

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন ৩৪ বছর বয়সী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানি। বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই নির্বাচনে রিপাবলিকানদের পরাজয়ের বিষয়ে মুখ খুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
রিপাবলিকান দল থেকে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পরাজয়ের পেছনে ‘শাটডাউনকে’ একটি বড় কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন। চলমান অচলাবস্থাকে ‘ডেমোক্র্যাটদের সৃষ্ট বিপর্যয়’ বলেও অভিহিত করেন তিনি।
সিনেটরদের সাথে প্রাতঃরাশে ট্রাম্প গত রাতে নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনকে ‘একটি আকর্ষণীয় সন্ধ্যা’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আপনি জানেন, গত রাতে জয়ের আশা করা হয়নি।’
ট্রাম্প বলেন, নির্বাচন ‘খুবই গণতান্ত্রিক’ ছিল আর এটা ‘রিপাবলিকানদের জন্য ভালো ছিল না’।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমাদের একটি আকর্ষণীয় সন্ধ্যা কেটেছে এবং আমরা অনেক কিছু শিখেছি। আমরা এটা নিয়ে কথা বলতে যাচ্ছি। আমি কয়েকটি মন্তব্য করব, তারপর আমি প্রেসকে চলে যেতে বলব।’
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, জরিপকারীদের মতে, শাটডাউনের কারণে সরকারি অচলাবস্থা রিপাবলিকানদের জন্য একটি বড় নেতিবাচক কারণ ছিল এবং ব্যালটে তার নিজের নাম না থাকা ছিল ‘সবচেয়ে বড় কারণ’।
গত ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই অচলাবস্থা এখন আমেরিকার ইতিহাসের দীর্ঘতম অচলাবস্থা বলে উল্লেখ করেন তিনি।
দোষারোপ অব্যাহত রেখে তিনি বলেন, সিনেটে ‘ডেমোক্র্যাট উগ্রপন্থিরা’ সরকারকে পুনরায় কার্যকর করার ব্যাপারে ‘শূন্য আগ্রহ’ দেখিয়েছে।
এদিকে ট্রাম্পকে ভলিউম বাড়ানোর কথা বলে ব্রুকলিন প্যারামাউন্টে উপস্থিত সমর্থকদের মাঝে রীতিমতো চাঞ্চল্য তৈরি করেছেন নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি। তার এ বক্তব্যের পর করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
৩৪ বছর বয়সী মামদানি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, যদি এমন কেউ থাকে, যদি কোনো শহর ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো একজনের দ্বারা প্রতারিত একটি জাতিকে শেখাতে পারে, কীভাবে তাকে হারাতে হয়, তবে তা হলো নিউইয়র্ক, এটা সেই শহর, যে শহর ট্রাম্পকে জন্ম দিয়েছে। আর কোনো স্বৈরশাসককে হারানোর একমাত্র উপায় হলো সেই ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলা, যে ব্যবস্থা তাকে ক্ষমতায় যেতে সাহায্য করেছে।
ট্রাম্প আগেও মামদানিকে কমিউনিস্ট ও পাগল বলে উপহাস করেছিলেন। এমনকি হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, মেয়র হিসেবে মামদানি দায়িত্ব নিলে নিউইয়র্ক সিটিকে কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে বঞ্চিত করা হতে পারে।
তবে এসব হুমকি থামাতে পারেনি মামদানির বিজয়। মেয়র নির্বাচিত হয়েই প্রথম ভাষণেই তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন। নবনির্বাচিত এই মেয়র বলেন, তার প্রশাসন জমি ও বাড়ির মালিকদের জবাবদিহিতার আওতায় আনবে। নিউইয়র্ক শহরের ট্রাম্পরা অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্যে ভাড়াটিয়াদের শোষণ করে চলেছেন।
সবচেয়ে জোরালো করতালিটি আসে যখন মামদানি ঘোষণা করেন, নিউইয়র্ক থাকবে অভিবাসীদের শহর হিসেবে, অভিবাসীদের হাতে গড়া, অভিবাসীদের শক্তিতে চালিত, আর আজ রাত থেকে অভিবাসীর নেতৃত্বে।
নবনির্বাচিত মেয়র বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শুনে রাখুন, আমাদের কারও কাছে পৌঁছাতে চাইলে, আপনাকে আগে আমাদের সবাইকে ডিঙিয়ে যেতে হবে।’
মন্তব্য করুন