ওভাল টেস্টে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে ভারতকে অবিশ্বাস্য এক জয় এনে দিয়েছিলেন পেসার মোহাম্মদ সিরাজ। প্রায় এক মাস কেটে গেলেও এখনো ক্রিকেট সমর্থকদের মনে গেঁথে আছে সিরাজের সেই পারফরম্যান্স। তার দুর্দান্ত বোলিংয়ে সেই ম্যাচে মাত্র ছয় রানের জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল সফরকারী ভারত। সিরাজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এবার অজানা তথ্য প্রকাশ করেছেন ভারতের সাবেক বোলিং কোচ ভারত অরুণ।
গত পাঁচ বছরে টেস্ট ক্রিকেটে ভারতের বোলিং আক্রমণে অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছেন সিরাজ। তবে তার এই সাফল্যের পথটা মোটেও সহজ ছিল না। অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে, কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই টেস্ট ক্যারিয়ারে পা রাখেন তিনি।
২০২০-২১ সালের বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট অভিষেক হয় মোহাম্মদ সিরাজের। সেই সিরিজ শুরুর আগেই ব্যক্তিগত জীবনে বড় এক দুঃসংবাদ পান তিনি। হায়দরাবাদে পিতার মৃত্যু হলেও কোভিড-১৯ মহামারির কারণে জৈব সুরক্ষা বলয়ের কড়াকড়ি বিধিনিষেধের কারণে পিতাকে দেখতে ভারতে যেতে পারেননি সিরাজ।
সেই সময় দলের বোলিং কোচ ছিলেন ভারত অরুণ। সম্প্রতি তিনি জানান, সিরাজ তখন একা একটি কক্ষে আটকে ছিলেন। এমনকি কঠোর স্বাস্থ্যবিধির কারণে কেউ তার সঙ্গে দেখাও করতে পারছিল না। কেবলমাত্র দলের ম্যানেজারই প্রয়োজনীয় অনুমতি সাপেক্ষে মাঝে মাঝে সিরাজের রুমে যেতে পারতেন।
ব্যক্তিগত জীবনের এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও সিরাজ নিজের মনোযোগ ধরে রেখেছিলেন খেলায়, আর সেখান থেকেই শুরু হয় তার টেস্ট যাত্রার এক অনন্য অধ্যায়।
ভারতের গণমাধ্যমে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ সিরাজের কঠিন সময়ের স্মৃতিচারণা করেছেন দেশটির সাবেক বোলিং কোচ ভারত অরুণ। কোভিড-১৯ মহামারির সময় সিরাজের বাবার মৃত্যু এবং কঠোর জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে তার নিঃসঙ্গ অবস্থার কথা বলতে গিয়ে অরুণ বলেন, ‘ওটা ছিল একটা পাঁচ তারকা জেল। ম্যানেজার ছাড়া আর কেউ সিরাজের কক্ষে যেতে পারত না। তিনি বিশেষ অনুমতি নিয়ে যেতেন, কিন্তু আমরা কেউই ওর সঙ্গে দেখা করতে পারিনি। খুব কঠিন সময় ছিল সেটা। আমরা ফোনে অনেক কথা বলেছি, হোয়াটসঅ্যাপ ভিডিও কলে কথা হতো।’
ভারতের সাবেক বোলিং কোচ মনে করেন, ভার্চুয়াল যোগাযোগ কখনোই একজন শোকাহত মানুষের জন্য যথেষ্ট নয়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ মানুষের স্পর্শ, মানবিক যোগাযোগের যে প্রভাব—সেটার কোনো বিকল্প নেই। সেই সময়ে সিরাজের পাশে কেউ থাকলে, কাঁধে মাথা রেখে একটু কাঁদতে পারলে সেটা ওর জন্য অনেক বড় সান্ত্বনা হতো।’
মন্তব্য করুন