আমাজনের মতো ভয়ংকর গহিন জঙ্গল থেকে ৪০ দিন পর জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে চার শিশুকে। হেলিকপ্টারের মাধ্যমে জঙ্গল থেকে সরাসরি নিয়ে যাওয়া হয় কলম্বিয়ার হাসপাতালে। সেখানেই ওই শিশুদের এক পলক দেখার সুযোগ পান পরিবারের বেঁচে থাকা সদস্যরা। তাদের দেখতে ছুটে যান দেশটির প্রেসিডেন্টও। সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
শিশুদের উদ্ধারকারী সেনারা বলছেন, আমাজনের গহিন জঙ্গলে সাপ, জাগোয়ারের মতো ভয়ংকর শিকারির আবাস রয়েছে। সেখানে টানা ৪০ দিন চার শিশুর বেঁচে থাকাটা কোনোভাবে বিশ্বাসই করতে পারছেন না তারা। এর মধ্যে আবার মাত্র ১ বছর বয়সী শিশুও ছিল।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, জঙ্গলে কাটানো দীর্ঘ এই সময় ছোট তিন ভাইবোনকে আগলে রাখার দায়িত্ব নিয়েছিল মাত্র ১৩ বছর বয়সী বড় বোন। এই সময় তারা আটা, বীজ আর ফলমূল খেয়ে বেঁচে ছিল জঙ্গলে।
চিকিৎসকরা বলছেন, শিশুরা খাবারের অভাবে অনেক দুর্বল হয়ে পড়েছে। শরীরে ক্ষত দেখা দিয়েছে। তাদের পুরোপুরি সুস্থ হতে আরও দুই থেকে তিন সপ্তাহ থাকতে হবে হাসপাতালে। তবে শিশুদের জীবিত ফিরে পেয়ে যারপরনাই খুশি তাদের দাদা ফিদেনসিও ভ্যালেনসিয়া।
ভ্যালেনসিয়া বলেন, ‘তারা শারীরিকভাবে এখন অনেক দুর্বল। তাদের দ্রুত সুস্থ করতে হাসপাতালে রাখা হয়েছে। এত দিন পর বাচ্চাদের জীবিত ফিরে পাব, এটা কল্পনাও করিনি। আমরা খুবই খুশি। সৃষ্টিকর্তা মহান।’
গত ১ মে আমাজনের গহিন জঙ্গলে ছোট আকারের একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে শিশুদের মা ও দুই পাইলট নিহত হন। শুধু অলৌকিকভাবে বেঁচে যায় এই চার শিশু। সে সময় দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্রাপ্তবয়স্ক তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হলেও মিলছিল না শিশুদের খোঁজ। ধারণা করা হচ্ছিল, কোনো হিংস্র প্রাণীর পেটে চলে গেছে তারা।
কিন্তু তাদের সন্ধানে হাল ছাড়ে না কলম্বিয়ার সেনাবাহিনী। বিশেষ প্রশিক্ষিত কুকুর আর স্থানীয় আদিবাসীদের নিয়ে চলে সন্ধান। পায়ের চিহ্ন দেখে বাড়তে থাকে আশার আলো। অবশেষে ৪০ দিন পর তাদের দেখা মেলে। আর এতে খুশিতে আত্মহারা উদ্ধারকারীরা।
মন্তব্য করুন