ইসলামিক রিভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসিতে) এর নতুন প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ পাকপুর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন যে, ইরানের ভূখণ্ডে হামলার জন্য চড়া মূল্য দিতে হবে ইসরায়েলকে।
শুক্রবার (১৩ জুন) মেজর জেনারেল পাকপুর তার দায়িত্ব গ্রহণের পর মেহের নিউজ এজেন্সিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইআরজিসির সেনা কম্যান্ডার ও সকল সশস্ত্র বাহিনীর মহান নেতা আয়েতুল্লাহ সৈয়দ আলি খামেনিকে দেওয়া এক বার্তায় অপরাধ ও হামলার জবাব দেওয়ার অঙ্গিকার প্রকাশ করেন।
বার্তার ভাষায় পাকপুর বলেন, অপরাধী ও অবৈধ জায়নবাদী প্রশাসনকে এক তিক্ত ও যন্ত্রনাদায়ক পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে। শিগগিরই এই শিশুহত্যাকারীদের জন্য নরকের দরজা খুলে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুমতি পেয়ে শুক্রবার ভোররাতে ইসরায়েল ইরানে ভয়াবহ হামলা শুরু করে। দেশটির রাজধানী তেহরান ও আশেপাশের অনেকগুলো শহর এর কবলে এসেছে। হামলায় আবাসিক এলাকা ও ঘর বাড়িতে উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও জাতীয় টেলিভিশন জানিয়েছে যে তারা নিহত ও আহতদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশুকে দেখেছে।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফের মুখপাত্র আবুল ফজল শেখারচির ভাষায়, জায়নবাদীর এই হামলার জবাব অবশ্যই দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলকে এর চড়া মূল্য দিতে হবে।
একই সঙ্গে, নিরাপত্তা বাহিনীর অপর এক সূত্র রয়টার্সকে বলেছে যে, ইসরায়েলের হামলার জবাব কঠোর ও ফলাফল নির্ণায়ক হতে যাচ্ছে সামনের দিনগুলোতে।
এর আগে স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৩ জুন) ভোররাতে ইসরায়েলির বিমান বাহিনী ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে অভিযান চালায়। এই হামলায় ইরানে পরমাণু স্থাপনা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা ও সামরিক কম্যান্ড কেন্দ্রগুলোকে টার্গেট করা হয়।
ইরানে হামলার পর নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। শুক্রবার ভোরে ঘটা এই হামলায় এরইমধ্যে সৌদি আরব, তুর্কিসহ বিশ্বের অনেক দেশ তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
জানা গেছে, ইরানে পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর অংশ হিসেবে অনেক দিন ধরেই পরিকল্পনা করছিল ইসরায়েল। এর অংশ হিসেবে তারা সেখানে একটা ড্রোন ঘাঁটি স্থাপন ও নির্ভুল অস্ত্র ব্যবস্থা ও কম্যান্ডো পাচার করেছে।
ইসরায়েলের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা টাইমস অফ ইসরায়েলকে বলেন, মোসাদ এজেন্টরা তেহরানে সেই ঘাঁটি স্থাপন করেছিলেন। তারপর রাতারাতিতে সেই ঘাঁটি ব্যবহার করেই ভূমিতে স্থাপন করা ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চারগুলিতে আঘাত হানে। এর ফলেই ইরান তাৎক্ষণিক পাল্টা হামলা চালাতে সক্ষম হয়নি এবং তাদের বিমানপ্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অনেকটাই ধ্বংস হয়ে যায়।
ইরানে ইসরায়েলির হামলায় অন্তত ৭৮ জন নিহত ও ৩২৯ জন আহত হয়েছে। দেশটির রেভল্যুশনারি গার্ড পরিচালিত নিউজ এজেন্সিতে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ে, বাস্তবে নিহত ও আহতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে।
মন্তব্য করুন