ইঁদুরের কামড়ে হাসপাতালে সদ্যোজাত এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত কয়েক দিন ধরেই হাসপাতালের নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (এনআইসিইউ) ইঁদুর ঘুরে বেড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ। এর মধ্যেই এক শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেল।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের মহারাজা যশবন্তরাও হাসপাতালে। এটি মহাত্মা গান্ধী মেমোরিয়াল (এমজিএম) মেডিকেল কলেজের সঙ্গে যুক্ত এবং সেখানকার সবচেয়ে বড় সরকারি হাসপাতাল।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই ঘটনার পরই নার্সদের কাজ নিয়ে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। ওই অভিযোগ ওঠার পর প্রত্যাহার করা হয়েছে দুই নার্সকে। পাশাপাশি পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছে মধ্যপ্রদেশের মানবাধিকার কমিশন।
হাসপাতাল সূত্রের দাবি, ভুক্তভোগী শিশুর ওজন মাত্র ১.২ কেজি। তার শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা অত্যন্ত কম ছিল। এ ছাড়া ফুসফুসের জটিলতা এবং অন্যান্য জন্মগত ত্রুটি থাকায় তাকে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।
ওই ইউনিটেই দুই নবজাতকের কাঁধ এবং আঙুলে ইঁদুর কামড় দেয় বলে খবর পাওয়া যায়। যে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে তার বয়স মাত্র সাত দিন। জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী কারগোনে জেলার এক দম্পতি ওই শিশুটিকে হাসপাতালে ফেলে চলে যায়।
যদিও ইঁদুরের কামড়ে ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে তা মানতে চাননি এমজিএম মেডিকেল কলেজের ডিন অরবিন্দ গন্ধঘোরিয়া। তার দাবি, মৃতপ্রায় অবস্থায় ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা হয়েছিল শিশুটিকে। সেপটিসেমিয়ার কারণে মৃত্যু হয় তার। ইঁদুরের কামড়ের কারণে খুব সামান্য ক্ষত হয় এবং এর কারণে শিশুর মৃত্যু হয়নি। অন্য শিশুটির অপারেশন করার পরে তাকে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
তবে গত ৪-৫ দিন ধরে সেখানকার আইসিইউতে ইঁদুর ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে জানান তিনি। আর ইঁদুর ঘুরে বেড়ানোর ভিডিও প্রকাশ করেছে ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যম।
ইঁদুর মারার পাশাপাশি নার্সদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মেডিকেল কলেজের ডিন অরবিন্দ। জানিয়েছেন, ইঁদুর দেখেও কর্তৃপক্ষকে না জানানোর কারণে আকাঙ্ক্ষা বেঞ্জামিন এবং শ্বেতা চৌহান নামে দুই নার্সিং অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। আরও কয়েকজনকে শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
এ ছাড়া যে সংস্থা ইঁদুর এবং পেস্ট কন্ট্রোল করার দায়িত্বে ছিল, তাদের ১ লাখ রুপি জরিমানা করা হয়েছে এবং কেন তাদের বরখাস্ত করা হবে তার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে এ ঘটনা নিয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে হাসপাতালের সুপারকে। আগামী সাত দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে মধ্যপ্রদেশের মানবাধিকার কমিশন।
মন্তব্য করুন