একটি যুগের অবসান ঘটল পাকিস্তান ক্রিকেটে। দেশটির প্রথম টেস্ট দলের শেষ জীবিত সদস্য, কিংবদন্তি ক্রিকেটার ওয়াজির মোহাম্মদ সোমবার ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।
ওয়াজির মোহাম্মদ—যে নামটি পাকিস্তান ক্রিকেটের শুরুর দিনগুলোর প্রতীক। ১৯৫২ সালে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের প্রথম টেস্ট সিরিজে ছিলেন এই মার্জিত ডানহাতি ব্যাটার। পরবর্তীতে ১৯৫২ থেকে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত ২০টি টেস্ট খেলেছেন জাতীয় দলের হয়ে।
খ্যাতনামা মোহাম্মদ পরিবারে তিন ভাই— হানিফ, মুশতাক ও সাদিকের মধ্যে তিনি ছিলেন সবচেয়ে বড়। পরিবারটির এই প্রজন্মই পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসে এক স্বর্ণালি অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত।
ওয়াজির ছিলেন তার ভাইদের মতোই এক রুচিশীল ও ধৈর্যশীল ব্যাটার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৯৫৭-৫৮ মৌসুমে পোর্ট অব স্পেনে তার ১৮৯ রানের ম্যারাথন ইনিংস আজও পাকিস্তানের প্রারম্ভিক টেস্ট সাফল্যের অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত হয়। সেই ইনিংসই গড়ে দিয়েছিল দেশের অন্যতম ঐতিহাসিক জয়।
এছাড়া ১৯৫৪ সালে দ্য ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের সময়ও তিনিই ছিলেন দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক— ৪২ রান করেছিলেন সেই ম্যাচে।
খেলার পর জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায়ে ওয়াজির মোহাম্মদ কাজ করেছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) উপদেষ্টা হিসেবে। পরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন যুক্তরাজ্যে, সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নকভি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ওয়াজির মোহাম্মদের অবদান পাকিস্তান ক্রিকেটের ভিত্তি গড়ে দিয়েছে। তিনি শুধু একজন ক্রিকেটার ছিলেন না, ছিলেন আমাদের ক্রিকেটীয় ঐতিহ্যের জীবন্ত প্রতীক।’
এক প্রজন্মের ক্রিকেটাররা শিখেছিলেন তার মতো ব্যাট করতে, ধৈর্য ধরতে, দেশের হয়ে নিজের সেরাটা দিতে। আজ, তার চলে যাওয়া মানে পাকিস্তান ক্রিকেটের ইতিহাসের একটি অধ্যায়ের অবসান।
মন্তব্য করুন