

বিশ্বজুড়ে পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে যখন তীব্র উত্তেজনা, ঠিক তখনই বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নতুন করে ঝড় তুলেছে।
যে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে এতকাল ইরানকে কোণঠাসা করার চেষ্টা চলছিল, সেই কর্মসূচি এবার নিজেই শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো নিয়ে বরাবরই সবচেয়ে বেশি ‘মাথাব্যথা’ ছিল ওয়াশিংটনের। এই স্থাপনাগুলোকে কেন্দ্র করেই এ বছর আয়াতুল্লাহ খামেনির দেশে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ইরানও পাল্টা গর্জে ওঠে। নিজেদের ক্ষয়ক্ষতি বাড়তে থাকায় যুক্তরাষ্ট্রকেও ওই যুদ্ধে টেনে আনে ইসরায়েল।
যেই পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে এত কাহিনি সেই পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি পেন্টাগনকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের পেছনে যুক্তি— অন্য দেশগুলোর পরীক্ষামূলক কর্মসূচি। দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প লেখেন অন্য দেশগুলোর পরীক্ষামূলক কর্মসূচির কারণে তিনিও তাদের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা সমানভাবে শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড়। রাশিয়া দ্বিতীয় অবস্থানে এবং চীন অনেক পিছিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন ‘পশ্চাৎমুখী ও দায়িত্বজ্ঞানহীন’ সিদ্ধান্তে সঙ্গে সঙ্গেই তীব্র ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে তেহরানে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাগচি ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর সমালোচনা করেন। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে আরাগচি ট্রাম্পের কার্যকলাপকে ভণ্ডামি ছাড়া আর কিছুই নয় বলে আখ্যায়িত করেন।
আরাগচি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রতিরক্ষা বিভাগের নাম পরিবর্তন করে ‘যুদ্ধ বিভাগ’ করেছে, যা তাদের প্রকৃত আগ্রাসী চরিত্র প্রকাশ করে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত এক দখলদার দানব বলেও অভিহিত করেন।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, এই দখলদার রাষ্ট্রই ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচিকে অপবাদ দিচ্ছে এবং তাদের সুরক্ষিত স্থাপনাগুলোতে হামলার হুমকি দিচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। একদিকে তারা ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচির সমালোচনা করছে, অন্যদিকে নিজেরাই পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার পথ বেছে নিচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি।
মন্তব্য করুন