কলকাতায় এখন ভারতের বৃহত্তম মণিপাল হসপিটাল। সাধ্যের মধ্যে ক্যান্সার, লিভার ও কিডনি রোগের আধুনিক চিকিৎসা পাবেন কলকাতাসহ প্রতিবেশী দেশের রোগীরা। এতে চিকিৎসাসেবায় ব্যয় কমবে। পাশাপাশি বাঁচবে সময়। এমনকি ভিন দেশে চিকিৎসা সেবা নিতে গিয়ে রোগী ও রোগীর স্বজনরা ভাষাজ্ঞানের সমস্যা কটিয়ে উঠতে পারবে। মঙ্গলবার (১৪ মে) দুপুরে কলকাতার একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলন এসব তথ্য জনানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ভারতের বৃহত্তম হসপিটাল চেইন মণিপাল হসপিটালের সঙ্গে একীভূত হয়েছে কলকাতা ও ভূবনেশ্বরে আমরি হাসপাতালের তিনটি ইউনিটসহ মোট ৫টি হাসপাতাল। এ নিয়ে ভারতের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের ১৯টি শহরে সবচেয়ে বেশি ৩৭টি হসপিটাল এ গ্রুপের অধিনে পরিচালিত হচ্ছে। এসব হাসপাতালে নিজ দেশ ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে স্বাস্থ্যসেবা পাবে। এ প্রতিষ্ঠনে ১০ হাজারেরও বেশি শয্যা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মণিপাল হেলথ এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড চেয়ারম্যান ডা. সুদর্শন বল্লাল ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মি.দীলিপ জোশ। এ ছাড়া এর আগে কলকাতা মণিপাল হসপিটাল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন এ প্রতিষ্ঠানের ভাইস প্রেসিডেন্ট মধুর গোপাল, ভারতের বিখ্যাত ক্রিকেটার ভিভিএস লক্ষন, ভারতের জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক পদ্মশ্রী সুনীল ছেত্রী প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ভারতের বৃহত্তম স্বাস্থ্য শিক্ষা ও সেবা প্রতিষ্ঠান মণিপাল হেলথ এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির অঙ্গ প্রতিষ্ঠান মণিপাল হসপিটাল। মণিপাল হাসপাতাল ভারতের ১৯টি শহরে ৩৭টি হাসপাতাল লিভার, কিডনি, হৃদরোগ ও ফুসফুসের রোগ, অর্থপেডিক, নিউরো, বোনম্যারো, পেডিয়াট্রিকসহ বিভিন্ন ধরণের সার্জারি অত্যন্ত সফলতার সাথে করে আসছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বুধবার (১৫ মে) থেকে কোলকাতায় মণিপাল হসপিটালসের অধীনে হাসপাতালগুলো পরিচালিত হবে। একীভূত হওয়া হাসপাতালগুলোতে বাংলাদেশি রোগীদের সাধ্যের মধ্যে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হবে।
মণিপাল হেলথ এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড চেয়ারম্যান ডা. সুদর্শন বল্লাল বলেন, ১৯৫৩ সাল থেকে দক্ষিণ ভারতের একটি ছোট গ্রামে যাত্রা শুরু করে আজকের এই অবস্থানে এসেছে মনিপাল। চিকিৎস সেবা বঞ্চিত মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁচ্ছে, মানুষের মন জয় করে, ভারতের বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান হিসেবে সগৌরবে বিশ্ব দরবারে মণিপাল হাসপাতাল।
তিনি বলেন, সর্বস্তরের মানুষের কাছে আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমরা কলকাতাসহ বিভিন্ন বড় শহরে মনিপাল গ্রুপের চেইন হসপিটাল চালু করছি। আমরা দেখেছি ব্যঙ্গালুরে বিভিন্ন প্রদেশের ২০-২৫ শতাংশ রোগী চিকিৎসার জন্য যায়। এতে দেখা যায় সময়, অর্থ এবং শারীরিক অসুবিধার শিকার হয় রোগী ও রোগীর পরিবার। এমনকি ভাষাজ্ঞান না থাকায় পোহাতে হয় ভোগান্তি। এই সব অসুবিধার সমাধান করতে আপনাদের কাছে কলকাতায় মণিপাল হসপিটাল নিয়ে এসেছি।
তিনি আরও বলেন, কলকাতা শহরে মণিপাল অত্যাধুনিক টেকনোলোজি ব্যবহার করে লিভার ট্রান্সপ্লেনটেশন, ক্যানসার ও কিডনি রোগের চিকিৎসা নিয়ে আসবে। রোবটিক্স সার্জারি কারা হবে এ হাপাতালে। ছাড়া মণিপাল আধুনিক চিকিৎসায় পাশাপাশি রোগীদের ডাটাবেজ তৈরির দিকে মনোযোগ দিবে।
মণিপাল হসপিটালস গ্রুপের চিফ ম্যানেজার (ইন্টারন্যাশনাল হেলথ কেয়ার এন্ড সার্ভিসেস) রাম গোপাল বর্ধন বলেন, বুধবার থেকে কলকাতায় একীভূত হওয়া হাসপাতালগুলোতে মণিপাল হসপিটালস কার্যক্রম শুরু করবে। এতে করে বাংলাদেশ থেকে যারা চিকিৎসার জন্য আসবেন, তাদের আর দীর্ঘ যাত্রা করে ব্যাঙ্গালোর বা দিল্লী যেতে হবে না। আমরা চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি একাডেমিক এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামও পরিচালনা করি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের চিকিৎসকরাও এর আওতায় অবজারভেটরি ট্রেনিং নিয়েছেন। ৭০ বছরের বেশি সময় ধরে মণিপাল হসপিটালস অত্যন্ত সুনামের সাথে সারা ভারতে মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে।
রাম গোপাল বর্ধন আরও বলেন, প্রতি মাসে বাংলাদেশ থেকে প্রায় আড়াই হাজার রোগী আমরি হাসপাতালে সেবা নিতে আসে। তারা এখন এই হসপিটালে আধুনিক সেবা পাবে আরও তুলনামূলক কম খরচে, যা এখন মণিপাল হসপিটাল নামে পরিচালিত হবে।
মন্তব্য করুন