কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:১৪ পিএম
আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:৫০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

গাজায় যুদ্ধবিরতিতে কোন দেশ কী ভূমিকা রেখেছে?

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা। ছবি : সংগৃহীত
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা। ছবি : সংগৃহীত

নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে গাজায় যুদ্ধবিরতির অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা। এ নিয়ে শুক্রবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে বসেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ঠিক সেসময় যুদ্ধবিরতির পক্ষে-বিপক্ষে খোদ ইসরায়েলের ভেতরই বিক্ষোভ চলছিল। এমনকি ইসরায়েলের কট্টরপন্থি মন্ত্রী বেন গাভির যুদ্ধবিরতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে পদত্যাগের হুমকিও দিয়েছিলেন।

তবে সব সংশয়ের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা এ যুদ্ধবিরতির অনুমোদন দেয়। আর এখানে কাজ করেছে কয়েকটি দেশের জোর প্রচেষ্টা। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নেতানিয়াহুর ওপর চাপ বাড়ছিল যা যুদ্ধবিরতিকে তরান্বিত করেছে।

এর আগেও কাতার ও মিসরে গাজার যুদ্ধবিরতি নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে। ইসরায়েলের গোয়েন্দারা বারবার ছুটে গিয়েছেন। তবে কোনো না কোনো পক্ষের অসহযোগিতায় শেষ পর্যন্ত সেসব প্রচেষ্টা সফলতার মুখ দেখেনি। অবশেষে সেই কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাতেই হলো যুদ্ধবিরতি। তবে এখানে বড় একটি ভূমিকা রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।

গোয়েন্দা কর্মকর্তা, কূটনীতিক ও মধ্যস্থতাকারীরা শেষ পর্যন্ত ইসরায়েল ও গাজার স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন, এ সংঘাতের সামনে কোনো ফলাফল নেই। নিরপরাধ মানুষের জীবনহানি কোনো পক্ষকে বিজয় দেবে না। যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়াই দুপক্ষের জন্য মঙ্গলজনক।

আলোচনায় ইসরায়েলের হয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন চৌকস দুজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা। মোসাদের প্রধান ডেভিড বার্নিয়া ও অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিনবেতের প্রধান রনেন বার ইসরায়েলের হয়ে যুদ্ধবিরতির আলোচনা চালিয়ে নেন। অবশ্য পেছন থেকে তাদের দুজনকে বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সামরিক ও রাজনৈতিক উপদেষ্টারা। যুদ্ধবিরতি সম্মতে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের রাজি করাতে এই দুজন একবার কাতার, একবার মিসর তো একবার যুক্তরাষ্ট্র ছুটেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় নেতৃত্ব দেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক শীর্ষ উপদেষ্টা ব্রেট ম্যাকগার্ক। মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে তার পূর্ব অভিজ্ঞতা সব পক্ষকে এক টেবিলে বসাতে সাহায্য করেছে। আর কাতারের হয়ে আলোচনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল থানি। তিনিই জানান, রোববার থেকে এ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।

ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সঙ্গে লিয়াজোঁ করেছেন মিসরের গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হাসান রাসাদ। মিসর মূলত ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের যোদ্ধাদের সঙ্গে সমঝোতার খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনা করেছে। সামনের দিনগুলোতে যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে এ প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। ইয়াহহিয়া সিনাওয়ারের মৃত্যুর কারণে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন খলিল আল হায়া। তার দক্ষতার কারণে দ্রুত হয়েছে যুদ্ধবিরতির এই প্রক্রিয়া।

প্রাথমিকভাবে ৪২ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন। চুক্তির আওতায় ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মির বিনিময়ে শতাধিক ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে ছেড়ে দেওয়া হবে। গাজার জনবহুল এলাকা থেকে সরে যাবে ইসরায়েলি সেনারা। বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা নিজ বাড়িতে ফিরতে পারবে। আর গাজার ভেতর ৮০০ মিটারের একটি বাফার জোন তৈরি করা হবে, যেটির নিয়ন্ত্রণ থাকবে ইসরায়েলের হাতে। কায়রোভিত্তিক একটি সংস্থার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ করবে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র।

তবে এই যুদ্ধবিরতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করে ইসরায়েলে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাদের কাছে এই যুদ্ধবিরতি পরাজয়ের শামিল। নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভায়ও ক্ষোভ দেখা গেছে। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী বেন গাভির যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন। তবে যুদ্ধবিরতির পক্ষেও ইসরায়েলে মিছিল হয়েছে। ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি নির্বিশেষে বেশিরভাগ মানুষ চাইছে শান্তি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জেনে নিন আজকের নামাজের সময়সূচি

এলোপাতারি কুপিয়ে স্ত্রীকে হত্যা

ক্যাশমেমো নেই, খুচরা বাজারে দ্বিগুণ দাম কাঁচামালে

রামপুরায় ভবনের ৬ তলা থেকে পড়ে রডমিস্ত্রির মৃত্যু

কুড়িয়ে পাওয়া ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ফেরত দিলেন ভ্যানচালক

বুড়িগঙ্গা থেকে লাশ উদ্ধার / ৪ জনকেই হত্যা করা হয়েছে, ধারণা পুলিশের

ওসির বদলির খবরে মোহাম্মদপুর থানার সামনে মিষ্টি বিতরণ স্থানীয়দের

বিএনপি নেতা আব্দুস সালামের চিকিৎসার খোঁজ নিলেন ডা. কাঁকন 

সিপিএলে ইতিহাস গড়ে ফ্যালকনসকে জেতালেন সাকিব

নতুন ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন / মাত্র ১০০ টাকায় করা যাবে দক্ষতা, চাকরি কিংবা ভর্তি প্রস্তুতির কোর্স

১০

সড়কের মাঝখানে গাছ রেখেই ঢালাই সম্পন্ন 

১১

বুটেক্স সাংবাদিক সমিতির ৯ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত

১২

টানা ৮ ঘণ্টা অবরুদ্ধ জবির ভিসি

১৩

৬৪ জেলার নেতাকর্মীদের নতুন বার্তা দিল এনসিপি

১৪

ম্যানইউর জয়হীন ধারা অব্যাহত, এবার ফুলহামের মাঠে ড্র

১৫

ব্র্যাক ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা-পেশাজীবীদের নিয়ে ‘আগামীর পথ’ অনুষ্ঠিত

১৬

প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে সাকিবের অনন্য কীর্তি

১৭

জুলাই যোদ্ধা শহীদ তানভীরের চাচা খুন

১৮

ভরা জোয়ারে ডুবে যায় বিদ্যালয়, শঙ্কায় অভিভাবক-শিক্ষার্থী

১৯

যেভাবে গ্রেপ্তার হলেন তৌহিদ আফ্রিদি

২০
X