আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সম্ভাব্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ঠেকাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দ্বারস্থ হয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এটি ঠেকাতে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে টেলিফোন করেছেন তিনি। সংবাদমাধ্যম এক্সিওসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলের দুই কর্মকর্তার বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, রোববার প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে টেলিফোন করেছেন নেতানিয়াহু। এ সময় তিনি পরোয়ানা জারি ঠেকাতে ওয়াশিংটনের প্রভাব খাটানোর আহ্বান জানান।
গাজায় একের পর এক যুদ্ধাপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। দেশটির সেনাদের এমন কর্মকাণ্ডে নির্দেশের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এবং ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি নিয়ে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রচণ্ড চাপে পড়েছেন নেতানিয়াহু।
এর আগে ২০১৪ সালে যুদ্ধে জড়িয়েছিল ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস ও ইসরায়েল। এরপর ২০১৭ সালে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। পরে করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে তা বাধাগ্রস্ত হয়। তবে করোনার ধাক্কা কেটে গেলেও বিষয়টি আর আলোর মুখ দেখেনি।
এরপর গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরু হলে আবার পুনরায় তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে আইসিসি। এরমধ্যে গত ডিসেম্বরে গাজা-ইসরায়েল সীমান্ত সফর করেন আইসিসির শীর্ষ প্রসিকিউটর করিম খান। সফরে তিনি পুরোনো তদন্ত পুনরায় শুরু করার কথা জানান।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এবারের তদন্ত হবে গতিশীল, কঠোর এবং পুরোপুরি সাক্ষ্যপ্রমাণ নির্ভর।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ব্ষিয়ে আইসিসির এক মুখপাত্র এনবিসি নিউজকে বলেন, আমরা ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি নিয়ে একটি মুক্ত ও অবাধ তদন্ত চালাচ্ছি। এ কাজের সুবিধার্থে আমাদের যে কোনো পদক্ষেপ নিতে হতে পারে। যেহেতু বিষয়টি তদন্তাধীন তাই এ নিয়ে এখন বিস্তারিত কিছু বলার সুযোগ নেই।
গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে সাত দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে শতাধিক বন্দি আছেন।
অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া এ পর্যন্ত ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।
মন্তব্য করুন