অনলাইনে প্রতারণা বিষয়ে সম্প্রতি একটি গবেষণা হয়েছে। এতে উঠে এসেছে, কারা বেশি ভার্চুয়াল জগতের প্রতারণার শিকার হন। এ ছাড়া কেনই-বা তারা প্রতারকদের খপ্পরে পড়ছেন তারও একটি ধারণা পাওয়া গেছে।
গবেষণাটি করেছেন ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন এবং ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গবেষকেরা। কমিউনিকেশনস সাইকোলজি সাময়িকীতে তা প্রকাশ পেয়েছে।
গবেষণার মূল উপাত্ত হচ্ছে, অনলাইনে সৎ মানুষেরাই বেশি ফাঁদে পড়েন। প্রতারকদের ছলনায় বিশ্বাস করে ভালো মানুষরাই সব সম্পদ হারান।
এ ছাড়া মানুষ কীভাবে অনলাইনে মিথ্যা শনাক্ত করে, সে কারণগুলো তুলে ধরা হয়েছে এ গবেষণায়। গবেষণাপত্রের সহ-লেখক তালি শারোট এবং সারাহ ঝেং মেডিকেল এক্সপ্রেসকে জানান, সারা বিশ্বে প্রতি বছর অনলাইনে প্রতারিত হয়ে বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থ হারাচ্ছে অসংখ্য মানুষ। বিশেষ করে করোনা মহামারির পর থেকে এ প্রবণতা বেড়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আবির্ভাবও পরিস্থিতিকে আরও খারাপের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
অনলাইনে প্রতারণা শনাক্ত করার আগে গবেষকেরা বুঝতে চেয়েছিলেন—মানুষ কেন অনলাইনের ফাঁদে পড়ে যায়।
গবেষকেরা জানান, অফলাইন বা মুখোমুখি অবস্থান থেকে একজন মানুষ কিছু সূক্ষ্ম ইঙ্গিতের ওপর ভর করে প্রতারণা শনাক্ত করার চেষ্টা করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ—কোনো ব্যক্তির অভিব্যক্তি, আচরণ বা অঙ্গভঙ্গি দেখে তার প্রতারণা সম্পর্কে আঁচ করতে পারে অন্য মানুষ। কিন্তু অনলাইনে তো এমনটি সম্ভব নয়। তাই অনলাইনে প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে ৩১০ জন মানুষের ওপর একটি পরীক্ষা চালানো হয়।
পরীক্ষার অংশ হিসেবে তাদের সবাইকে অনলাইনে জোড়ায় জোড়ায় একটি কার্ড খেলায় অংশ নিতে বলা হয়। এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু কার্ডের মাধ্যমে অর্থ আয় হবে, আর অন্যগুলো আর্থিক ক্ষতির কারণ হতে পারে। খেলাটিতে মিথ্যা বলে অন্যকে ঠকিয়ে চাতুর্যের মাধ্যমে চাইলে বেশি অর্থ আয় করার সুযোগ ছিল। যদিও মিথ্যা বলার জন্য কাউকেই নির্দেশ দেওয়া হয়নি। খেলার শেষে অংশগ্রহণকারীরা তার প্রতিপক্ষকে কতটা সৎ ভেবেছিলেন সেই সম্পর্কে রেটিং করতে বলা হয়েছিল।
গবেষণা কর্ম শেষ হওয়ার পর শারোট এবং ঝেং বলেন, প্রাপ্ত ফলাফলগুলো ইঙ্গিত করে যে, সৎ মানুষেরা ফাঁদে পড়ার বিষয়ে সংবেদনশীল হতে পারে। কারণ মিথ্যা বা ফাঁদ শনাক্ত করার ক্ষেত্রে তারা কম সন্দিহান থাকেন।
অপরপক্ষে, যারা নিজেরাই মিথ্যাবাদী, তারা প্রতিপক্ষকেও একই রকম মিথ্যাবাদী ভেবে সহজে ফাঁদে পা দেয় না।
মন্তব্য করুন