স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৫২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ভারতের অধিনায়ক হলে টিকতেন না স্টোকস!

বেন স্টোকস ও বিরাট কোহলি। ছবি : সংগৃহীত
বেন স্টোকস ও বিরাট কোহলি। ছবি : সংগৃহীত

বেন স্টোকস ইংল্যান্ডের টেস্ট ক্রিকেটের অন্যতম মুখ। ব্যাটে–বলে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য, চাপের মুহূর্তে নেতৃত্ব—সব মিলিয়ে আধুনিক ক্রিকেটে তিনি নিঃসন্দেহে বিশেষ এক নাম। ২০২২ সালের এপ্রিলে জো রুটের জায়গায় তাকে টেস্ট অধিনায়ক করার পেছনেও ছিল সেই বিশ্বাস। একই সময়ে কোচ হিসেবে আসেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। দুজনের হাত ধরেই শুরু হয় আক্রমণাত্মক ‘বাজবল’ দর্শন।

শুরুর দিকে এই দর্শন ইংল্যান্ড ক্রিকেটে নতুন উত্তেজনা এনে দেয়। দ্রুত রান, সাহসী ঘোষণা, ঝুঁকি নেওয়ার মানসিকতা—সব মিলিয়ে ম্যাচগুলো হয়ে ওঠে উপভোগ্য। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ফলাফলের ধারাবাহিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে এবং বিদেশের কঠিন কন্ডিশনে ইংল্যান্ড বারবার ধাক্কা খেয়েছে। সাহস আর বেপরোয়ার মাঝের সূক্ষ্ম রেখাটা তারা অনেক সময়ই ধরে রাখতে পারেনি।

গত বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে ইংল্যান্ড ২২ ম্যাচে ১১টি জিতলেও হেরেছে ১০টি—যা ওই চক্রে সর্বোচ্চ। সেই হারগুলোই শেষ পর্যন্ত তাদের ফাইনালের দৌড় থেকে ছিটকে দেয়। চলতি চক্রে অবস্থাটা আরও কঠিন। এখন পর্যন্ত ৯ টেস্টে ৫টি হার, মাত্র ৩টি জয়। এমনকি ঘরের মাঠে রূপান্তরপর্বে থাকা ভারতের বিপক্ষে সিরিজও শেষ হয়েছে ২–২ ড্রয়ে—যা ইংল্যান্ডের জন্য বড় সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার মতোই।

তবু ইংল্যান্ড ক্রিকেটে স্টোকসের নেতৃত্ব নিয়ে ধৈর্যের অভাব দেখা যাচ্ছে না। এখানেই উঠে আসছে তুলনার প্রসঙ্গ—ভারত হলে কি এমন ধৈর্য দেখানো হতো?

এই প্রশ্নের উত্তর অনেকটাই লুকিয়ে আছে বিরাট কোহলির অভিজ্ঞতায়। পরিসংখ্যানের দিক থেকে কোহলি ছিলেন সফল সাদা বলের অধিনায়ক—ওডিআইতে প্রায় ৬৮ শতাংশ, টি–টোয়েন্টিতে ৬০ শতাংশ জয়। তবু আইসিসি ট্রফি না জেতার কারণে তাকে ‘ব্যর্থ সাদা বল অধিনায়ক’ তকমা শুনতে হয়েছে। ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল, ২০১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল কিংবা বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল—সবই যথেষ্ট কাছাকাছি গিয়েও শেষ হাসি আসেনি। শেষ পর্যন্ত টি–টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর ওডিআই অধিনায়কত্বও হারান তিনি।

স্টোকস ও কোহলির মধ্যে পার্থক্যটা তাই সামর্থ্যের নয়, প্রেক্ষাপটের। ভারতের ক্রিকেটে প্রত্যাশার চাপ আকাশচুম্বী, যেখানে ফল না এলে সহনশীলতা দ্রুত ফুরিয়ে যায়। অন্যদিকে ইংল্যান্ডে দর্শন ও প্রক্রিয়াকে সময় দেওয়ার মানসিকতা তুলনামূলক বেশি। একই ধরনের অসম্পূর্ণ সাফল্য—কিন্তু বিচার একেবারেই আলাদা।

এই তুলনা আবারও মনে করিয়ে দেয়, ক্রিকেটে শুধু ফল নয়, পরিবেশ আর প্রত্যাশাও একজন অধিনায়কের উত্তরাধিকার নির্ধারণ করে দেয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নির্বাচন না হওয়ার আর কোনো সংশয় নেই : মো. আসাদুজ্জামান

সড়কে প্রাণ গেল যুবদল নেতার

টিকটকের সঙ্গে এক বছরের চুক্তি বাফুফের

দেশের ইতিহাসে স্বর্ণের দামে ফের রেকর্ড, বাড়ল কত?

ভারতের নো-হ্যান্ডশেক নীতিতে পাল্টা অবস্থান পাকিস্তানের

পবিত্র কোরআনের বাণী স্মরণ করে আল্লাহর নির্দেশনা প্রার্থনা এনসিপি নেত্রীর

রোনালদো-মেসি এক দলে? গুজব নাকি বাস্তবতা

এনসিপি-জামায়াত জোট : রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করলেন মাহফুজ আলম

হিরো আলম যোগ দিলেন আমজনতার দলে

সিরিয়ায় বিক্ষোভ ঘিরে সহিংস সংঘর্ষ, নিহত একাধিক

১০

রাউজানে চূড়ান্ত প্রার্থী গোলাম আকবর খোন্দকার

১১

ভারতের অধিনায়ক হলে টিকতেন না স্টোকস!

১২

হাসনাত আব্দুল্লাহকে চেনেন না বিএনপি প্রার্থী মঞ্জুরুল আহসান

১৩

দুই দিনে শেষ হওয়া অ্যাশেজ টেস্টে হতবাক এমসিজি কিউরেটর

১৪

জোটে যাওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিলেন নাহিদ

১৫

দুই আসনের মনোনয়পত্রে স্বাক্ষর করলেন তারেক রহমান

১৬

হেলমেট পরে এসে গুলি, এবার যুবদল নেতার মৃত্যু

১৭

চট্টগ্রাম-৬ আসনে বিএনপির চূড়ান্ত টিকিট পেলেন যিনি

১৮

বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধ, ভাইয়ের হাতে ভাই খুন

১৯

বরিশাল-ঢাকাসহ অভ্যন্তরীণ সব রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা

২০
X