

কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সের সবুজাভ উইকেটে ব্যাটারদের টিকে থাকাই যখন কঠিন, ঠিক তখনই ম্যাচের লাগাম একাই ঘুরিয়ে দিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। যে দিন ভারতের জন্য শুরু হয়েছিল দুশ্চিন্তা দিয়ে—সেই দিনই শেষ হলো জাদেজা–কুলদীপদের স্পিন চক্রে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে। দুই দিনের মধ্যেই ম্যাচ এমন জায়গায় দাঁড়িয়েছে, যেখানে লিড নিয়েও অস্বস্তিতে প্রোটিয়ারা।
দ্বিতীয় দিনের সকালে ৩৮/১ থেকে ব্যাটিং শুরু করে ভারত। পিচের অনিয়মিত বাউন্সে ওয়াশিংটন সুন্দর ও কেএল রাহুল সতর্কভাবে ইনিংস গড়েন। সুন্দর যখন মহারাজকে ছক্কায় উড়ালেন, মনে হচ্ছিল ভারত ধীরে ধীরে ম্যাচে ফিরছে।
কিন্তু বিরতির ঠিক পরেই সাইমন হারমারের নিখুঁত লেংথ ভেঙে দিল ছন্দ। সুন্দর ফিরে গেলে একই ওভারে গিলও ঘাড়ে ব্যথা পেয়ে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন।
রাহুল–পান্ত দুজনেই ছক্কা হাঁকিয়ে প্রতিরোধের আভাস দিলেও মহারাজ–হারমারের স্পিন জুটিতে ভারত হোঁচট খায় বারবার। শেষ পর্যন্ত গিল আর নামতে না পারায় ১৮৯ রানে থেমে যায় ভারত, মাত্র ৩০ রানের লিড নিয়েই শেষ হয় ইনিংস।
লিড মাত্র ৩০, অথচ ভারতের স্পিনাররা সেই ব্যবধানই পরিণত করলেন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে।
টি–ব্রেকের ঠিক আগে কুলদীপ যাদবের জাদুকরী বল ফাঁকি দিতে পারেননি রায়ান রিকেলটন। আর শেষ সেশনটা ছিল পুরোপুরি জাদেজার নাট্যমঞ্চ। ভারতের এই অলরাউন্ডার প্রথমে আউট করলেন আইডেন মার্করামকে। এরপর একই ওভারে ফিরিয়ে দেন উইয়ান মুল্ডার ও টনি ডি জর্জিকে। দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর তখন ৪০/৪ — পুরোপুরি দিশেহারা।
বাভুমা কিছু চার মেরে চেষ্টা করেছিলেন লড়াই টিকিয়ে রাখতে। কিন্তু জাদেজার ‘রিপার’ বলে ট্রিস্টান স্টাবসের স্টাম্প উড়ে যেতেই গতি থেমে যায় তাদের প্রতিরোধে।
এরপর অক্ষরের ঘূর্ণিতে কাইল ভেরেইনের বিপজ্জনক স্লগের মাশুল দিতে হয় আফ্রিকাকে। মারকো ইয়ানসেন ছক্কা মেরে লিড ৫০ পেরোলেও শেষ পর্যন্ত কুলদীপই থামান তাকে।
দ্বিতীয় দিনের শেষে স্কোরবোর্ড— দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৫৯ & ৯৩/৭ (বাভুমা ২৯, জাদেজা ৪/২৯, কুলদীপ ২/১২)* ভারত: ১৮৯ লিড: ৬৩ রান
এই পিচে ৬৩ রানের লিড বড় কিছু নয়। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে একাই লড়াই করে যাচ্ছেন বাভুমা। তাকে সঙ্গ দিতে পারবে কি নিচের সারির ব্যাটাররা?
মন্তব্য করুন