যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবকে অগ্রহণযোগ্য আখ্যা দিয়ে তার জবাবে নতুন একটি পারমাণবিক চুক্তির প্রস্তাব দেবে ইরান। দেশটি জানিয়েছে, এই প্রস্তাব ওমানের মাধ্যমে ওয়াশিংটনের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।
সোমবার (৯ জুন) তেহরানে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘায়ি। খবর : রয়টার্স।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক প্রস্তাব আমাদের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়। এটি আগের আলোচনার কাঠামোর সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। আমরা এখন এমন একটি প্রস্তাব তৈরি করছি যা হবে যুক্তিসংগত, ভারসাম্যপূর্ণ এবং যৌক্তিক। এটি ওমানের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে জানানো হবে।
বাঘায়ি আরও জানান, আমরা চাই, অবরোধ তোলার আগে নিশ্চিত হতে হবে- ইরান আন্তর্জাতিক অর্থনীতি ও ব্যাংকিং ব্যবস্থায় উপকারভোগী হবে এবং বৈদেশিক বাণিজ্য স্বাভাবিক হবে।
এর আগে রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, মে মাসের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্র যে নতুন প্রস্তাব দিয়েছে, তাতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ, মজুত ইউরেনিয়াম বিদেশে পাঠানো এবং নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কার্যকর রূপরেখা নিয়ে মতপার্থক্য থেকেই গেছে। ইরানি কূটনীতিকরা বলছেন, এসব মৌলিক বিষয়ে স্পষ্টতা না থাকায় ইরান সেটি প্রত্যাখ্যান করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বাঘায়ি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, যেসব দেশ ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন তোলে, তারাই আবার ইসরায়েলের সামরিক পারমাণবিক কর্মসূচিকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। আমরা ইসরায়েলের নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান জানাই।
উল্লেখ্য, ইসরায়েল কখনো তাদের পারমাণবিক অস্ত্রাধিকার স্বীকার বা অস্বীকার করেনি। তবে তেহরানের অভিযোগ, ইসরায়েল ইরানের পরমাণু আলোচনা বিঘ্নিত করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
সম্প্রতি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবকে ‘জাতীয় স্বার্থবিরোধী’ আখ্যা দেন এবং ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র বাতিল করে পুনরায় অবরোধ আরোপ করলে চুক্তির ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়ে। এর পালটা জবাবে ইরানও ধীরে ধীরে চুক্তির সীমা লঙ্ঘন করে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বাড়ায়।
সংবাদ সম্মেলনে বাঘায়ি জানান, ষষ্ঠ দফা পারমাণবিক আলোচনা কবে শুরু হবে, তা এখনো নির্ধারিত হয়নি।
মন্তব্য করুন