ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের মাঠের ভেতরে দীর্ঘদিন ধরে এক বাণিজ্যিক নার্সারি গড়ে উঠেছে। এদিকে ওই নার্সারিতে সন্ধ্যা নামলেই বসে মাদকসেবীদের আড্ডা। এতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীসহ স্বজনরা।
শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুর ২টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ভেতরে গড়ে ওঠা সুফলা নার্সারিতে বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। এই গাছ কিনতে সেখানে ভিড় জমাচ্ছে বিভিন্ন মানুষ।
হাসপাতালের কোলঘেঁষে বাণিজ্যিক নার্সারি গড়ে ওঠায় সন্ধ্যায় পরে এখানে জমে মাদকসেবীদের আড্ডা। যেখানে পাওয়া যায়, গাজার পুঁটলা ও ফেনসিডিলের খালি বোতলসহ মাদকের বিভিন্ন সরঞ্জাম।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনরা জানান, সন্ধ্যার পরে হাসপাতালের ভেতরের নার্সারিতে মাদকসেবীদের আড্ডা বসে। তাই চিকিৎসা নিতে আসা স্বজনরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেডিকেল গেটের এক ওষুধ ব্যবসায়ী বলেন, এই নার্সারির ১০ বছরের বেশি সময় ধরে এখানে আছে। সরকারি হাসপাতালের ভেতরে এভাবে বাণিজ্যিক নার্সারি থাকাতে এখানে মাদকের উৎপাত বেড়ে গেছে। যার ফলে রোগী, রোগীর স্বজনরা রাতের বেলায় নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেয় না।
এক ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি বলেন, আমরা হাসপাতালে এলে দেখতে পাই এই নার্সারিকে কেন্দ্র করে প্রায়ই মাদকসেবীদের আড্ডা ঘটে। সরকারি হাসপাতালের ভেতরে যত্রতত্র নেশাখোরদের আড্ডা মেনে নেওয়া যায় না।
হাসপাতালের ভেতরে গড়ে ওঠা সুফলা নার্সারির মালিক রফিকুল ইসলাম কালবেলাকে জানান, এই নার্সারির জন্য তিনি সে সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হতে অনুমতি নিয়ে নার্সারির করেছেন। নার্সারির জন্য কিছু টাকা তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে মসজিদে দান করেন।
এ বিষয়ে হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামীমুজ্জামান বলেন, আমি এখানে যোগদান করার আগে থেকেই এই নার্সারি গড়ে উঠেছে। আমার জানামতে, উনি মসজিদের জন্য কিছু টাকা ডোনেশন করেন। মাদকাসক্ত লোকদের এই নার্সারিতে আড্ডাখানায় পরিণত হলে নার্সারি উচ্ছেদের বিষয়ে আমি ব্যবস্থা নেব।
ঠাকুরগাঁও জেলা সিভিল সার্জন ডা. আনিছুর রহমান কালবেলাকে বলেন, হাসপাতালের ভেতরে বাণিজ্যিক নার্সারি গড়ে তোলার বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন