ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার (১৫ জুন) ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি নিহত হন। এটি ইরান-ইসরায়েল চলমান উত্তেজনার মধ্যে একটি বড় ঘটনা বলেই বিবেচনা করছে ইরান।
মোহাম্মদ কাজেমি মোহাম্মদ কাজেমির জন্ম ১৯৬১ সালের ১১ জুলাই। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আইআরজিসির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০১৩ সাল থেকে তিনি এ বাহিনীর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সুরক্ষা বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০২২ সালের জুন মাসে তাকে আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। কাজেমির দায়িত্ব ছিল গোয়েন্দা নজরদারি ও দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এরপর তাকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদমর্যাদা দেওয়া হয়। তিনি ছিলেন ইরানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
তবে তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়ন চালানো এবং জাতিগত সংখ্যালঘুদের অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ছিল। যুক্তরাজ্য ২০২৪ সালের অক্টোবরে তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
কীভাবে নিহত হলেন রোববার ইসরায়েলি বাহিনী তেহরানের একটি গুরুত্বপূর্ণ আইআরজিসি গোয়েন্দা ভবনে বিমান হামলা চালায়। এ হামলায় কাজেমি ও তার সহকারী হাসান মোহাঘেগ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে নিহত হন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এ হামলার দায় স্বীকার করে জানান, এটি ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম ও সামরিক শক্তিকে দুর্বল করার একটি অংশ।
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এ হত্যাকাণ্ডকে ‘কাপুরুষোচিত অপরাধ’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি জানান, ইরান এই ঘটনার প্রতিশোধ নেবে। আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।
আগের ঘটনা এটি প্রথমবার নয়। এর আগেও ইসরায়েল ইরানি সেনা কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে ইরানের কুদস ফোর্সের শীর্ষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজা জাহেদিও সিরিয়ার দামেস্কে এক হামলায় নিহত হন। এ ধরনের হামলাগুলোর কারণে ইরানের সামরিক ও গোয়েন্দা কাঠামোতে বড় ধাক্কা লেগেছে। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা বাড়ছে।
ইসরায়েলি হামলা ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা চলছে। ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, যা ইসরায়েলের জন্য নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে দেখা হয়। এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েল ইরানের শীর্ষ সামরিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে বিভিন্ন অভিযান চালিয়েছে।
আলজাজিরা
মন্তব্য করুন