ইরানে ইসরায়েলি হামলার ধারাবাহিকতায় আরও এক পরমাণু বিজ্ঞানী প্রাণ হারিয়েছেন। দেশটির রাজধানী তেহরানে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে ইসরায়েলের বিমানবাহিনীর (আইএএফ) ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছেন শরিফ ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন শিক্ষার্থী ইসার তাবাতাবেই কামশেহ। হামলায় তার স্ত্রী মানসৌরিয়েহ হাজিসালেমও নিহত হন।
শনিবার (২১ জুন) এক বিবৃতিতে কামশেহর মৃত্যু নিশ্চিত করেছে তেহরানের মর্যাদাপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শরিফ ইউনিভার্সিটি। বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ভোররাতে তেহরানের একটি আবাসিক ভবনে আইএএফের চালানো ড্রোন হামলায় এই দম্পতি নিহত হন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ওই ভবনের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, ভবনের একটি অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং নিরাপত্তা বাহিনী এলাকাটি ঘিরে রেখেছে।
বিবিসির তথ্যমতে, শুক্রবার (১৩)জুন থেকে ইসরায়েলের চালানো ধারাবাহিক বিমান ও ড্রোন হামলায় ইরানের সামরিক বাহিনীর বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং পরমাণু কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত বিজ্ঞানীরা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছেন। আট দিনের ব্যবধানে এ পর্যন্ত অন্তত ১০ জন পরমাণু বিজ্ঞানীর প্রাণহানির খবর নিশ্চিত করেছে ইরানি ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সূত্র।
নিহত বাকি ৯ জন বিজ্ঞানী হলেন- ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান ফেরেয়াদুন আব্বাসি, মোহাম্মদ মেহদি তেহরাঞ্চি, আবদোলহামিদ মিনৌচেহর, আহমাদ রেজা জোল্ফঘারি, আমিরহোসেন ফেগহি, আকবার মোতালেবিজাদেহ, আলী বাকাই কারিমি, মানসুর আসগারি এবং সাঈদ বুরজি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েলের এই পরিকল্পিত অভিযানের লক্ষ্য হচ্ছে ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে বিপর্যস্ত করা এবং ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের বৈজ্ঞানিক কাঠামোয় ভয়-আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া।
তেহরান থেকে এখনো সরকারিভাবে এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি, তবে ইরানি রেভল্যুশনারি গার্ড ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলো হামলার পেছনে ইসরায়েলকে দায়ী করছে এবং কঠিন প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে।
এখন প্রশ্ন উঠছে- এই পরিকল্পিত গুপ্তহত্যা ও ড্রোন হামলার পেছনে ইসরায়েল শুধু ইরানের পরমাণু কার্যক্রম ঠেকাতে চাইছে, না কি মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ উসকে দিতে চাইছে?
মন্তব্য করুন