কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি আল উদেইদে ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান।
সোমবার (২৩ জুন) স্থানীয় সময় বিকালে এই হামলা হয়, যা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার জবাব হিসেবে চালানো হয় বলে জানায় তেহরান।
তবে হামলার আগেই কাতার সরকারকে বিষয়টি অবহিত করেছিল ইরান। এমন তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাতার ও ইরানের কর্মকর্তাদের মধ্যে সমন্বয়ের ভিত্তিতে এ হামলা পরিচালিত হয়।
নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনজন ইরানি কর্মকর্তা বলেন, হামলার ক্ষয়ক্ষতি যেন সীমিত থাকে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতির বিস্তার না ঘটে, সে জন্যই কাতারকে আগেভাগে জানানো হয়েছিল।
সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের হামলার জবাবে ইরান একটি ‘প্রতীকী প্রতিক্রিয়া’ দেখাতে চেয়েছিল। তবে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে না পড়ে কৌশলগতভাবে আঘাত হানতে চেয়েছিল তারা। ফলে আগে থেকেই হামলার সময় ও মাত্রা সম্পর্কে কাতারকে জানানো হয়েছিল বলে দাবি করা হয়।
এই পদক্ষেপ অনেকটা ২০২০ সালের ঘটনার পুনরাবৃত্তি। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্র ইরানের কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার পর ইরান ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল। তখনও ইরাককে আগেভাগে সতর্ক করা হয়েছিল যাতে প্রাণহানি এড়ানো যায়।
এবারের হামলায়ও রয়টার্স জানিয়েছে, দোহা শহরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। অ্যাক্সিওস ও বিবিসি অ্যারাবিক ইসরায়েলি এক কর্মকর্তার বরাতে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাসনিম নিউজ জানায়, ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) এই প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়েছে।
হামলার আগে ঘাঁটিটির প্রতি হুমকি পাওয়া গিয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন এক পশ্চিমা কূটনীতিক। হামলার পরপরই নিরাপত্তার স্বার্থে কাতার সাময়িকভাবে আকাশসীমা বন্ধ করে দেয় এবং মার্কিন দূতাবাস দেশটিতে অবস্থানরত নাগরিকদের ঘরের ভেতরে অবস্থানের নির্দেশ দেয়।
উল্লেখ্য, আল উদেইদ বিমানঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের ফরোয়ার্ড হেডকোয়ার্টার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি, যেখানে প্রায় ১০ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। এই ঘাঁটি থেকেই যুক্তরাষ্ট্র পুরো উপসাগরীয় অঞ্চলে সামরিক কার্যক্রম চালিয়ে থাকে।
মন্তব্য করুন