ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে নির্মূলের নামে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার একের পর এক শহরে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গাজার প্রায় শহর-নগরকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে এখন রাফা শহরে স্থল অভিযানের ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। আসন্ন এই হামলা বন্ধের দাবি বিশ্বজুড়ে জোরালো হলেও সব চাপ উপেক্ষা করে এবার রাফায় স্থল অভিযানের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে তেলআবিব। খবর বিবিসির।
রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েলের যুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গ্যান্টজ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যদি হামাস ১০ মার্চের মধ্যে গাজায় বন্দি সব ইসরায়েলিকে মুক্তি না দেয় তবে রাফা শহরে আক্রমণ চালানো হবে। এর মাধ্যমে রাফায় কখন ইসরায়েলি সেনারা প্রবেশ করতে পারে তা প্রথমবারের মতো জানালো দেশটি।
গাজার সর্বদক্ষিণের শহর হলো রাফা। এটি মিসরের সীমান্তবর্তী একটি শহর। ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচতে দক্ষিণে সরতে সরতে সর্বশেষ এখানে গাজার ২৩ লাখ মানুষের মধ্যে অর্ধেকের বেশি আশ্রয়গ্রহণ করেছেন। প্রচণ্ড ঠান্ডায় মূলত তাঁবু ও সরকারি ভবনে তারা বসবাস করছেন।
রাফায় এখনো স্থল অভিযানে না নামলেও প্রতিদিন বোমা হামলা জোরদার করে চলেছে ইসরায়েল। এরই মধ্যে ইসরায়েলি হামলা ও অবরোধের কারণে দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরের নাসের হাসপাতাল অচল হয়ে গেছে। সেখানে রোগী থাকলেও তাদের চিকিৎসা দেওয়ার মতো কোনো চিকিৎসক নেই। এসব কারণে রাফা শহরে আশ্রয় নেওয়া মানুষের মধ্যে স্থল অভিযান ঘিরে প্রতিদিনই শঙ্কা বাড়ছে। তা সত্ত্বেও লাখ লাখ মানুষ সেখানে আশ্রয় নিয়ে আছেন। কেননা তাদের আর সরে যাওয়ার মতো জায়গা নেই।
ইসরায়েলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গ্যান্টজ বলেন, বিশ্ব ও হামাস নেতাদের অবশ্যই জানতে হবে যদি রমজানের মধ্যে আমাদের জিম্মিরা বাড়িতে না ফিরে তাহলে রাফাসহ সর্বত্র আমাদের লড়াই চলবে।
রমজান মুসলমানদের একটি পবিত্র মাস। এই বছর ১০ মার্চ থেকে এই মাস শুরু হবে। এই মাসে মুসলমানরা পবিত্র রোজা রাখেন।
গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে সাতদিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে শতাধিক বন্দি আছেন।
অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ২৮ হাজার ৯৮৫ জনে পৌঁছেছে। এ ছাড়া এ পর্যন্ত আহত হয়েছে ৬৮ হাজার ৮৮৩ জন।
মন্তব্য করুন