ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বড় ধরনের গোয়েন্দা সাফল্য দাবি করেছে ইরান। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, একটি অত্যন্ত জটিল অভিযানের মাধ্যমে তারা ইসরায়েলের মোসাদ ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার বহু সংবেদনশীল ও কৌশলগত নথি হস্তগত করেছে।
ইরান দাবি করেছে, তারা হাজার হাজার গোপন নথি, ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলের পারমাণবিক স্থাপনা, সামরিক পরিকল্পনা, দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে গোপন কার্যক্রম ও শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের তথ্য। এই খবর প্রকাশ করেছে পার্স টুডে ও আল-মায়াদিন।
জর্ডানের সামরিক বিশ্লেষক ও কৌশলবিদ নাজাল আবু জায়েদ বলেন, ইরানের এই গোয়েন্দা অভিযান ছিল সময় ও স্থানভিত্তিক সমন্বিত এক সাইবার ও মাঠ পর্যায়ের হামলা। তারা ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ও সক্ষমতার ‘মিথ’ ভেঙে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ ধরনের সংবেদনশীল আর্কাইভ সবসময় কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে থাকে। তবুও ইরানি গোয়েন্দারা তা ভেদ করে ঢুকে পড়েছে। এটি ইসরায়েলের যুদ্ধমন্ত্রী ও সামরিক প্রধানদের বহুদিনের অহংকার ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের সক্ষমতাকে মুছে দিয়েছে।
আল-মায়াদিনকে দেওয়া তথ্যে একাধিক অভিজ্ঞ সূত্র জানায়, অনেক আগেই এই অভিযানের সূচনা হয়, তবে বিপুল সংখ্যক নথিপত্র নিরাপদভাবে ইরানের অভ্যন্তরে স্থানান্তরের পরই বিষয়টি প্রকাশ করা হয়েছে। তারা জানায়, নথির পরিমাণ এত বেশি যে শুধু তা পর্যবেক্ষণ, ছবি ও ভিডিও বিশ্লেষণেই অনেক সময় লেগে যাচ্ছে।
সূত্রগুলো আরও দাবি করে, ইরান এখন মোসাদের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা সম্পর্কিত সকল তথ্যের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই অভিযানের মাধ্যমে শুধু কৌশলগত সুবিধা নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যে গোয়েন্দা লড়াইয়ে ইরান এক ঐতিহাসিক বিজয় দাবি করতে পারে। তেলআবিব এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি, তবে বিষয়টি নিয়ে ইসরায়েলের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড় ধরনের চাপে পড়েছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্ব রাজনীতিতে উত্তেজনার এই সময় ইরানের এই দাবি এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যা ভবিষ্যতের সংঘাতের গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
মন্তব্য করুন