক্ষেত্রে কাজের চাপ বড় বিবেচ্য।
ফলে, আবার আলোচনায় হার্দিক পান্ডিয়া। রোহিতের অধীনে নিয়মিত স্ট্যান্ড-ইন অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি, নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনটি ওয়ানডে ও ১৬টি টি–টোয়েন্টিতে। আইপিএলে গুজরাট টাইটান্সকে শিরোপা এনে দেওয়া এবং বর্তমানে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের নেতৃত্ব—সব মিলিয়ে অভিজ্ঞতার পাল্লা তাঁর দিকেই ভারী।
একসময় ফিটনেস ও ওয়ার্কলোডের কারণে হার্দিকের নাম পিছিয়ে গেলেও পরিস্থিতি বদলেছে। ফিটনেস উন্নত, পারফরম্যান্স স্থিতিশীল, ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশগ্রহণে বিসিসিআইয়ের নির্দেশনাও মানছেন তিনি। সাদা বলের ক্রিকেটে মনোযোগী হার্দিক পুরো পরবর্তী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চক্রে উপলভ্য থাকবেন—এটাই এখন নির্বাচকদের বড় ভরসা।
শুভমান গিলের পরীক্ষায় ব্যর্থতার পর তাই বাস্তবতা একটাই—ভারতের টি–টোয়েন্টি নেতৃত্বে ফেরার পথে হার্দিক পান্ডিয়াই এখন সবচেয়ে বাস্তবসম্মত সমাধান।
মন্তব্য করুন