

বাংলাদেশ শুটিং স্পোর্টস ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক জি এম হায়দারের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জমছে! তার বিরুদ্ধে এবার যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে মামলা করলেন স্বর্ণজয়ী সাবেক শুটার শারমিন আক্তার রত্না।
জি এম হায়দারের বিরুদ্ধে শুটার তাসমিয়াতি এমা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে (এনএসসি) অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন। গুলশান থানায় সম্প্রতি যৌন নিপীড়ন ও নানা হয়রানির ঘটনা-পরবর্তী হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে মর্মে সাধারণ ডায়েরি করেছেন আরেক শুটার কামরুন নাহার কলি। এদিকে বর্তমান শুটিং নিয়ন্তাদের বিরুদ্ধে গুলি নিয়ে নয়ছয় করার অভিযোগ এনেছেন এক শুটার।
গতকাল গুলশান থানায় হাজির হয়ে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা করেছেন করেছেন সাবেক শুটার শারমিন আক্তার রত্না। যার নম্বর ৫৩, তারিখ ২৮ নভেম্বর। খেলোয়াড় থাকাকালে জি এম হায়দার দেশের শুটিং ইতিহাসের উজ্জ্বল এ শুটারকে নানাভাবে হয়রানি করেছেন বলে মামলার বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে। খেলা ছেড়ে কোচিংয়ে যুক্ত হওয়ার পরও এসএ গেমস ও কমনওয়েলথ শুটিংয়ে স্বর্ণজয়ী এ শুটারকে জি এম হায়দার নানাভাবে হেনস্তা করেছেন—এমনটাও এজাহারে উল্লেখ করা হয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর জাতীয় দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন শারমিন আক্তার রত্না। দায়িত্ব গ্রহণের পর নিপীড়কদের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে ১৬ জুলাই আত্মসম্মানের ভয়ে জাতীয় দলের দায়িত্ব ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন বলেও মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
খেলোয়াড়ি জীবন এবং কোচিংয়ের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর নানা ঘটনায় আক্রান্ত হলেও এতদিন পর অভিযোগ করা কেন? প্রশ্নের জবাবে শারমিন আক্তার রত্না কালবেলাকে বলেছেন, ‘আমাদের ক্রীড়াঙ্গনের চিত্রটা আপনাদের সবার জানা থাকার কথা। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা প্রভাবশালী। বিচ্ছিন্নভাবে অভিযোগ করলে ক্রীড়াঙ্গন থেকেই বিতারিত হওয়ার ভয় ছিল। এ কারণে এতদিন বুকে পাথর চেপে মুখ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছি।’ ২০১০ সালের এসএ গেমস ও কমনওয়েলথ শুটিং চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণজয়ী এ শুটার আরও বলেন, ‘এখন যৌন নিপীড়নের অভিযোগে অনেকেই সরব হয়েছেন। ক্রীড়া প্রশাসনও বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। আমি চাই আমার মতো যারা নানাভাবে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, তারাও এগিয়ে আসুন। আশা করছি, নিপীড়কদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, যাতে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্ন নিয়ে আসা নারী ক্রীড়াবিদদের নিয়ে ভবিষ্যতে কেউ আজেবাজে ভাবনাও মাথায় আনতে না পারেন।’
নারী শুটারদের হেনস্তার ঘটনায় এতদিন ক্রীড়াঙ্গনসংশ্লিষ্টরাই শুধু সরব ছিলেন। এবার তাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থা। এরই মধ্যে অভিযোগ করা শুটারদের পাশে দাঁড়িয়েছে হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন। বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন এবং প্রধান নির্বাহী এলিনা খান ভুক্তভোগিদের সব ধরনের সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন অভিযুক্তদের শেকড় ক্রীড়াঙ্গন থেকে সমূলে উৎপাটনের জন্য আদাজল খেয়ে নেমেছেন সাবেক-বর্তমান ক্রীড়াবিদরা। তাদের আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ক্রীড়াঙ্গন সংস্কারের এটাই উপযুক্ত সময়।
মন্তব্য করুন