চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের স্বপ্ন নিয়ে প্যারিসে পা রেখেছিল আর্সেনাল। কিন্তু পার্ক দে প্রিন্সে নাটকীয় এক রাত শেষে মাইকেল আর্তেতার দলের সব আশা ডুবিয়েছে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইন (পিএসজি)। দোনারুম্মার দুর্দান্ত গোলকিপিং, রুইজ-হাকিমির জোড়া আঘাত আর সাকার জবাবও যথেষ্ট হয়নি। দ্বিতীয় লেগে ২-১ গোলের পরাজয়, দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ ব্যবধানে বিদায় নিল আর্সেনাল। আর পিএসজি এখন ফাইনালে মুখোমুখি হবে ইন্টার মিলানের।
প্রথম লেগে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দিয়েই আলো ছড়িয়েছিলেন পিএসজির ইতালিয়ান গোলরক্ষক দোনারুম্মা। দ্বিতীয় লেগেও তার অসাধারণ সব সেভ যেন আবারও বাধা হয়ে দাঁড়াল আর্সেনালের সামনে। ম্যাচের শুরুতেই গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলি এবং মার্টিন ওডেগার্ডের শট রুখে দিয়ে দোনারুম্মা বুঝিয়ে দেন, এই রাতেও তার হাত গলে বল ঢুকবে না সহজে।
আর যখন আর্সেনাল আক্রমণে ব্যস্ত, তখনই ২৭ মিনিটে পিএসজির ফ্রিকিকে থমাস পার্টের হেড ক্লিয়ারেন্স ধরে ২০ গজ দূর থেকে দুর্দান্ত শটে গোল করেন ফাবিয়ান রুইজ। বল হালকা ডিফ্লেকশন নিয়ে ডেভিড রায়াকে পরাস্ত করে জালে জড়ায়।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে নতুন মোড় আনে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত। মাইলস লুইস-স্কেলি হ্যান্ডবলের কারণে পেনাল্টি দিলে স্পটকিকে বল মারেন ভিটিনহা—কিন্তু তার শট ঠেকিয়ে দেন রায়া। তবে ভাগ্য ফেরেনি আর্সেনালের। ৭২ মিনিটে থমাস পার্টের ভুলে বল পেয়ে গোল করে বসেন আশরাফ হাকিমি। এরপর ৭৬ মিনিটে সাকার দারুণ এক অ্যাঙ্গেল ফিনিশে পিএসজির জাল কাঁপালেও, তারপরের সুযোগ মিস করে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় গনার্সরা।
প্যারিসে এসে দারুণ শুরু করেছিল আর্সেনাল। ডেক্লান রাইসের হেড গোলপোস্টের বাইরে চলে গেলেও একাধিক সুযোগ তৈরি করেছিল লন্ডনের ক্লাবটি। তবে গোলের মুখে কার্যকরী হতে না পারার খেসারত গুণতে হলো তাদের। স্ট্রাইকারের অভাবও প্রকটভাবে ধরা দিল এই ম্যাচে, যেখানে মিকেল মেরিনোকে খেলানো হলেও প্রত্যাশিত কিছুই এনে দিতে পারেননি তিনি।
এদিকে ২০২০ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে হেরে গিয়েছিল পিএসজি। এরপর নেইমার-মেসি-এমবাপ্পের 'ব্লিং ব্লিং' যুগ শেষ করে লুইস এনরিকের হাতে গড়া এই তরুণ দল যেন এখন আরও পরিপক্ক ও ক্ষুধার্ত। দোনারুম্মা, দেম্বেলে, কাভারাটসখেলিয়া, দুয়ে – সবাই মিলে তৈরি করেছে এক নতুন পিএসজি, যারা এবার হয়তো ইউরোপিয়ান ফুটবলের শীর্ষ শিরোপা জয়ের স্বপ্ন পূরণ করেই ফেলবে।
মিউনিখে ফাইনালে ইন্টার মিলানের মুখোমুখি হবে তারা। ইউরোপে এখন প্রশ্ন একটাই—এবার কি তাহলে পিএসজি অভিশাপ ভাঙতে পারবে?
মন্তব্য করুন