ভিসা ক্যানসেল করে শুধু ২০২৩ সালেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) আয় করেছে ১৩ কোটি ইউরো। যার অধিকাংশই এসেছে আফ্রিকার যুদ্ধ ও সংঘাতকবলিত দেশগুলো থেকে।
একে ‘উল্টো রেমিট্যান্স’ আখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করছে ইইউ। তবে এভাবে গরীব দেশগুলোর টাকা পকেটে নেওয়ায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে ইউরোপের ২৭টি দেশের জোট।
সংবাদমাধ্যম ইইউ অবজারভার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ইইউভুক্ত দেশগুলোয় ভ্রমণে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের ক্যানসেল হওয়া ভিসা আবেদনের ফি থেকে ২০২৩ সালেই ১৩ কোটি ইউরো আয় হয়েছে। ইইউভুক্ত দেশগুলোর এই আয় আগের বছরের তুলনায় অনেক বেশি। আগামী বছর এটি আরও বাড়বে বলে জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালে প্রত্যাখাত শেনজেন ভিসা ফি থেকে পাওয়া এই আয়ের ৯০ শতাংশ এসেছে আফ্রিকা এবং এশিয়ার দেশগুলো থেকে। ২০২২ সালে একই খাত থেকে আয় ছিল ১০ কোটি ৫০ লাখ ইউরো।
২০২৪ সালে এই আয় আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, চলতি মাসের ১১ জুন থেকে ইইউ ভ্রমণে আসতে ইচ্ছুক প্রাপ্তবয়স্কদের ভিসা আবেদন ফি ৮০ ইউরো থেকে বাড়িয়ে ৯০ ইউরো করেছে ইউরোপীয় কমিশন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে প্রতিবেশী যুক্তরাজ্য প্রত্যাখ্যাত ভিসা ফি থেকে গত বছর সর্বমোট আয় করেছে চার কোটি চার লাখ পাউন্ড। তবে এটি শুধু ব্যবসায়িক বা ভ্রমণের উদ্দেশে আসতে চাওয়া মানুষদের দূতাবাসে জমা দেওয়া ফির হিসাব। এতে আবেদনকারীদের ফাইল গুছাতে এবং বিভিন্ন এজেন্সিকে দেওয়া খরচের হিসেব উল্লেখ করা হয়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপ এবং যুক্তরাজ্যে স্বল্পমেয়াদি ভিজিট বা ভ্রমণ ভিসা প্রত্যাখ্যানের হার নিম্ন ও মধ্যম-আয়ের দেশগুলোতে বেশি। আফ্রিকান দেশগুলো বিশেষ করে, ঘানা, সেনেগাল এবং নাইজেরিয়ায় প্রত্যাখ্যানের হার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ।
লাগো কালেকটিভের প্রতিষ্ঠাতা এবং ওডিআই থিঙ্কট্যাঙ্কের সিনিয়র ভিজিটিং ফেলো মার্তা ফরেস্টি ইইউ অবজারভারকে বলেন, ভিসা বৈষম্যের খুব স্পষ্ট পরিণতি রয়েছে এবং বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্রদের এটিতে মূল্য দিতে হয়।
মার্তা ফরেস্টি বলেন, আপনি প্রত্যাখ্যান হওয়া ভিসার খরচকে ‘উল্টো রেমিট্যান্স’ হিসাবে ভাবতে পারেন। যার অর্থ দরিদ্র দেশগুলো থেকে ধনী দেশগুলোতে রেমিট্যান্স প্রবাহিত হয়। আর্থিক সাহায্য বা অভিবাসন নিয়ে আলোচনা করার সময় আমরা কখনও এই খরচ সম্পর্কে শুনি না। এটি নিয়ে চিন্তাধারা পরিবর্তন করার সময় এসেছে।
মন্তব্য করুন