দুইবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপ শিরোপাজয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে পারছে না। জিম্বাবুয়েতে অনুষ্ঠানরত বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের সুপার সিক্সে স্কটল্যান্ডের কাছে ৭ উইকেটে হেরে চূড়ান্তপর্বে যাওয়ার সুযোগ শেষ লারার উত্তরসূরিদের।
প্রথমপর্বে নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরে যাওয়ায় জিরো পয়েন্ট নিয়ে সুপার সিক্সে উঠেছিল নিকোলাস পুরান-শাই হোপের দল। জিম্বাবুয়ে-শ্রীলঙ্কার চেয়ে চার পয়েন্টে পিছিয়ে সুপার সিক্সে আসে বিশ্বকাপের প্রথম দুই আসরের চ্যাম্পিয়নরা। যে কারণে ভারত বিশ্বকাপের টিকিট পেতে সুপার সিক্সের তিন ম্যাচের সবকয়টিই জিততে হতো তাদের। পাশাপাশি অপেক্ষায় থাকতে হতো অন্য ম্যাচগুলোর ফল পক্ষে আসার। কিন্তু প্রথম ম্যাচেই স্কটিশদের কাছে হেরে এবারের বিশ্বকাপ খেলা হচ্ছে না ক্যারিবিয়ানদের। তবে তিন ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ভারতে যাওয়ার আশা বাঁচিয়ে রাখল স্কটল্যান্ড।
স্কটিশ ইতিহাস গড়ার শুরুটা করেন তাদের বোলাররা। ক্যারিবীয়দের ৪৩.৫ ওভারে ১৮১ রানে অলআউট করেন। ১৮২ রানের লক্ষ্য ৩৯ বল বাকি থাকতেই ছুঁয়ে ফেলে স্কটল্যান্ড।
স্কটিশদের জয়ের নায়ক অলরাউন্ডার ব্র্যান্ডন ম্যাকমুলান। মিডিয়াম পেসে প্রথমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের টপ অর্ডার গুঁড়িয়ে দেন। প্রথম স্পেলেই তার শিকার জনসন চার্লস, শামার ব্রুকস ও ব্রেন্ডন কিং। ৫.২ ওভারে ২৫ রান তুলতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম তিন ব্যাটসম্যান আউট। এর মধ্যে চার্লস ও ব্রুকস আউট হন শূন্য রানেই।
৫টি চারে ২২ বলে ২২ রান করা কিং ভালো কিছুর আভাস দিচ্ছিলেন। কিন্তু আউট হওয়ার পর টপ অর্ডারের আর কেউ বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। ইনিংসের সপ্তম ওভারেই ক্রিস সোলের বলে বোল্ড হন কাইল মেয়ার্স (৯ বলে ৫ রান)। পাওয়ার প্লে’র ১০ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ রান করেছে ৪৩। ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। সুফিয়ান শরিফ লম্বা হতে দেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক হোপের ইনিংস। ১৩তম ওভারে ১৩ রানে কট বিহাইন্ড হন হোপ। তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৫ উইকেটে ৬০। সেখান থেকে ক্যারিবীয় ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন নিকোলাস পুরান (২১), জেসন হোল্ডার (৪৫) ও রোমারিও শেপার্ড (৩৬)। তবে তা যথেষ্ট ছিল না। হোল্ডার ও শেপার্ডের ৯৬ বলে ৭৭ রানের জুটির সৌজন্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান দেড়শ ছাড়ায়। তবে এরপর জিততে হলে অবিশ্বাস্য বোলিং অথবা খুব বাজে ব্যাটিং হতে হতো। তা আর হয়নি।
১৮২ রানের লক্ষ্যে শুরুতেই ধাক্কা খায় স্কটিশরা। ইনিংসের প্রথম বলেই ক্যারিবীয় পেসার জ্যাসন হোল্ডারের শিকার ওপেনার ক্রিস্টোফার ম্যাকব্রিড। তবে আরেক ওপেনার ম্যাথু ক্রসকে নিয়ে শুরুর ধাক্কাটা সামলে নেন ম্যাচ জয়ের নায়ক ম্যাকমুলান। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১৭৫ বলে ১২৫ রান যোগ করেন দুজন। দ্রুত রানের তাড়া না থাকায় দুজনই সময় নিয়ে খেলেছেন, অপেক্ষা করেছেন ক্যারিবীয়দের বাজে বোলিংয়ের। আলজারি জোসেফের প্রথম স্পেল বাদ দিলে ক্যারিবীয় পেসারদের নিশানা ঠিক ছিল না। এলোমেলো বোলিংয়ের সে সুবিধাটা নিয়েছেন ম্যাকমুলান।
৮৫ বলে ৫০ পূর্ণ করে অপরাজিত থেকে ম্যাচ শেষ করে আসার চেষ্টায় ছিলেন তিনি। ৩০তম ওভারে শেফার্ডকে লং অন দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট না হলে হয়তো তা-ই হতো। আউট হওয়ার আগে ১০৬ বলে ৮টি চার ও ১টি ছক্কায় ৬৯ রান করেছেন ম্যাকমুলান। বাকি কাজটা করেছেন ক্রস। জর্জ মানসি ৩৩ বলে ১৮ রান করে আউট হলেও ১০৭ বলে ৭৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলের জয় নিশ্চিত করেন ক্রস।
মন্তব্য করুন